বাংলাদেশের সবাই এক পরিবার: প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস

42
সংগৃহীত ছবি

দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্ক: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশের সবাই এক পরিবার। পার্থক্য বা বিভেদ করার কোনো সুযোগ নাই।

মঙ্গলবার (১৩ আগস্ট) রাজধানীর ঢাকেশ্বরী মন্দির পরিদর্শনে গিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস আরও বলেছেন, ‘আমাদের গণতান্ত্রিক যে আকাঙ্খা সেখানে আমরা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ হিসেবে নয়, মানুষ হিসেবে আমাদের অধিকারগুলো নিশ্চিত হোক। সমস্ত সমস্যার গোড়া হলো আমরা যত প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজন করেছি, সবকিছু পচে গেছে। এই কারণে এই গোলমালগুলো হচ্ছে।’

প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, ‘আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক আয়োজনগুলো ঠিক করতে হবে। সেটা হলো ন্যায়বিচার। ন্যায় বিচার হলে কে বিচার পাবেন না বলেন? আমি কি দেখতেছি এটা কোন ধর্মের, কোন জাতির? এটা কি আইনে বলা আছে এই সম্প্রদায় হলে ওই আদালতে, ওই সম্প্রদায় হলে ওই আদালতে। আইন একটা। কার সাধ্য আছে সেটা বিভেদ করা। এটা হতে পারে না। এটা এমন রোগ যে মূলে যেতে হবে। আপনারা যদি বলেন-আমাদের সংখ্যালঘু হিসেবে বলছে, এটা হলো মূল সমস্যা থেকে আমরা দূরে চলে যাচ্ছি। আমাদেরকে বলতে হবে, আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে। সেটা হলে আমাদের বাক স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠিত হবে।’

প্রধান উপদেষ্টা বলেন, ‘বড় রকমের একটা বিভেদের আওয়াজ শুনছি। বিমানবন্দনে নেমেই যেটা বললাম। এমন বাংলাদেশ আমরা গড়তে চাচ্ছি আমরা এক পরিবার। এটাই হলো মূল জিনিস। পরিবারের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা বিভেদ করা এটার কোনো প্রশ্নই আসে না। আমরা বাংলাদেশের মানুষ এটাই নিশ্চিত করতে চাই।’

সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উদ্দেশ তিনি বলেন, ‘আপনারা বলুন আমরা মানুষ, আমি বাংলাদেশের মানুষ। আমার সাংবিধানিক অধিকার এই। আমাকে দিতে হবে। সব সরকারের কাছে এটাই চাইবেন আর কিছুই চাইবেন না।’

গ্রামীণ ব্যাংকের কথা তুলে ধরে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেন, ‘আমার সঙ্গে অনেকেরই পরিচয় আছে। আজকে নতুন পরিচয় নয়। আমরা যখন আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের কাজ শুরু করি, তখন আমরা গরিব মেয়েদের নিয়ে কাজ শুরু করি। কেউ বলেছেন-না মুসলমান মেয়ে যাওয়া যাবে না। আমরা বলেছি-তার টাকা দরকার আছে। টাকা দিলে দুটো মুরগি কিনবে, ডিম পাড়বে, দুটো খেতে পারবে। পাশের পাড়া হলো হিন্দু পাড়া, আপনি হিন্দু পাড়ায় যাবেন? না হিন্দু পাড়ায় কেউ যায়নি। আপনি কেন যাবেন? আমি বললাম-আমি তো হিন্দু পাড়া, মুসলমান পাড়ার জন্য আসিনি। গরিব মেয়ের জন্য এসেছি। আপনি শুনবেন না আমাদের গ্রামীণ ব্যাংকের ইতিহাসে হিন্দু পাড়া বলে বাদ দিয়ে গেছি, মুসলমান পাড়ায় গেছি। হয়নি কোনোদিন। একসঙ্গে গেছি একভাবে গেছি।’

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here