দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্কঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কেউ নাক গলাতে এলে মেনে নেওয়া হবে না। দেশে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রকারীদেরও শাস্তি পেতে হবে। বাংলাদেশকে কেউ দমায়ে রাখতে পারেনি, পারবে না। বিদেশি কেউ আমাদের ক্ষতি করতে পারবে না। কারণ আমরা স্বাধীন দেশ। মুক্তিযুদ্ধের সময়ও পারেনি। এখনও পারবে না।
নিজ নির্বাচনি এলাকা গোপালগঞ্জ-৩ (টুঙ্গিপাড়া ও কোটালিপাড়া) এর কোটালিপাড়া শেখ লুৎফর রহমান সরকারি কলেজ মাঠে আজ শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।
নৌকায় ভোট চেয়ে শেখ হাসিনা বলেন, আপনারাই আমার বাবা-মা ভাই-বোন। আমাকে সমগ্র বাংলাদেশের ৩০০ আসন নিয়ে ব্যস্ত থাকতে হয়। আপনারাই প্রতিবার (কোটালীপাড়ায়) আমার ভোট করে দেন। এবারও আমার ভোট আপনারাই করে দেবেন, এ প্রত্যাশা ব্যক্ত করছি। বাংলাদেশে কেউ গৃহহীন ভূমিহীন থাকবে না। এখানে কেউ ঠিকানাবিহীন থাকবে না। ইতোমধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। আগামীতে ক্ষমতায় এলে যারা বাদ পড়েছেন তাদের সবাইকে ঘর করে দিব।
কোটালিপাড়ার উন্নয়ন নিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এক সময় রাস্তাঘাটের অভাবে মানুষ চলাফেরা করতে পারত না। নৌকায়-স্পিডবোটে চলাফেরা করতে হতো। জোয়ার-ভাটা বুঝে চলাচল করতে হতো। কোটালিপাড়ায় এক সময় মানুষ জীবন-জীবিকা নিয়ে কষ্টে ছিল। এখন প্রতি গ্রাম বদলে গেছে। এখানে প্রতিটি রাস্তা-ব্রিজ, কালভাট করে দিয়েছি। মানুষের জীবনমান পরিবর্তন হয়ে গেছে। খাদ্য সংকট দূর করে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। করোনার পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে পৃথিবীব্যাপী খাদ্য সংকট তৈরি হয়েছে। কিন্তু আমরা থেমে নেই। দেশে একটিও অনাবাদি জমি থাকবে না। দেশের ধান ও ফসল শাকসবজি উৎপাদন বাড়াতে হবে। দেশে দারিদ্র্যতার হার কমিয়েছি। আগামীতে দেশে কোন দারিদ্র্য থাকবে না।
তরুণদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির অগ্নিসন্ত্রাস বন্ধ করতে হবে। যারাই ভোট বানচাল করবে তাদের প্রতিহত করে শাস্তি দিন। আমার ভোট আমি দিবো, যাকে খুশি তাকে দিবো। তারুণ্যের শক্তি বাংলাদেশের অগ্রগতি। নতুন ভোটাররাই এবার ভোট দিয়ে নৌকাকে বিজয়ী করবে।
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভায় নিজের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কাজের বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ করেছি।’
আগামী ৭ জানুয়ারি দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। জনসভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদে, কোটালিপাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বিমলকৃষ্ণ বিশ্বাস, উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ্বাস প্রমুখ বক্তব্য দেন। সভা পরিচালনা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আয়নাল হোসেন শেখ .
এর পরে মাদারীপুরের কালকিনিতে নির্বাচনী জনসভায় যোগ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে ছিলেন বঙ্গবন্ধুর কনিষ্ঠ কন্যা শেখ রেহানা।
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) বিকাল সাড়ে ৩টার দিকে কালকিনির সৈয়দ আবুল হোসেন কলেজ মাঠের জনসভামঞ্চে উপস্থিত হন তিনি।