
নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা: অবৈধ কর্মীদের পাশাপাশি অনেক বৈধ কর্মীকে আটকের পর জোর করে দেশে ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছে সৌদি আরব কর্তৃপক্ষ। যে কারণে শূন্য হাতেই ফিরে আসতে হচ্ছে অনেক বাংলাদেশিকে।
একের পর এক বাংলাদেশি শ্রমিকদের ফেরত পাঠিয়েই যাচ্ছে সৌদি আরব। ইকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের আটক করে ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে শ্রমিকদের অনেকেই অভিযোগ করেছেন। সর্বশেষ মঙ্গলবার রাতে সৌদি এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ১৬০ বাংলাদেশিকে। এ নিয়ে গত তিন দিনে দেশে ফিরলেন ৩৮৯ জন বাংলাদেশি কর্মী।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে আট মাস আগে সৌদি আরবে গিয়েছিলেন সিলেটের আবু বক্কর। কিন্তু মঙ্গলবার শূন্য হাতে দেশে ফিরতে হয়েছে তাকে। আবু বক্কর জানান, কাজের বৈধ অনুমোদন (আকামা) থাকা সত্ত্বেও সৌদি পুলিশ ধরে তাকে দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে।
আরও পড়ুন: পিরোজপুরে লুণ্ঠিত মালামালসহ ২ ডাকাত সদস্য গ্রেফতার
পটুয়াখালীর বায়েজিদ, মানিকগঞ্জের আবু সাইদ, মাদারীপুরের নাসিম, কুমিল্লার জামাল, মুন্সীগঞ্জের মিজান, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টিপু সুলতান, মাদারীপুরের সিরাজ, কুষ্টিয়ার জহুরুলসহ ১৬০ বাংলাদেশির প্রায় সবাই একই অভিযোগ করেছেন। তারা বলছেন, বৈধ আকামা থাকা সত্ত্বেও তাদের জোরপূর্বক ধরে জেলে পাঠানো হয়। জেলে কিছু দিন রাখার পর দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে।
কিছু কর্মী অভিযোগ করেছেন নিয়োগকর্তারা নতুন করে আকামা নবায়ন করছে না। এক্ষেত্রে রিয়াদস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসও কোনো সহযোগিতা করছে। তারা বলছেন, সরকারের পক্ষ থেকে এখনই ব্যবস্থা না নিলে বড়ো সমস্যা তৈরি হবে। উল্লেখ্য, গত নয় মাসে ১০ হাজারেরও বেশি বাংলাদেশিকে সৌদি আরব থেকে ফিরতে হয়েছে।
মঙ্গলবার কর্মীরা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামার পর প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ ডেস্কের সহযোগিতায় ব্র্যাক মাইগ্রেশন প্রোগ্রাম খাবারসহ নিরাপদে তাদের বাড়ি পৌঁছানোর জন্য জরুরি সহায়তা প্রদান করেছে।
ঐতিহ্যগতভাবে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিদেশি শ্রমবাজার হওয়া সত্ত্বেও, বর্তমানে খুব অল্প সংখ্যক বাংলাদেশি দেশটিতে শ্রমিক হিসেবে যাচ্ছেন। সে তুলনায় বহু সংখ্যক শ্রমিক ইতিমধ্যে দেশে ফিরে এসেছেন এবং এখনও এই ধারা অব্যাহত রয়ছে।
জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, এ বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মধ্যে প্রতিমাসে গড়ে ২০ হাজার ৮০২ জন করে মোট ১ লাখ ৮৭ হাজার ২২৪ জন বাংলাদেশি শ্রমিক সৌদি আরব গেছেন। যেখানে গত বছর প্রতিমাসে গড়ে ৪৬ হাজার জন করে মোট ৫ লাখ ৫১ হাজার ৩০৮ জন দেশটিতে গিয়েছিলেন।