তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন, গ্রেফতারের পর আরিফ চৌধুরী দোষ চাপিয়েছেন স্ত্রী সাবরিনাসহ প্রতিষ্ঠানের চারজনের বিরুদ্ধে। অন্যদিকে সাবরিনা বলেছেন, যা কিছু ঘটেছে তার দায় স্বামীর। তিনি জালজালিয়াতির বিষয়গুলো বুঝতে পারেননি। জেকেজিতে অপরাধ হয়েছে, এ ব্যাপারে তারা নিশ্চিত। কার দায় কতটুকু তা নির্ধারণে দুজনকে মুখোমুখি করা হয়েছে।স্বাস্থ্য অধিদফতরের সঙ্গে চুক্তির শর্ত ভেঙে প্রথমে টাকার বিনিময়ে নমুনা পরীক্ষা করা ও পরে ভুয়া সনদ দেওয়ার অভিযোগে গত ২৩ জুন তেজগাঁও থানা পুলিশ জেকেজির সিইও আরিফুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনকে গ্রেফতার করে। জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা শারমিন হুসেইন ওরফে সাবরিনা আরিফ চৌধুরী গ্রেফতার হন ১২ জুলাই। পরদিন মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের সিদ্ধান্ত হয়।
ডিবি পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপ-কমিশনার (ডিসি) গোলাম মোস্তফা রাসেল জানান, আরিফ চৌধুরীকেও রিমান্ডে ডিবি কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। তারা কিছু বিষয় যাচাই-বাছাই করার জন্য জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে এসেছেন।
এদিকে গত ২৪ জুন ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে জেকেজির কর্মচারী হুমায়ূন কবীর ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন। আদালত সূত্র জানায়, জবানবন্দিতে তিনি জানিয়েছেন, ওভাল গ্রুপের মালিক ও সিইও আরিফ চৌধুরী গত ২৬ মার্চ রাতে তাকে অফিসে ডেকে নেন এবং তাকে পিপিই ডিজাইন করতে বলেন। আরিফের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাসায় গিয়ে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং বাংলাদেশিদের জন্য ৫ হাজার টাকা ও বিদেশিদের জন্য ১০০ ডলার নেওয়া হয়। নমুনা সংগ্রহ করার পর তা স্বাস্থ্য অধিদফতরে না পাঠিয়ে নিজেরাই ড্রেনে বা ওয়াশ রুমে ফেলে নষ্ট করে ফেলতেন। হুমায়ূন কবীর নিজে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার পর কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। সুস্থ হওয়ার পর আরিফ তাকে বাসায় বসে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করে পাঠাতে বলেন। হুমায়ূন কবীরের স্ত্রী তানজিনা পাটোয়ারীও জেকেজিতে কাজ করতেন। তিনিও আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন এবং ভুয়া করোনা রিপোর্ট তৈরির কথা স্বীকার করেছেন। তানজিনা পাটোয়ারী সেন্ট্রাল হসপিটাল নার্সিং ইনস্টিটিউটের নার্সিং ইনস্ট্রাক্টর হিসেবে কাজ করতেন। তানজিনা গত ৪ জুন জেকেজি থেকে পদত্যাগ করেন এবং ১৪ জুন থেকে ১৯ জুন পর্যন্ত বাসায় বসে ভুয়া রিপোর্ট তৈরি করেন বলে জবানবন্দিতে উল্লেখ করেছেন। করোনা নমুনা সংগ্রহ ও রিপোর্ট তৈরির কাজে সমন্বয় করতেন মাসুম বিল্লাহ, তানিয়া ও রিদিতা নামের তিন জন। হুমায়ূন কবীর ও তানজিনা পাটোয়ারীকে গত ২৩ জুন গ্রেফতার করা হয়। বর্তমানে তারা কারাগারে আটক আছেন।