‘নিজেকে যৌনকর্মী মনে হচ্ছিল’! হায়দরাবাদে ‘বিশ্বসুন্দরী’ প্রতিযোগিতা থেকে নাম তুলে কী কী বললেন ‘মিস ইংল্যান্ড’

3

দৈনিক আলাপ আন্তর্জাতিক ডেস্ক: ৭৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রতিযোগী ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালেন। কেন তিনি সরে দাঁড়ালেন প্রতিযোগিতা থেকে, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মিলা।

এ বছর বিশ্বসুন্দরী (মিস ওয়ার্ল্ড) প্রতিযোগিতা হচ্ছে হায়দরাবাদে। গত ১০ মে থেকে এই প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। শেষ হবে ৩১ মে। ভারতের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করছেন রাজস্থানের নন্দিনী গুপ্ত। কে হবেন বিশ্বসুন্দরী, কার মাথায় উঠবে সেরার শিরোপা, তা নিয়ে কৌতূহল থাকে সারা বিশ্বের। কিন্তু এ বার সেই বিশ্বসুন্দরী প্রতিযোগিতা অন্য একটি কারণে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছে।

এই প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রতিযোগী ‘মিস ইংল্যান্ড’ মিলা ম্যাগি। আচমকাই তিনি এই প্রতিযোগিতা থেকে নিজের নাম তুলে নিয়েছেন। যা শোরগোল ফেলে দিয়েছে এমন একটি ‘হাই প্রোফাইল’ প্রতিযোগিতায়। ৭৪ বছরের ইতিহাসে এই প্রথম কোনও প্রতিযোগী ‘মিস ওয়ার্ল্ড’ প্রতিযোগিতা থেকে স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়ালেন। কেন তিনি সরে দাঁড়ালেন প্রতিযোগিতা থেকে, তার কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মিলা। বলা ভাল, সরে দাঁড়ানোর নেপথ্যে কয়েকটি অভিযোগ তুলেছেন ‘মিস ইংল্যান্ড’।

সূত্রের খবর, প্রথমে জানা যায় যে, ‘মিস ইংল্যান্ড’ স্বেচ্ছায় সরে দাঁড়িয়েছেন। ব্যক্তিগত কারণেই তিনি সরে দাঁড়িয়েছেন বলেই আলোচনা চলতে থাকে। কিন্তু সেই আলোচনায় জল ঢেলেছেন খোদ ‘মিস ইংল্যান্ড’। প্রতিযোগিতা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য আয়োজক সংস্থার বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মিলার অভিযোগ, সৌন্দর্য প্রতিযোগিতার আড়ালে আসলে প্রতিযোগীদের শোষণ করা হয়। তাঁর কথায়, ‘‘নিজেকে যৌনকর্মী বলে মনে হচ্ছিল। বাঁদরকে যে ভাবে নাচানো হয়, সেই ভাবেই আমাদের পারফর্ম করতে হচ্ছে।’’ এর পরই মিলা উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘আমি কারও মনোরঞ্জনের পাত্রী হতে আসিনি।’’ মিলা আরও জানিয়েছেন, প্রতিযোগীদের সকাল থেকে মেকআপ করা, পোশাক পরা, সেগুলি ঘনঘন বদলানো, ইত্যাদি করতে হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত তা চলছে। তার পর ধনী পুরুষদের সামনে হাঁটানো হচ্ছে।

ভারী বৃষ্টিতে ভাসছে হিমাচল! হড়পা বানে বিপর্যস্ত কুলু এবং রামপুর, সাত জেলায় সতর্কতা জারি, চম্বায় ধসে চাপা পড়ে মৃত এক
মিলা জানিয়েছেন, একটা অন্য রকম কিছু আশা করেছিলেন তিনি। কিন্তু এই প্রতিযোগিতা সেই পুরনো দৃষ্টিভঙ্গিতেই আটকে রয়েছে বলে দাবি ‘মিস ইংল্যান্ড’-এর। তাঁর দাবি, ‘‘জোড়ায় জোড়ায় বেছে নেওয়া হয় প্রতিযোগীদের। প্রত্যেক টেবিলে ছ’জন করে পুরুষ বসে থাকেন। তাঁদের কাছে দু’জন করে প্রতিযোগীকে পাঠানো হয় যাতে ওঁদের মনোরঞ্জন করতে পারি।’’ এই ঘটনাকে তিনি মেনে নিতে পারছিলেন না বলে জানিয়েছেন মিলা। প্রতিযোগীদের সঙ্গে অত্যন্ত অন্যায় হচ্ছে বলেই অভিযোগ তুলেছেন তিনি। মিলার কথায়, ‘‘মিস ওয়ার্ল্ড-এর একটা মূল্যবোধ আছে। কিন্তু দেখা যাচ্ছে, এই প্রতিযোগিতা সেই পুরনো ধ্যানধারণাতেই আটকে। এই ধরনের ঘটনা নিজেকে যৌনকর্মী ভাবতে বাধ্য করাচ্ছে।’’

পেশায় এক জন লাইফগার্ড মিলা। জলে ডুবে যাওয়া ব্যক্তিকে সিপিআর দিয়ে বাঁচানোই তাঁর কাজ। সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নিয়ম বদলের জন্য লড়াই জারি রেখেছেন তিনি। ‘মিস ইংল্যান্ড’ প্রতিযোগিতায় নিয়ম বদলে সফলও হয়েছেন তিনি। সেখানে বিকিনি রাউন্ড সরিয়ে সেখানে ‘সিপিআর কুইন চ্যালেঞ্জ’ আনা হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্ব সুন্দরী প্রতিযোগিতায় পরিবর্তন আনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা যে সম্ভব নয় বুঝতে পেরেছি।’’ আর এ সব কারণেই নিজেকে প্রতিযোগিতা থেকে সরিয়ে নিয়েছেন বলে দাবি মিলার।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here