দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্ক: নাটোরের স্বপ্নবাজ তরুন উদ্যোক্তা রবিউল ইসলাম রাফি। নাটোর জেলার ছোট্ট একটি গ্রাম বড়াইগ্রাম থেকে যাঁর জীবনের এই যাত্রা শুরু, তিনি এখন বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। তাঁর মতে, আত্মবিশ্বাস, সততা, কঠোর পরিশ্রম ও আল্লাহর ওপর ভরসা থাকলে জীবনে সাফল্য ধরা দেবেই।
তিনি ঢাকা স্টেট কলেজ থেকে বি বি এ পাস করেন।পড়াশোনা অবস্থায় উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে ছুটে চলতো।বড় ভাইয়ের বাসায় বেকার জীবন পার করছিলো।কিন্তু চোখে মুখে স্বপ্ন ছিলো অনেক।বেকার জীবনে পথশিশুদের নিয়ে কাজ শুরু করেছিলো।আর নিজেকে সফল ব্যবসায়ী হওয়ার পাগলামী।
আজ থেকে ৭ বছর আগে ২০১৬ সালে তিনি গড়ে তুলতে সক্ষম হন স্বপ্নের প্রতিষ্ঠান তাক্ওয়া ন্যাচারাল ফুডস্; যেখানে তিনি নিজস্ব বাগানের ফরমালিন মুক্ত আম,খেজুরের গুড়,আখের গুড়,প্রাকৃতিক চাকের মধু,সরিষা তেল,কালোজিরার তেল,জয়তুন তেন,মদিনার আজওয়া খেজুর,গাওয়া ঘি,হলুদ, মরিচ, জিরা, ধনিয়া, বেসন, আচার, লাচ্ছি সেমাই ইত্যাদি প্রস্তুত করা শুরু করেন। শুধু তা-ই নয়, খাবারসামগ্রীর বাইরেও তিনি পোশাকের দিকে এগিয়ে পাঞ্জাবিওয়ালা নামে প্রতিষ্ঠান দাড় করিয়ে ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন এবং স্বপ্নের পঙ্খিরাজে চড়ে দুর্বার গতিতে এগিয়ে যান সামনের দিকে। দেশীয় পণ্য বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে দিতে শুরু করেন তিনি, যাতে তার ব্যবসার পাশাপাশি বাংলাদেশের নাম বিশ্বব্যাপী উজ্জ্বল হয়।

গণমাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘যে পণ্যগুলো বাংলাদেশে সহজে উৎপাদন সম্ভব, সেগুলো আমরা বাংলাদেশ থেকে সংগ্রহ করি আর যেগুলো বাংলাদেশে পাওয়া যায় না, সেগুলো আমরা অন্যান্য দেশ থেকে সংগ্রহ করি।’
তাঁর নির্মিত তাক্ওয়া ন্যচারাল ফুডস্ এখন শুধু বাংলাদেশে নয় বহির বিশ্বে নামকরা প্রতিষ্ঠান।
বড় কর্মযজ্ঞ সম্পাদনে বাংলাদেশের স্টুডেন্ট প্রায় ৩০জনকে সাথে নিয়ে কাজ করছেন রবিউল ইসলাম রাফি।
ব্যবসা-বাণিজ্য করে সফলতার শিখরে উঠলেও ভুলে যাননি নিজ শিকড়কে। নিজ প্রতিষ্ঠানে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি দেশেও বিভিন্ন সামাজিক কাজে জড়িত এই কর্মবীর। এ বিষয়ে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমি দেশে এতিমদের সহযোগিতা করার চেষ্টা করি, পাশাপাশি মসজিদ-মাদরাসাসহ বিভিন্ন সামাজিক কাজে সাধ্য অনুযায়ী সহযোগিতা করার চেষ্টা করি।’
নতুন উদ্যোক্তাদের উদ্দেশে্্য তাঁর পরামর্শ হলো, ‘আল্লাহর ওপর ভরসা রেখে বুকে সাহস নিয়ে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। ব্যবসা শুরু করায় কারো কারো জীবনে ধাক্কা আসে, ধাক্কাকে অতিক্রম করতে হবে। কেউ যদি শুধু নগদ ইনকামকে জরুরি মনে করে ব্যবসা করতে চায়, তার সফল হওয়ার সম্ভাবনা কম। আমি নিজেও ব্যবসার স্বার্থে অনেক ভালো বেতনের চাকরি পেয়েও ছোট চাকরিতে গিয়েছি।’
নিজের সচ্ছলতার পাশাপাশি দেশের সুনাম বয়ে আনতে প্রবাসীদের প্রতি আহবান জানান রবিউল ইসলাম রাফি।
কর্মবীর এই তরুন উদ্যোক্তা দেখিয়ে দিলেন যে মহান আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস, প্রবল ইচ্ছা শক্তি থাকলে যে কেউ সফলতার সোনার হরিণকে পোষ মানাতে পারে। বিশ্বব্যাপী হালাল পদ্ধতির ব্যবসা-বাণিজ্য ছড়িয়ে দিতে এমন আরো অনেক স্বপ্নবাজ তরুন উদ্যোক্তা তৈরি হওয়া প্রয়োজন, যাঁরা দেশে-বিদেশে ব্যবসা-বাণিজ্যে নেতৃত্ব দিয়ে মানুষকে হালাল পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার আলোকবর্তিকা হবেন।