না
খাতুনে জান্নাত
কখনো ভালোবাসার কথা বলো না
একালে মানুষ প্রেম বেচে যত্রতত্র
বানিজ্য বাজারে থরে থরে ঝুলে প্রেমফল
নতুন আনন্দ খুঁজতে স্বামীরা পালিয়ে যায়
নিরাপদ দূরত্বে থাকে প্রেমিক
আর আড়াল টেনে দিয়ে বাঁচে সুহৃদ
বরং যুদ্ধাবস্থার কথা বলো
জীবনের পাড় ধ্বসে কেউ কেউ
নিজস্ব আন্তর্জাতিক ইগো সুসংঘটিত করে
সুস্থির বাজার এখন ফনীর মতোই ঊর্ধ্বমুখী চক্র.
আগুন আগুন
দরদাম করার সময় নিঃশেষিত
বেকারত্বের অভিশাপ নিয়ে থুবড়ে পড়ছে
ক্ষুদ্র চাকরিজীবী ও ব্যাবসায়ী
আলো জ্বালাতে গিয়ে আলোর সাথীরা অন্তঃনিহিত আঁধারে ডুবে আছে
গুটি খুঁজছে কোকনকাল
আঙুলে ঘাসের ঘ্রাণ মুছছে
জলজ অধিকার কেড়ে নিচ্ছে
আর কে তুমি এসেছো ভোটের আকুতি নিয়ে
ওসব ভুলতে বসেছে নতুন
এখন ফিরে যাওয়া আধিম অনৈক্যে
এখন গুটিয়ে নেয়া পাল
এখন গুহার বিবহ্বরে চলো চিত্র আঁকি…
কষ্ট ভাগাভাগি হোক
রাতের নির্জনতা কেঁপে ওঠা কান্নার ধ্বনি
শৈবাল রঙে রাঙানো দিনের হঠাৎ পিছলে পড়া
পাতিহাঁসের পেছনে ছুটতে থাকা কৈশোর থমকে গিয়ে জড়িয়ে ধরে সুপারি-বৃক্ষ
সরল কুয়াশা অশ্রুর মতো ঝরে
সন্ধ্যার ধোঁয়াশায় মেখে থাকা কিছু মায়া ঘুমের কথা বলে।
পতনের নিরোধবটিকা খেয়ে
এসো নবাগত দুঃখ জড়িয়ে ঘুমিয়ে পড়ি
এখন ভালোবাসার কথা বলো না
হৃদয় এক অন্ধকার জলাশয়…
আমার মা
খাতুনে জান্নাত
আমার মায়ের মধ্যে প্রচণ্ড সাহস ছিল।
আঙুলগুলোকে সচল করে আমাদের গতিময় করে তুলতেন অনায়াসে
আমরা নকশি ফুল, আমরা ঝাড়বাতি, আমরা হাত-পাখায় বন্ধুর পত্র-লিখন।
ভোরের বাগানে রেণু-ফুল-ঘ্রাণ
ছুটছি, দৌড়াচ্ছি কাজের স্রোত…
মা ভালোবাসতেন বই
গল্পে গল্পে হারাতাম–
রামায়ন, মহাভারত, কসসুল আম্বিয়া
গাজী কালু চম্পাবতী
শরৎ-ফাল্গুনী বিকাল
রাত নিঝঝুম রেডিও নাটক…
মায়ের মধ্যে গুঁড়োগুঁড়ো স্বপ্ন ছিল
শুদ্ধ উচ্চারণে আমার বর্ণমালা
কবিতা গানে মুখরিত প্রাণোচ্ছ্বাস
গ্রাম পেরিয়ে শহরের সিঁড়ি
দেশ পেরিয়ে মহাবিশ্ব;
মা তখন গর্বিত বঙ্গ জননী…
মায়ের মধ্যে আগুনও ছিল।
তাই তো পুড়ছি ভেদ, ক্লেদ, দ্বিধা, শিকল।
সমতার ভিতে জীবন গড়তে
সংগ্রাম চলবেই চলবে…
দারুন !
অসাধারণ লাগল দুটো কবিতাই ।