রাখেনিকেউ খোঁজ
নাসরীণ রীণা
আমার উঠোনের শুকনো ধান বৃষ্টিতে ভিজলো
রাখলো না কেউ খোঁজ,
আমার উপোসের পেট চিৎকার করলো বারে বারে
কেউ দিল না ভোজ।
আমার শিথানের বালিশের তুলো ঝরিলো
খোঁজ রাখেনিতো কেউ,
আমার একখানি বসনে চিড় ধরিলো
দেখলো না প্রতিবেশী বউ।
আমার ছেড়া কাঁথাখানি শতছিন্ন হইলো
শীত নিবারিব কিসে?
আমার নুন-মরিচে মাখানো ভাতে
নোনাজল যায় মিশে।
আমার গোয়ালের ধবল গাভিটা যে বড্ড
রুগ্ন হয়েছে আজ,
দিশেহারা আমি গিয়েছি সবার দ্বারে
আসেনি ফেলে কাজ।
মাত্র একখানি হাঁড়ির তলা ফুটো হলো
বসাতে পারিনা চাল,
রন্ধন শেষে একটু ধার দেবে গো?
দিয়েছে চাচী গাল।
জ্বরে কাঁপে ছেলে,মুখে প্রলাপ তার
মাগো,একটু মাছ খেতে দিবি?
দেখেছে সেদিন ঝোল রেঁধেছে মাছের
পাশের ঘরের ভাবি।
গা পোড়ে ছেলের,মন পোড়ে মা’র
ঘরে নেই কানাকড়ি,
বিনা চিকিৎসায় ছেলেকে হারালে
দেবো যে গলায় দড়ি !
~~~~~~
কিভাবে হেসেছি, কি কথা কয়েছি
তারই খবর রোজ রোজ,
দূর্দশায় পড়িয়া ঠেকেছি পদে পদে
যদিও না রাখে খোঁজ।
আজ বেণী কি পিঠে ঝুলেছে?
নাকি খোলা এলো চুল,
খবর রেখেছে প্রতি ক্ষণে ক্ষণে
করেছি কি কিছু ভুল।
ক’খানি চুল খোলা ছিল,আর
ক’খানি হয়েছে বাঁধা,
কি কারণে আজ হেসেছি কতক
কেনইবা হয়েছে কাঁদা।
চোরের মায়ের হাসা আর কাঁদা
দোষ হয় দুটোতেই,
এসব দোষের খোঁজ নিচ্ছে সকলে
নিজ নিজ দায়িত্বেই।
যখন আমার সুসময় ছিল
ছিল মাছিদের আনাগোনা,
ছিটানো ভাতে কাকেদের সংখ্যাটা
ছিল যে মোর অজানা।
গাছের ফলে,পুকুরের মাছে
উঠোন ভরিত যখন,
চারপাশে মোর কত মুখ ভিড়িতো
কত কত আপনজন।