দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্ক : গত ৮ এপ্রিল,২০২৩ শনিবার “Smart Village for Smart Bangladesh” শীর্ষক গোলটেবিলে বক্তারা বাংলাদেশের গ্রামগুলোকে আধুনিক ও উন্নত প্রযুক্তির আওতায় আনার প্রতি গুরুত্ব দেন। তারা বলেন, গ্রামের আধুনিকায়নে গুরুত্ব না দিলে স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা বাস্তাবায়ন হবে না। রাজধানীর উত্তরায় সাসটেইনেবল রুরাল ডেভলপমেন্ট ঢাকা রাউন্ডটেবিলটি আয়োজন করে সিমেক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার এবং গ্লোবাল ফোরাম ফর সাসটেইনেবল রুরাল ডেভলপমেন্ট (GFSRD)।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমী (RDA) র সাবেক ডিরেক্টর জেনারেল ইঞ্জিনিয়ার ড. এম এ মতিন বলেন, “গ্রাম উন্নয়নে ফান্ড স্বল্পতা কোন বাধা নয়, বরং সদিচ্ছা রাখাটাই মূখ্য। উন্নয়নের অগ্রযাত্রাকে অগ্রাধিকার, সচেতনতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির বিকল্প নেই, তাই প্রথমে সম্ভাবনাগুলো খুঁজে বের করে সক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে”। সাবেক জেলা প্রশাসক ও LGRD’র বর্তমান যুগ্মসচিব মোঃ জসিম উদ্দিন বলেন, “আমাদের কর্মক্ষেত্রে অবশ্যই জনগনকে সার্ভিস দেবার সকল প্রতিজ্ঞা পালন করা উচিত। নচেৎ কোন পলিসি গুরুত্ব পাবেনা, কোন উদ্যোগই প্রাণ পাবেনা”। অস্ট্রেলিয়ার কার্টিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আমজাদ হোসাইন জানান, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে ভবিষ্যতে ধর্ম এবং সাংস্কৃতিক দর্শনের সঠিক উপলব্ধি ও সংস্কার প্রয়োজন। দেশীয় সংস্কৃতির মূল্যায়ন অবশ্যই সহায়ক ভূমিকা পালন করবে”।
আলোচনায় সিমেক ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার সরদার মোঃ শাহিন বলেন, “আমাদের প্রথমে এটা বের করা জরুরি যে, কোনটাকে আমরা স্মার্টনেস বলব? যাদেরকে আমরা স্মার্ট করতে যাচ্ছি তাদেরকে সামাজিক শিক্ষাদানের বিকল্প নেই। কারণ, এর মর্ম উপলব্ধি করতে হলে তাকে অবশ্যই সচেতন হওয়া প্রয়োজন। নাহলে এর কোন উদ্যোগই সফল হবেনা”। GFSRD’র মহাসচিব ড. জয়ন্ত চৌধুরী বলেন, “আমরা ঢাকায় আগামী অক্টোবরে Rural Development Congress করব। সেখানে Global Best Practitionerদের তোলে আনা হবে”। সেই লক্ষ্যে সেপ্টেম্বরে আরো একটি সেমিনার করা হবে । অনুষ্ঠানটির সমন্বয়কারি GFSRD’র বাংলাদেশ প্রধান ও সিমেক ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টারের এসডিজি বিষয়ক পরামর্শক মুহাম্মাদ শরিফুর রহমান জানান, “আমরা গত পাঁচ বছর ধরে এসডিজি একশান রিসার্চ সহ দেশের চারটি জেলায় স্মার্ট এসডিজি ভিলেজ গড়ে তোলার চেষ্টা করছি। সেইসাথে GFSRD ও বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্লাটফর্মের সাথে টেকসই উন্নয়ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নানা গতিশীল উদ্যোগ গ্রহন করেছি”।
অনুষ্ঠানটিতে ৩০ টিরও বেশি প্রতিষ্ঠানের সম্মানিত একাডেমিশিয়ান, গবেষক, সমাজকর্মী এবং উদ্যোক্তাগন সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছিলেন। এর মধ্যে ছিলেন, বঙ্গবন্ধু কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুরের অধ্যাপক মোঃ সফিউফুল আফরাদ, আইডিয়া ফাউন্ডেশনের চিফ কোঅরডিনেটর মোঃ দেলোয়ার হোসেন, এলজিইডি কর্মকর্তা মোঃ আউয়াল বকস। এছাড়াও অনলাইনে ভারত থেকে যোগ দেন GFSRD ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রফেসর রাজিব রঞ্জন প্রসাদ, সাবেক আইএএস মিনাক্ষী দত্ত ঘোষ এবং ডঃ শিলাদিত্য চ্যাটার্জী, মালয়েশিয়া থেকে মোস্তফা কামাল জুলকারনাইন, ইন্দোনেশিয়া থেকে ড. মারিয়া ক্রিস্টিনা এনদারওয়াতি, সিঙ্গাপুর নানিয়াং টেকনোলজিক্যাল ইউনিভার্সিটির ড. আসিফ ইকবাল সিদ্দিকী, ইস্তাম্বুল থেকে মিস টায়রা, শ্রীলংকা থেকে মিঃ হিরাথ; লন্ডন থেকে ড. সঞ্জীব রায়।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অতিথিগন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে কীভাবে গ্রামগুলোকে প্রাধান্য দেয়া যায় সে ব্যাপারে মূল্যবান পরামর্শ প্রদান করেন। তারা বলেন, স্মার্ট ভিলেজ গড়তে হলে প্রয়োজন স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলা। সেইসাথে সরকারের সকল সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান, গুরুত্বপূর্ণ মডেল ও অধ্যায়গুলোকে সমন্বয় করে লক্ষ্যসমূহ বাস্তবায়ন করতে হবে।