তুমি আজ বহু দূরে।
_________// মিনু আহমেদ
নিঃসঙ্গ ঈদ।
নিঃসঙ্গ আমি।
আজ বাড়িটি ফাঁকা আমি আর সে।
দু’জনে দুই মেরুর বাসিন্দা,
একাকিত্ব জীবন কেমন হয়—
বয়স না হয়েও বুঝে গেছি আমরা দু’জন।
কেন এমন হলো?
ঝগরা হচ্ছে বলে!
সেপারেশন থাকা নাকি একজন অন্য জনকে বুঝতে পারছি না?
এমন তো আগে কখনো হয়নি
তবে এখন কেন?
দু’জন দুই ঘরে—
মাঝে মাঝে কথা হয় নিচু স্বরে।
দেখা হয় না শুধু টেলিফোনে।
খাবারটা রান্না করে দরজার সামনে এগিয়ে দিয়ে—চলে আসতে হয়।
মানুষটিকে একটু হাত বুলিয়ে দেখার উপায় নেই।
স্রেফ করোনার ভয়ে—
গুটিশুটি এক জায়গায় পড়ে আছে।
যে মানুষটি সারা বাড়ি ঘুরে বেড়াতেন,
আজ সে নিঃসঙ্গ,নিস্তব্ধ,নিঃশ্বাসে করোনার ছুঁয়া—বড় কষ্ট হয়।
তবু মুখ ফিরিয়ে আনতে হয়।
ভাবছো—আমি কতো স্বার্থপর তাই না?
আমি কতটা স্বার্থপর—তুমি একদিন বুঝতে পারবে?
অবশ্যই পারবে।
নিঃসঙ্গ ঈদ তোমাকে যেমন নিস্তব্ধ করেছে।
আমাকে তেমন করেছে নিঃসঙ্গ।
ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সাধ্যের বাইরে আমি।
তোমাকে জড়িয়ে ধরে —না পারছি কাঁদতে, না পারছি হাসতে।
ফোনে কথা বলছি তোমার সাথে।
তুমি পাশে থেকেও বহু দূরে।
তোমার চোখের আড়ালে আমি—দেখি তোমাকে।
তুমি যখন দেখো—
তখন আমি নানান বাহানায় মুখ ফিরিয়ে—
তোমার অগোচরে দু’চোখর অশ্রু জলে ভাসি।
শুধু বার বার বলতে হয় আল্লাহ্ তুমি রহম করো।
আজকের এই ব্যতিক্রম ঈদ,
এই নিঃসঙ্গ ঈদ,
এই নিস্তব্ধ ঈদ,
তোমাকে আমার কাছ থেকে দূরে নিয়ে গেছে আলাদা করে।
তুমি ভেবো না—দেখে নিও।
পৃথিবী এক দিন আগের মতো
সম্পূর্ণ ভালো হবে।
তুমিও নিশ্চয়ই ভালো হবে
করোনা তোমাকে আমার কাছ থেকে আলাদা করতে পারবে না।
শুধু আজকের এই নিঃসঙ্গ ঈদ
মানুষ মনে রাখবে যুগে যুগে।
তুমি যেমন করোনা হয়ে নিঃসঙ্গ
আর আমি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে না পারার নিঃসঙ্গ।
কাছে থেকেও বহু দূরে।