“নিবন্ত আগুনের আঁচ”
রীতা ধর
নাড়া পোড়া মাঠ, শীতের শেষ বিকেল
ধোঁয়াশা প্রান্তর জুড়ে স্বর্ণ রথের
গোধূলি আকাশ,
দ্বাদশ কুমারী উচাটন অবয়ব মেলে দিল অম্বরের গভীর বিষাদে।
নিবিড় কুয়াশার অবিরল ঝিরিঝিরি হাওয়ায়
দিনান্তের ভাঁজে ভাঁজে তার নিগূঢ় অশ্রুপাত।
নক্ষত্রের আলোয় নেমে আসে সন্ধ্যা
নিরুপম অন্ধকার, জোনাকির শব্দ,
স্তব্ধ রাতের শরীর সমর্পিত মেঘের শিয়রে।
তবুও অবেলার কোন বেভুল বেলায়,
নিশিগন্ধার মাতাল মহুয়া ছোঁয়ায়
তুমি আসবে,বলে গেলো নীড়ে ফেরা
পরিযায়ীর নীলকান্ত দু’টি চোখ,
যে চোখে আঁকা ছবি তোমার প্রতিচ্ছায়া।
হিমায়িত প্লাবনে জোছনায় ঝরে পড়া
হলুদ পত্র পল্লবে প্রহরে প্রহরে
তারও দু’টি চোখ নিঃসৃত করেছে
ধীরে ধীরে,নিবন্ত আগুনের আঁচে
নিয়তির অক্ষয় মন্দিরে।
প্রতিক্ষার অশেষ প্রহর নিঃশব্দে ভাঙ্গে
বক্ষপট, অসহায় অনুযোগ নতশিরে
মিলায় দহিত চন্দন হাওয়ায়।
অবহেলার স্তিমিত অঙ্গারে নিঃশেষ
হতে হতে ঝলসিত হৃদপিণ্ড বুকে
তোমার চরণ ধোয়ায় গঙ্গার জলে,
একান্ত প্রার্থনা ছিল তার, মা গঙ্গার কাছে
তোমার দু’টি চোখ অক্ষয় থাকুক
পবিত্র ধরণী তলে।