ইতালিকে উড়িয়ে জয়ের হাসি আর্জেন্টিনার

68
ফাইনালিসিমায় আর্জেন্টিনার জয়। ছবি-সংগৃহীত

দৈনিক আলাপ খেলাধুলা ডেস্ক : দুই চ্যাম্পিয়নদের লড়াইয়ের প্রথমার্ধেই ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় আর্জেন্টিনা। বিরতির পরও চলে আর্জেন্টিনার দাপট। শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত ম্যাচের লাগাম হাতছাড়া করেনি দক্ষিণ আমেরিকার চ্যাম্পিয়নরা। ফলে রোমাঞ্চকর ফাইনালিসিমাতে শেষ পর্যন্ত জয়ের হাসিই হাসল আর্জেন্টিনাই। কাতার বিশ্বকাপ থেকে বাদ পড়ার পর এবার দুই মহাদেশীয় লড়াইয়েও হতাশা সঙ্গী হলো ইউরোপ চ্যাম্পিয়ন ইতালির।

ফাইনালিসিমায়ার ট্রফি হাতে মেসি ও আর্জেন্টিনা দল। ছবি: টুইটার

বুধবার দিবাগত রাতে লন্ডনের ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপাধারী ইতালি ও কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা। কাগজে-কলমে যেই ম্যাচের নাম ফাইনালিসিমা। এই ফাইনালিসিমাতে ইতালিকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে আর্জেন্টিনা।

আর্জেন্টিনার হয়ে তিন গোলের মধ্যে একটি করেছেন লাউতারো মার্টিনেজ, একটি এসেছে ডি মারিয়ার পা থেকে আর শেষ দিকে তৃতীয়টি করেছেন পাওলো দিবালা। ফুটবলে সময়টা দারুণ কাটছে আর্জেন্টিনার। ২০১৯ সালের জুলাইয়ের পর থেকে এখনো পরাজয় দেখেনি দলটি। এবার ইউরো চ্যাম্পিয়নদের হারিয়ে জয়ের ছন্দ ধরে রাখল লিওনেল স্কালোনির দল। 

লড়াইটা দুই চ্যাম্পিয়নের হলেও এদিন ম্যাচ জুড়ে দাপট দেখিয়েছে আর্জেন্টিনা। আক্রমণ-দখল দুই বিভাগেই এগিয়ে ছিল দক্ষিণ আমেরিকার দলটি। ম্যাচে ৫৬ভাগ সময় বল নিজেদের দখলে রেখে ১৭বার আক্রমণ করে আর্জেন্টিনা। যার মধ্যে ৯টিই ছিল অনটার্গেট শট।

বিপরীতে ৭টি শট নিয়ে অনটার্গেটে ৩টি নিতে পেরেছে ইতালি। কিন্তু অনটার্গেটের একটিতেও সাফল্য আসেনি। অবশ্য এর জন্য নিজেদের গোলরক্ষক এমিলিয়ানো মার্টিনেজকে ধন্যবাদ দিতে পারে আর্জেন্টিনা। পুরো ম্যাচেই ইতালির আক্রমণ দারুণভাবে সামলে জাল রক্ষিত রেখেছেন তিনি।

ম্যাচের শুরুতে যদিও মিলেছিল লড়াইয়ের আভাস। কিন্তু সময় গড়াতেই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে ইতালি। ওয়েম্বলিতে এদিন ম্যাচের চতুর্থ মিনিটেই ফ্রি কিক পায় আর্জেন্টিনা। তবে মেসির করা শট লক্ষ্যে যায়নি। ১২মিনিটে প্রথমবার আক্রমণে যায় ইতালি। কিন্তু সেই যাত্রায় আর্জেন্টিনাকে রক্ষা করেন গোলরক্ষক মার্টিনেজ। ২২তম মিনিটে আরেকবার দলকে রক্ষা করেন মার্টিনেজ।

পাল্টা আক্রমণে ২৮ মিনিটে লিড পেয়ে যায় আর্জেন্টিনা। বাঁ দিক থেকে ইতালির রক্ষণভাগের খেলোয়াড়কে কাটিয়ে প্রতিপক্ষের ডি বক্সে ঢুকে সতীর্থকে পাস বাড়ান লিওনেল মেসি। সুযোগ হাতছাড়া করেননি লাউতারো মার্টিনেজ। খুব কাজ থেকেই ডান পায়ের আলতো শটে ঠিকানা খুঁজে নেন মার্টিনেজ।

পরের গোলটি আসে বিরতিতে যাওয়ার আগ মুহূর্তে। এই গোলেও অবদান রাখেন মার্টিনেজ। প্রথমার্ধের যোগ করা সময়ে তাঁর বাড়ানোর বল ধরে ইতালির অধিনায়ক লিওনার্দো বোনুচ্চিকে পেছনে ফেলে ডি বক্সে ঢুকেই স্কোরবোর্ড ২-০ করেন ডি মারিয়া। ফলে দুই গোলের লিড নিয়ে প্রথমার্ধ শেষ করে আর্জেন্টিনা।

এরপর দ্বিতীয়ার্ধে উল্লেখযোগ্য অনেকগুলো সুযোগ আসলেও সেগুলো কাজে লাগাতে পারেনি আর্জেন্টিনা। তবে শেষ দিকে ঠিকই ব্যবধান বাড়িয়ে নিয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার দলটি। শেষ বাঁশি বাজার আগে মেসির পাস থেকেই স্কোরলাইন ৩-০ দিবালা। ফলে শেষ পর্যন্ত বড় জয় নিয়েই মাঠ ছাড়ে স্কালোনির শিষ্যরা। 

ইউরো ও কোপা আমেরিকা শেষ হওয়ার পর গেল বছরের ডিসেম্বরে নিজেদের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে ইউরোপের সর্বোচ্চ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা উয়েফা ও দক্ষিণ আমেরিকা শীর্ষ ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা কনমেবল। যেখানে পারস্পরিক সহযোগিতা সম্প্রসারণের জন্য বিভিন্ন বিষয় অন্তর্ভুক্ত করেছে দুটি সংস্থা। যার জন্য ইউরো ও কোপা আমেরিকার চ্যাম্পিয়নদের মধ্যে আয়োজিত হয়েছে ম্যাচটি।

Content Protection by DMCA.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here