লেখক হোসনে আরা রিতা এর জীবন ছোঁয়া অসাধারন গল্প “অতঃপর তাহারা ”

770
হোসনে আরা রিতা এর জীবন ছোঁয়া অসাধারন গল্প “অতঃপর তাহারা ”
লেখক হোসনে আরা রিতা

অতঃপর তাহারা

                     হোসনে আরা রিতা

একদিন রাস্তা দিয়ে হাঁটছি। এমন সময় কয়েক টা ছেলে পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে । তারা আমাকে দেখে কি জানি ফিস ফিস করে বলছে আর মুচকি হাসছে। আমার খুব আনাজি লাগছে। ছেলেগুলো কেমন করে চেয়ে আছে।
যাই হোক বাসায় আসলাম। দুপুরে খাবার খেলাম বিশ্রাম করে বসে। পড়ন্তবিকালে সূর্য নিভু নিভু কি অসাধারণ লাগছে। মা পাশে এসে বসলেন। বলছে ,চা খাবি আয় তবে। পরের দিন কলেজ গিয়েছি দেখতে পেলাম সে ছেলে গুলো দাঁড়িয়ে আছে গেটের পাশে।

আমার জানি কেমন লাগছে ওদের দেখে। ভালো লাগছে না কিছু। যাই হোক পাশকাটিয়ে কলেজের ভিতরে গেলাম। তার পর আমার বান্ধুবী দের সব বললাম খুলে। ওরা আমাকে নিয়ে দুষ্টমি করা শুরু করলো। আমি লজ্জা রাঙা হয়ে গেলাম। এমন করতে করতে কয়েকটা দিন পার হলো। একদিন ছেলেটা আমার নাম জিগেস করলেন। তোমার নাম কি? আমি মাথা নিচু করে বললাম আমার নাম ঋতু। আপনার নাম কি? সে বললো আমার নাম ফারুক। আমি বললাম বাহ্ কি সুন্দর নাম। ছেলেছি হেসে বললো, তোমার নামটি ও বেশ সুন্দর। এমন করে ওর সাথে সব সময় কথা হতে লাগলো। এক সময় আমরা খুব কাছের হয়ে গেলাম। দুজন দুজনাকে ভালো বাসতে লাগলাম। সর্বক্ষণ ফোনে কথা হতে লাগলো। একটি বছর কেটে গেলো। আমি ইন্টার পড়ছি আর ও অনার্স পড়ছে। আমাদের ভালোবাসা গভীরতা বেরে গেলে। আমরা দু’জন সব সময় এখানে ওখানে ঘুরে বেড়াচ্ছি । জীবন টা মনে হয় কত সুন্দর, কত আনন্দঘন মনে হয়। হঠাৎ একদিন ওমর বলছে ঋতু। ও ঋতু আমার বাবার টেন্সপার হয়েছে। আমরা ঢাকা চলে যাব। এখন কি উপায় হবে বলোতো। মেয়েটি কান্না করতে লাগলো। সে বললো আমি যাব তোমার সাথে। আমাকে নিবে না। ছেলেটি বললো, কেমন করে নিব জান। বাবা মা যে রাগি কেমন করে তোমার কথা বলি বলোত পরান।মেয়েটি চুপ করে বসে থাকে আর কাদেন।ছেলেটি ও পাগলের মত করে। ভেবে পাচ্ছেনা কি করবে। ঋতু কে ছারা সে কেমন করে বাচঁবে।ঋতু খানা পিনা বন্ধ করে দিল। ও র মা বললো, ঋতু কি রে তোর এমন অবস্থা কেনো। কি হলো বল আমাকে ঋতু চিৎকার পেরে কান্না করতে লাগলো। আর বললো মা ও মা আমি ফারুক কে অনেক ভালোবাসি। কি বলিস ফারুক কে আবার। মা আমাদের কলেজে সে পড়েন। তাকে আমি অনেক ভালোবাসি। মা তো হতবাক তোকে আমি এত শাসনে রাখার পরোও তুই প্রেম করিস। তোর সাহস তো কম না। দাঁড়াও তোমার বাবা আসুক আজকে। কি করি তোমার। মেয়েটি কান্না করতে থাকেন বাবা এবার আমাকে মেরে ফেলবেন।ভয়ে শেষ ঋতু। এদিকে ওমর টেনশোন করছে কি করবে ভেবে পাচ্ছেন না।

আজ কয়েকটা দিন ঋতু কে দেখছে নাা ওমর। সে পাগলের মত করছে। খাবার ঠিকমত করছে না খালি ঘুরাঘুরি করছে। সে ঋতু কে দেখার জন্য। কেমন করে দেখবে ঋতুর বাবা মা তাকে তাদের দেশের বাড়ি পাবনা নিয়ে চলে গেলেন। ওমর জানতে পারলেন না। একদিন ঋতু কে ছেলে পক্ষ দেখতে আসলো। ছেলেটি বেশ ভালো দেখতে শোনতে। ঋতু তো খালি কাদেন ওমরের জন্য আর বলে আল্লাহ গো আমার ওমর কে আমার কাছে এনে দেন। কি আর অতঃপর ঋতু কে বিয়ে দিলেন বাবা মা। ঋতু তো খালি কাদেন ওমরের জন্য। আসলে বাস্তব বড় কঠিন মন চাইলে কিছু করার থাকে না। আর বাবা, মা কে অবহেলা করা যাই না। মা আর বাবা সব থেকে আপন জন তারা সব সময় আমাদের মঙ্গল চান। ওমর আস্তে আস্তে কেমন জানি হয়ে গেলে। সে আর ঘর হতে বের হন না। মা বাবা জিগেস করে কিরে ওমর তোর কি হলো এমন কেন করিস। যা বন্ধু দের সাথে ঘুরতে যা। এদিকে ঋতু র স্বামি ঋতু কে নিয়ে ঢাকা বাসা নিল। ওমরের সাথে যোগাযোগ বন্ধ। ওমর ঢাকা এসে পড়াশোনা করছে। প্রাই শেষের দিকে পড়া। হঠাৎ একদিন শাহাবাগ মোরে ঋতুর সাথে দেখা ওমরের। আরে তুমি তুমি কৈ ছিলা বলোনা ঋতু ও ঋতু। ঋতু কাদতে থাকেন। বলেন বাবা মা গ্রামে নিয়ে চলে গেছেন আমাকে। আমার বিয়ে হয়েছে ফারুক। তুমি কি করো। ফারুক অপলোক চোখে তাকিয়ে চোখের জল ঝরে। আর বলেন কত ভালোবাসি তোমাকে জানো কি ঋতু। বসন্তের সমীরণে কোকিলের কুহুকুহু গান আমাকে মাথাল করে। আমি উম্মাত হয় ক্ষণেক্ষণে তোমার ভালোবাসা পাবার জন্য। ফিরে এসো না ঋতু আমার বাহুডোর। খুব যত্নে রাখবো বুকের মাঝে। ঋতু এসব কথা শোনে কাদতে থাকেন। আর বলেন তা সম্ভব না। আমার স্বামি কোনো দোষ নেই তাকে আর কষ্ট দিতে পারবো না। সে বড্ডবেশি ভালো মানুষ তোমার মত সে আমাকে বহু ভালোবাসেন ট্রেককিয়া করেন। অতঃপর তাহারা দু’জন দুদিকে চলে গেলেন। জীবন জীবনের গতিতে চলতে লাগলো। সময় স্রোত কারো জন্য অপেক্ষা করে না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here