ভারত থেকে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সারথি কবি মহুয়া ব্যানার্জীর কবিতা “নাভিপদ্মের ঋণ”

437
সারথি কবি মহুয়া ব্যানার্জীর কবিতা “নাভিপদ্মের ঋণ ”

নাভিপদ্মের ঋণ
মহুয়া ব্যানার্জী

বুড়িটা হাঁটছে, নুব্জ‍্য দেহ লোল চর্ম ,
চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়েছে কবেই-
জমাখরচের খাতায় আজকাল লেখা
হয়না অথবা লেখার বিষয় নেই তাই
শুধু বিরামহীন হেঁটে চলা উষর প্রান্তরে..
বুড়িটা ভাবছে, বিগত যৌবনের কথা-
ভালোবাসার ঘরে বাসি ফুলের ঘ্রাণ-
দমবন্ধ হাঁপের টান বুকের পাঁজর ভাঙে।
বুড়িটা ফুটপাথে, একটু জিরিয়ে নেয়,
সময়ের আঁকিবুকি কাটা মুখে ছায়া
পড়ে ফেলে আসা সুখ যাপনের,
বাঁশের বেড়ার ঘেরাটোপে সুখী গৃহকোণ!
লাউমাচা সরপুঁটি শাকের বাগান
খিদে হয়ে পাক দেয় জীর্ণ জঠরে।
বুড়িটা হাত পাতে, আধুলি বা কয়েনে
ভরার চেষ্টা পোড়া পেট, মনের ক্ষত !
চোখ থেকে নোনাজল গাল হয়ে ঠোঁট ভেজায়…
বুড়িটা মন্দির চাতালে, এককোণে গুটিসুটি,
সন্ধ‍্যা নামছে মাটির বুকে ধূপের গন্ধ যেন।
বুড়িটা শীর্ণ হাত নাভিতে রাখে, নাড়ি ছেঁড়া ধনের মঙ্গল কামনায় প্রার্থনা করে কি?
যদিও তার আদরের দুলাল ভরাপেটে বিছানায় রমণীর আদরে নিশ্চিন্ত ঘুমে।
তবুও বুড়িটা প্রতি সন্ধ‍্যায় নাভিতে হাত রাখে,
প্রতি সন্ধ‍্যায় নাভির সাথে কথা বলে
ঠিক যেন পোয়াতি মা ও শিশুটির দেয়ালা।
নাভিপদ্মের ঋণ বেড়ে চলে বেড়েই চলে…

1 COMMENT

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here