দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্কঃ প্রতিপক্ষের হামলায় গুরুতর আহত চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের (চমেক) ছাত্র মাহাদি জে আকিব এখনো হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন। তাঁর অবস্থা আগের চেয়ে কিছুটা ভালো বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা বলেছেন, মাহাদিকে আজ মুখে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। তবে তাঁকে নিয়ে আশঙ্কা এখনো পুরোপুরি কাটেনি।
ছাত্রলীগের সমর্থক মাহাদির ওপর গত শনিবার সকালে একই ছাত্রসংগঠনের অপর একটি পক্ষ হামলা চালায়। তাঁর মাথায় আঘাত করা হয়। এতে তাঁর মস্তিষ্ক ও খুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে চমেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
সেদিনই তাঁর অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর মাথার খুলির হাড়ের একটা অংশ পেটের চামড়ার নিচে রেখে দেওয়া হয়। পরে তা আবার প্রতিস্থাপন করা হবে।
জানতে চাইলে নিউরো সার্জারি বিভাগের প্রধান অধ্যাপক নোমান খালেদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘আস্তে আস্তে মাহাদির উন্নতি হচ্ছে। তাঁকে আমরা পর্যবেক্ষণে রেখেছি। তবে যেহেতু ব্রেনে আঘাত, তাই তাড়াতাড়ি কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে আমরা আশাবাদী।’
অস্ত্রোপচারের পর থেকে মাহাদি আইসিইউতে রয়েছেন। গতকাল রোববার বিকেলে তাঁর জ্ঞান ফিরেছে। তিনি চোখ মেলে তাকাচ্ছেন। কথা বলারও চেষ্টা করছেন। গতকাল থেকে তাঁকে রাইস টিউব দিয়ে তরল খাবার দেওয়া হচ্ছিল। নিউরো সার্জারি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহফুজুল কাদের আজ সকালে তাঁকে দেখতে যান। এ সময় তিনি আজ থেকে রাইস টিউব খুলে মুখে খাবার দেওয়ার পরামর্শ দেন।
মাহফুজুল কাদের বলেন, ‘ছেলেটা আজ ভালো আছে। মুখে খাবার দেওয়ার চেষ্টা করতে বলেছি। তার ডান বা বাঁ পাশ—কোনো দিকে দুর্বলতা দেখিনি। হাত–পা নাড়াচ্ছে। আশা করি, সুস্থ হয়ে উঠবে।’
মাথার খুলে ফেলা খুলির হাড় প্রসঙ্গে মাহফুজুল বলেন, সাধারণ নিয়ম হচ্ছে তিন মাসের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা। কিন্তু সবকিছু যদি ভালো থাকে, দ্রুত ব্রেনের উন্নতি হয়, তাহলে এক মাসেও সেটা প্রতিস্থাপন সম্ভব।
অসুস্থ মাহাদির মাথায় ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় একটা ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। ব্যান্ডেজের ওপর লেখা আছে ‘হাড় নেই, চাপ দেবেন না’।
চমেকে ছাত্রলীগের দুটি পক্ষ সক্রিয় রয়েছে। এর একটি পক্ষ সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের এবং অপর পক্ষটি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরীর অনুসারী।
শুক্রবার প্রধান ছাত্রাবাসে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এ সময় দুজন আহত হন। এ ঘটনার জেরে শনিবার সকালে মাহাদির ওপর হামলা হয়। মাহাদি মহিবুল হাসানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত। এ ঘটনার পর শনিবার কলেজ অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়। ছাত্রাবাস শনিবার ছেড়ে দেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় পুলিশ দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করেছে।