দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্কঃ ‘ইন্সপায়ারিং উইমেন ভলান্টিয়ার অ্যাওয়ার্ড ২০২১’ সম্মাননা অর্জন করলেন ১৫ জন নারী। সমাজে বিশেষ করে করোনা সংকটে নারী স্বেচ্ছাসেবীদের অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি জানাতে বুধবার আগারগাঁও-এর এলজিএইডি ভবনে এক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাদের উক্ত সম্মাননা প্রদান করা হয়। করোনাকালে স্বাস্থ্য সচেতনতা বৃদ্ধি, খাদ্য বিতরণ, সহিংসতা প্রতিরোধ, শিশু সুরক্ষা, শিক্ষা, স্যানিটেশন, পরিবেশ, মানসিক স্বাস্থ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই সম্মাননা প্রদান করা হয়।
নানা ধাপে নির্বাচিত সেরা ৫ জন স্বেচ্ছাসেবী হলেন- ফরিদপুরের তাহিয়াতুল জান্নাত, ঢাকার কামরুন নাহার কলি ও তাসনুভা আনান, রংপুরের আরিফা জাহান বিথি, নোয়াখালীর আয়েশা আক্তার। ক্রমানুসারে এই ৫ জন সম্মাননা পুরস্কার হিসেবে গ্রহণ করেছেন ১ লাখ থেকে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত। ১৫ জনের প্রত্যেকেই ক্রেস্ট, সার্টিফিকেট এবং মেডেল গ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, বিশ্বব্যাপী স্বেচ্ছাসেবায় নিয়োজিতদের ৫৭ শতাংশই নারী। “স্বেচ্ছাসেবার মাধ্যমে একদিকে যেমন নারীদের অংশগ্রহণ শক্তিশালী হয় তেমনি অসমতা দূরীকরণেও ভূমিকা পালন করে”- নারী স্বেচ্ছাসেবীদের এই গুরুত্বপূর্ণ অবদানকে স্বীকৃতি জানাতে এবং অনুপ্রেরণা জোগাতে ইউএনভি বাংলাদেশ, ভিএসও বাংলাদেশ, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এবং একশনএইড বাংলাদেশ যৌথভাবে এই সম্মাননা প্রদানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) কর্তৃপক্ষের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সুলতানা আফরোজ। তিনি বলেন, বাংলাদেশসহ সারাবিশ্বেই করোনাকালীন সংকটের শুরু থেকেই নারীরা প্রথম সারির সাড়াপ্রদানকারী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছেন। তাদের এই অবদানের মাধ্যমে তারা বৃহত্তর ইতিবাচক প্রভাব রাখছেন। শারীরিক, সামাজিক, অর্থনৈতিক বাধা সত্ত্বেও তারা বিভিন্ন খাতে অভূতপূর্ব অবদান রেখে চলেছে, যা মর্যাদা ও সম্মান পাওয়ার দাবিদার। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ (পিপিপি) নারী স্বেচ্ছাসেবীদের, তাদের উদ্ভাবনী শক্তিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। যাতে করে তারা জাতীয় স্বেচ্ছাসেবী নীতিমালার আলোকে জাতীয় ও বৈশ্বিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অতিথিদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভ্যান নুয়েন, ডেপুটি রেসিডেন্ট রিপ্রেজেন্টেটিভ, ইউএনডিপি, দীপক চক্রবর্তী, অতিরিক্ত সচিব, স্থানীয় সরকার বিভাগ, আক্তার উদ্দিন, কান্ট্রি কোঅরডিনেটর, ইউএনভি, অধ্যাপক তানিয়া হক, উইমেন এন্ড জেন্ডার স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
আরো উপস্থিত ছিলেন সাবেক অতিরিক্ত সচিব ড. কাজী আনোয়ারুল হক, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর এর প্রধান প্রকৌশলী রশীদ খান, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ এর পরিচালক জলি নূর হক, ভিএসও বাংলাদেশ-এর বিজনেস পারসুইট লিড মো. সালাহউদ্দিন আহমেদ, এবং একশনএইড বাংলাদেশ-এর প্রোগ্রাম অফিসার আফসানা আলিম।
পুরস্কার গ্রহণকারী তাহিয়াত বলেন, স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ শুরু করেছি কলেজের শুরুর দিকে। অনেকটা ভাল কিছু করার ঝোঁকের বসে। কিন্তু কাজ করতে এসে দেখেছি এদেশের হাজার হাজার মানুষ কেবলমাত্র সচেতনতার অভাবে জীবনে নানা সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। আর তখনই আমার মনে হয়েছে একজন মানুষ হিসেবে এই পৃথিবীর কাছে আমার ঋণ শোধ করার অন্যতম উপায় হচ্ছে এই সুবিধাবঞ্চিত মানুষগুলোর সেবা করা। প্রতিটা ভাল কাজের স্বীকৃতি কাজের গতি বাড়িয়ে দেয়, এই পুরস্কার আমি সহ আমার টিম এবং যে সকল নারীরা সমাজের জন্য কিছু করতে চায় তাদের অনুপ্রাণিত করবে এবং সামাজিক পরিবর্তনে যারা অংশগ্রহণ করে তাদের কাজকে আরো গতিশীল করবে।