ভারত থেকে বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সারথি কবি বিশ্বজিৎ করের নির্বাক অন্তরের তিনটি কবিতা

828
কবি বিশ্বজিৎ করের নির্বাক অন্তরের তিনটি কবিতা

তুমি পাহাড় হও!
বিশ্বজিৎ কর।

মাঝে মাঝে চলে যাই পাহাড়ের কোলে,
পাহাড় কিছু বলে না, মেনে নেয়!
রোদ-বৃষ্টি-ঝর্ণা, সবাইকে কোলে নেয়!
তুমি পাহাড় হও !
মনখারাপের সময়গুলো পাহাড় খোঁজে,
আদরের উষ্ণতায় স্বস্তি পাবে বলে!
পাহাড় ঘেমে ওঠে,
আলিঙ্গনের মাদকতায়!
তুমি পাহাড় হও!
কবিতাগুলো আশ্রয় চায়,
পাহাড়ের খাঁজে খাঁজে –
বর্ণ-শব্দ-বাক্য ঠিকানাহীন হয়ে,
নুড়ি-পাথরে মুখ লুকায়!
তোমাকে পাহাড় হতেই হবে!


চেনা মুখের কবিতা!
বিশ্বজিৎ কর।


কবিতার আয়নায় চেনামুখের ভিড়
মৌনমিছিলের মতো নির্বাক
তবুও শ্লোগান অনুভূত হয়
“পথে এবার নামো সাথী”!
কবিতার আয়নায় চেনামুখের ভিড়
অপ্রাপ্তির চাপা ক্ষোভের আগুন
তবুও প্রতিবাদ প্রতিধ্বনিত হয়
“আমরা অপমান সইব না”
কবিতার আয়নায় চেনামুখের ভিড়
আপোষহীনতায় দৃপ্ত, সাবলীল
তবুও স্বস্তির নিঃশ্বাস অনুভূত হয়
“ভেঙেছ দুয়ার এসেছ জ্যোতির্ময়..!”
কবিতার আয়নায় চেনামুখের ভিড়
মৌলবাদের ষড়যন্ত্রে অবিচল
স্পন্দিত দিকে দিকে স্বদেশবন্দনা
“ও আমার দেশের মাটি,
তোমার পরে ঠেকাই মাথা…!”


সব শান্ত হোক!
বিশ্বজিৎ কর।

বসন্তের দেখা মিলেছে,
আজ শশীবাবুর বৃদ্ধাশ্রমের যাওয়ার দিন –
নতুন জীবন! নতুন আশ্রয়! নতুন সাথী!
বসন্তের দেখা মিলেছে,
কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে শিবুর –
নতুন দোকান! লটারীর টিকিটের!
ভাগ্যের খোঁজে নতুন মাধ্যম!
বসন্তের দেখা মিলেছে,
খাঁচায় বন্দী কোকিল পালিয়েছে –
প্রকৃতির ভেলায় বাঁধনছাড়া!
বসন্তের দেখা মিলেছে,
দাদা-দিদি’র সমাজসেবার সেল্ফিতে –
কাগজের শিরোনামায়!

আজ অটো রাস্তায় নামেনি
সকালে রক্তদান বাদলের, তাই!
বসন্তের দেখা মিলেছে।


গড়িয়া, কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here