শূণ্য জায়গা।বাম পাশ থেকে ডান পাশে মাথা ঘুরাতেই কেউ অদৃশ্য হতে পারে -জীবনে প্রথমবার এমন ঘটনার সাক্ষী হলাম!মনটা কেমন যেন আধারে চাপা পড়ে রইল।এত সময় একসাথে এলাম অথচ উনার নাম ধাম বা পরিচয় কিছুই জানা হল না।বাস থেকে নেমেই এদিক-ওদিক তাকালাম।কিন্তু উনার দেখা পেলাম না।রাত হয়ে যাওয়ায় আমরা একটা ভ্যানে চেপে বসলাম।মেইন রাস্তা থেকে সরু এএকটা রাস্তা নেমে গেছে। দুই পাশে শালবন।শালবনের ভিতর দিয়ে পাঁচ মিনিটের মধ্যেই এসে থামলাম সুন্দর আলোকিত বাংলোর সামনে।গেটের উপর বড় বড় অক্ষরে শোভা পাচ্ছে বাংলোর নাম”নির্জন বিলাস”।
বাংলোর ম্যানেজার রোহান হাসি মুখে এগিয়ে এল।আমার অফিস কলিগ রোমানার চাচাতো ভাই রোহান।হাসি মুখে অভ্যর্থনা জানালেও মুখটা বড়ই ম্লান দেখালো রোহানের।জিজ্ঞেস করল, কেমন আছেন আপা?ভীষণ ভাল।উত্তর দিয়ে ওদের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিলাম। অসিত আর সাজেকের সাথে হাত মিলালো রোহান।আমরা রুম নিয়েছি তিনটা।সীতা আর রুহি, অসিত আর সাজেক।ব্যস হয়ে গেল। রোহান ওদের চাবি বুঝিয়ে দিয়ে রুম দেখিয়ে দিল।আমি চলে এলাম আমার রুমে।
ফ্রেস হয়ে ১০:৩০ মিনিটে সবাই হাজির হলাম ডাইনিং রুমে।খাবার দেখে সবার চোখ কপালে উঠে গেল।গরুর মাংসের কালো ভুনা,আলুর ভর্তা, বেগুন ভাজা আর মাখা ডাল।অসিত আর সাজেক হুমরি খেয়ে পড়ল।আমি বসতেই রোহান একটি বাটি এগিয়ে দিয়ে বলল,আপা,এটা আপনার জন্য।বাটির ঢাকনা খুলে আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞাসার দৃষ্টিতে রোহানের দিকে তাকাতেই রোহান বলল, রোমানা আপা বলেছেন, আপনি ভাত খান না,কিন্তু চালের রুটি খুবই পছন্দ করেন।সাথে সাথেই সাজেক বলল,তবে আমরাই বা বাদ যাই কেন?ওরা সবাই একটি করে রুটি নিয়ে নিল।আমরা সময় নিয়ে গল্প করে খেলাম।
খাওয়ার সময় সাজেক জানিয়ে দিল আগামীকাল সকালেই অসিতকে সাথে নিয়ে সে তার অফিসের প্রজেক্ট গুলো দেখতে যাবে।কেননা সাজেকের এখানে আসার বড় কারণ হল এই প্রজেক্টগুলো পরিদর্শন। খাওয়া শেষ করে আর সময় নিলাম না।চলে এলাম যার যার রুমে।রুমে এসেই জানালার পর্দা সরিয়ে দিলাম।দক্ষিণের দিকটা খোলা।তবে বাংলোর চারদিকে দারুণ শাল বাগান।শাল বাগানেরর ভিতর সুন্দর “নির্জন বিলাসে”আমাদের প্রথম রাত।পর্দা সরিয়ে দিতেই এক ঝাপটা বাতাস যেন বলে দিল,”নির্জন বিলাসে”স্বাগতম! হাসির রেখা খেলে গেল ঠোঁটের কোণে।
ভাবুক মন!ভেবে যাও।দৃষ্টি ছড়িয়ে দিলাম জানালার বাইরে।আকাশে হঠাৎই ধরা দিল রুপালি চাঁদ। আহা!কী অপূর্ব।আলো রেড়ে যাচ্ছে ধীরে ধীরে।চাঁদের আলোয় শাল বাগানটা অদ্ভুত সুন্দর লাগছে।মনে পড়ে গেল বাসের সেই অদ্ভুত বুদ্ধিমান লোকটির কথা।সরে এলাম জানালা থেকে।ব্যাগ থেকে কাগজ আর কলম বের করে বিছানার পাশে রাখা টেবিলটাতে সাজিয়ে রেখে বিছানায় হেলান দিয়ে বসলাম।কে সেই মানুষ?নামই বা কি?মনে মনে তাঁর একটি নাম দিলাম”কুয়াশা মানব”।
বিছানায় যাওয়াতে ক্লান্তি জড়িয়ে ধরলসমস্ত শরীরটাকে।আকাশটা কালো হতে লাগল চোখের পলকে।চাঁদের আলো নিভে যাচ্ছে।মঞ্চের ভারি পর্দার মত অন্ধকার যেন চাঁদকে ঢেকে দিচ্ছে।আমি চলে যাচ্ছি অন্য জগতে।কানের কাছে কেউ ফিসফিস শব্দে বলে উঠল,জেগে থাকো চাঁদ,এই অন্ধকারে হারিয়ে যেও না।চমকে উঠলাম আমি!এই কণ্ঠ আমার অনেক পরিচিত। তবে কি তিনি এসেছেন?অনুভব করলাম খুব কাছেই কেউ একজন আছেন।কেউ একজন আমাকে দেখছেন।চোখ খোলার চেষ্টা করলাম।কিন্তু পারলাম না।আধারে তলিয়ে যেতে লাগলাম!!! (চলবে…..)
We use cookies on our website to give you the most relevant experience by remembering your preferences and repeat visits. By clicking “Accept”, you consent to the use of ALL the cookies.
This website uses cookies to improve your experience while you navigate through the website. Out of these, the cookies that are categorized as necessary are stored on your browser as they are essential for the working of basic functionalities of the website. We also use third-party cookies that help us analyze and understand how you use this website. These cookies will be stored in your browser only with your consent. You also have the option to opt-out of these cookies. But opting out of some of these cookies may affect your browsing experience.
Necessary cookies are absolutely essential for the website to function properly. This category only includes cookies that ensures basic functionalities and security features of the website. These cookies do not store any personal information.
Any cookies that may not be particularly necessary for the website to function and is used specifically to collect user personal data via analytics, ads, other embedded contents are termed as non-necessary cookies. It is mandatory to procure user consent prior to running these cookies on your website.