মালতী কথন
তাসলিমা খায়রুন
সেদিন মালতী বিছানা পাতিয়া
শুয়ে ছিলো অবেলাতে,।
পাশের ঘরের মিনতী মাসিমা,
কাছে বসে নিরালাতে।
শুধালো তাহারে গলা নীচু স্বরে,
কিসের বেদনা ভার,
গেঁথে আছে বুকে পাষাণ সম,
সয়েনা পরাণে আর,?
বল বাছা বল, ঠেলে দে পাষাণ,
পাতা আছে মোর বুক,
মা যদি ভাবিস,ঝেড়ে ফেল দুখ,
আসে তব যদি সুখ।
মাসিমার কথা তীক্ষ্ণ হয়ে,
বেজে উঠে তার কানে,
কিযে ব্যাথা তার,
এ বুকেতে ভার,
বিধাতাই ভালো জানে।
জন্মই যেনো এ জনমে পাপ,
কি লিখা কপালে আর,
কেন যে বিধাতা,পাঠালো ধরাতে,
কি জানি কি পাপে তার।
না হলে কেন তার কাছ থেকে
বিধাতা ঘুরালো মুখ,
পাঠিয়ে ধরাতে, দিলো নাকো তাকে,
তিলক দন্ড সুখ।
এ ধরাতে তাকে আপন করে,
দিলেন যাকে মা,
মেয়ে যে তাহার দু চোখের বিষ,
বিধাতা জানতো না?
অনাদর আর অবহেলা সয়ে,
বড় হলো মায়ের ঘরে,
কে জানিত তাহার সেই অনাদর,
থাকবে জীবন ভরে।
অনেক স্বপ্ন নিয়ে দু চোখে,
গিয়েছিলো স্বামীর ঘর,
দু মাস পরেই ভাঙ্গিলো সে ঘর,
হয়ে গেলো সবে পর,।
তাড়িয়ে দিলো মা ও যে তাকে,
বাড়িতে দিলোনা ঠাঁই,
অলুক্ষনে সে ভাইদের উপর
নজর না লাগে তাই।
ভাইয়েরাও তার মা অন্তঃপ্রাণ,
বুঝিলোনা কষ্ট তার,
কোন শ্মশানে চিতা জ্বলবে তার,
ভাবিলোনা একটি বার,।
ভাগ্যের হাতে নিজেকে সপেঁ
প্রশ্ন বিধির তরে,
যে ঘরেতে মেয়েদের এতো অপমান
মেয়ে দিলো কেনো সে মায়ের ঘরে?
হু হু করে আসে বেদনার জল,
মালতীর দুই চোখে,
দু হাতে জড়িয়ে মুখটি লুকায়,
মিনতী মাসির বুকে,,।