ঢাকা প্রতিনিধি: অভিভাববকে ডেকে শিক্ষকের অপমানের জেরে অরিত্রি অধিকারী নামে এক শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষসহ তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। সেই সঙ্গে তাদের এমপিও বাতিলের নির্দেশ দিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করাসহ আইনগত ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ।
শিক্ষার্থীর আত্মহত্যার ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত প্রতিবেদনে এই তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। তাই তাদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আজ বুধবার (৫ই ডিসেম্বর) শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সচিবালয়ে সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্তের কথা জানান।
অভিযুক্ত তিন শিক্ষক হলেন-ভিকারুননিসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস, প্রভাতী শাখার প্রধান জিন্নাত আরা এবং শ্রেণি শিক্ষক হাসনা হেনা।
শিক্ষামন্ত্রী জানান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্তে শিক্ষার্থী অরিত্রি আত্মহননের প্ররোচনার জন্য এ তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়ায় তাদের বরখাস্ত ও বিভাগীয় মামলাসহ অন্য আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহণেরও নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এই তিন শিক্ষকের এমপিও বাতিল করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।
আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী যে মামলা করেছেন, তাতেও ওই তিন শিক্ষককে আসামি করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, পরীক্ষায় মোবাইল ফোনে নকল করার অভিযোগ এনে ভিকারুননিসার ছাত্রী অরিত্রির অভিভাবককে ডেকে অপমান করেন স্কুলের শিক্ষকরা। অভিভাবকের অপমান সইতে না পেরে আত্মহত্যা করেন অরিত্রি।
এ ঘটনায় দুদিন ধরে ভিকারুননিসায় বিক্ষোভ চলছে। গতকাল বিক্ষোভের প্রথম দিনে শিক্ষামন্ত্রী স্কুলে গিয়ে এ ঘটনার সঠিক বিচারের আশ্বাস দেন।
পরে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেও শিক্ষামন্ত্রী তিন শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন। এই ঘোষণার একদিনের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হল।
প্রসঙ্গত, নবম শ্রেণির ছাত্রী অরিত্রির বিরুদ্ধে স্কুল কর্তৃপক্ষ মোবাইল ফোনের মাধ্যমে পরীক্ষায় নকল করার অভিযোগ এনেছিল। এ জন্য অরিত্রির মা-বাবাকে ডেকে নেন ভিকারুননিসার অধ্যক্ষ।
তাদের ডেকে মেয়ের সামনেই অপমান করে বলেন, সিদ্ধান্ত হয়েছে অরিত্রিকে নকলের অভিযোগে প্রতিষ্ঠান থেকে বের করে দেয়া হবে। এ অপমান সইতে না পেরে বাসায় এসে অরিত্রি আত্মহত্যা করে।