ভারত থেকে কলমযোদ্ধা-নিমাই জানার আত্মার অনুভূতির দীর্ঘ কবিতা “অশরীরী মানুষ ইকোস্প্রিনের নৌকা চালায়”

225
“অশরীরী মানুষ ইকোস্প্রিনের নৌকা চালায়”

অশরীরী মানুষ ইকোস্প্রিনের নৌকা চালায়
নিমাই জানা

বাবার মতো দীর্ঘ মানুষটির কোনদিন অসুখ নেই
গভীর রাতে অসুখের শুধু অসুখ করলে সুপারি গাছ হলুদ শাড়ি পরে নেমে যায় শুকতারার অবিচ্ছিন্ন রেতঃপাতের দিকে , হাঁ মুখে গলাধঃকরণ করছে এক বিষধর রাসায়নিক প্রক্রিয়া , স্পর্শ যোগীর অধ্যায়
শাড়ির ছায়ার কাল্পনিক নারীটি ডাহুকের মতো ক্ষীণকায় দশমিক বিন্দু গুলোকে চুপচাপ মেলে দেয় আমাদের পূর্ব জন্মের প্রসারিত হাতে অসদবিম্ব গজিয়ে ওঠে অক্ষিকোটরে
কেউ নেই নিস্তরঙ্গ সমুদ্রের মতো কপাটিকা হীন
আমাদের ভেসে যেতে বাধা ছিল গভীর রাতের নির্বিষ সাপের শিরদাঁড়া বেয়ে
নৌকার শরীরে দুটি স্বরবর্ণ আর একটি গর্ভ নিরোধক বড়ি আছে

সাপ কখনো উগরে দেয় এই জন্মের পাপ কথা অন্ধকারের ভেতর কে নেমে আসে আমার দক্ষিণ জানালায় পরজীবী ঘাস বেয়ে
আমি তাকে আগুন দিয়ে বরণ করে নিলাম , লোডশেডিং ঘরে লাল নাইট ভেপার ল্যাম্প রেডিয়াম , 18/3 ইকোস্প্রিন সব জরায়ুজ উদ্ভিদেরা বেড়ে উঠছে আমার ধমনীর রক্তের তলায়
সন্তানের চোখে লাল বিন্দু দেখে ভয় পেয়ে গেলাম আমি

আমি আজ কাঁটাহীন ছত্রাক ভালোবেসে ফেলেছি নীল রঙের বড়ির মতো
আগুন নিভিয়ে লেলিহান পুরুষেরা বাড়ি ফিরে আসছে নিম্নমুখে
আমি বৃষ্টির পরে সঙ্গমহীন শুয়ে থাকি নিজের শরীরের উপর
আমার আর কোনো অসুখ নেই , সবাই শাঁখ বাজাও , ধূপ জ্বেলে দাও নিয়মভঙ্গের বৃদ্ধাঙ্গুলের উপর
হিমশৈলের মত ঠান্ডা জল ভিজে যাক নরম কাদামাটি উত্তপ্ত গহ্বর

রাতের ভাঁজ করা দেহকে নিজের শরীরের ভেতর রাখি প্যাঁচানো ক্ষুদ্রান্ত্রের মতো
কেউ কি হলুদ মিছিলে বসে পড়লো আমার নিরস্ত্রতার সুযোগ নিয়ে
আমি নপুংসক সাপের স্বপ্ন দেখি রাত দেড়টার পর, অধাতব পদার্থের বৈধব্য রং নিয়ে আমি কিছু অশরীরীকে দেখে ফেলি বিবর্ধিত তরলে
আম গাছের তলায় যারা কখনো জন্মের দাঁত ভেঙে আসেনি , তাদের শরীরের ঝালরে গৃহহীন পোশাক
ক্রমশ সন্ন্যাস হয়ে যাচ্ছে আমাদের শরীরের রিপুচক্র , পোশাক বদল করছি পরমাত্মার সাথে

সকলেই সর্পিলাকার অথচ শৃংখল থেকে মুক্ত
সাপের ভয় নেই বৃত্তাকার চোখে , সায়ানাইড
কার কাছে রেখে যাব শৈববিন্দুর মতো
নিস্তরঙ্গ হেঁটে যায় এই অনুর্বর প্লাবনভূমি দেহে বেড়ে ওঠে নিউরোসিস ব্যাধি
সুপারি পাতার দেহরা হেঁটে যায় নিরাময় অশ্বত্থ তলা দিয়ে
ওই দুর আলোকবিন্দুর দিকে হেঁটে যাওয়া ,ত্যাগ ও বৈবস্বত মন্বন্তর
আমি ব্রহ্মার মাথা ভেদ করা এক আলো দেখতে পাই বিছানার উপর দাঁড়িয়ে
ভীর রাতের নক্ষত্রদের মৃতভোজী স্বাদ গ্রহণ করি আমি

আমায় উড়িয়ে নিয়ে যায় কবন্ধ , পূর্ব ঋষির দল হিমশৈলের প্রপাত রেখা আর চিতাভস্মের বেগুনি রক্তকণায় এক পাথর বুকে নিয়ে শুয়ে আছে আমার পরজন্ম অথবা পূর্বজন্মের কোন সাভানা নারী
আমি মৃত্যু নামক উদ্ভিদকে রোপন করি উঠোনের দুই দিকে

একটি আলো মৃত দেহের ময়নাতদন্ত করে চলে , অন্য তারারা আমাদের জামার বিলীয়মান রঙের ভেতর থেকে বিশল্যকরণী বের করে আনে ক্ষারীয় দ্রবণের বীর্যভর্তি ফানুস থেকে
পুড়িয়ে দেয় ক্ষত স্থান
নরম কাদামাটি থেকেই জলজ সাপ বের করে আনি
দুটো নক্ষত্র , একটি নারী , এবং চারজন বালকের দল উপত্যকায় এসে দাঁড়িয়েছে
আমি তাদের মায়াকাজলে ২৮ টি পদ্মবীজ রাখি

দশটি আঙ্গুলের ভাঁজে ত্রিশূল , ইস্ট্রোজেন , বৃন্তহীন তুলসী পাতা আর সাদা খই ছড়িয়ে চলি
পথিকেরা অসদবিম্ব , ফুটে ওঠে কলমি ডগায়

Content Protection by DMCA.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here