“এক টুকরো হিমছোঁয়া ”ফাল্গুনের সেরা থেকে বিমূর্ত সময়ের মোমবাতি কবিতা । লিখেছেন শুভচিন্তার কলমযোদ্ধা-জীনাত লীনা।

597
শুভচিন্তার কলমযোদ্ধা-জীনাত লীনা

এক টুকরো হিমছোঁয়া

                     জীনাত লীনা

এক টুকরো হিমছোঁয়ার তীব্রতা
কিভাবে মেলে ধরি বলো?
আকস্মিকতার এক আস্ত পামির মালভূমি মাথা উঁচু করে সামনে দাঁড়ায়, অথচ
তীব্রতার বেগ ঠেলেঠুলে ঠিক বেরিয়ে আসে।
এই ছোঁয়া অনুভবে
মস্তিষ্কের ঘড়ি স্টপ হয়ে যায় নিমিষে।

আমার দৃষ্টি হয়ে যায় পাথর,কেউ তাকালে
ভঙ্গুর সে টুকরো হবে ঠিক জেনো
অশ্রু যেন কাঞ্চনজঙ্ঘা।জিহ্বা
দাসপ্রথা আমলের এক আমীরের কেনা অবাধ্য দাসের পিঠমোড়া বাঁধন যেনো।

ঠোঁট সিলগালা হয়ে যায়,কর্ণকুহর যেনো না বলা, না শোনা অন্ধ বধির।
হাত পা এক উনিশ বছরের জীর্ণ প্যারালাইজড রুগী।
চামড়ার জেল্লা উবে যায় অজানায়।

একটুকরো হিমছোঁয়া এতোটাই মিশ্র
কখনো দুর্ধর্ষ, ভয়ঙ্কর ,বেপরোয়া
আমার হৃদয় ছিঁড়ে ছিঁড়ে খায়,ছোপ ছোপ রক্ত ঝরায়।
ক্ষত হয়,কষ্টের পোকা কিলবিলায়।
এক পাওয়ারফুল তরিৎ
প্রাণকে পুড়িয়ে নিষ্প্রাণ, ভষ্ম করে দেয়।
কখনো বা আবেগী
যেনো রাশি রাশি আবির লেপ্টে আছে আমার শ্যামবর্ণ
অবয়বের ডান গালে। বসুধায় আছে কি এমন কাপড় ?
ক্লিনজিং ?
প্রয়োগে মুছে যাবে?
এক টুকরো হিমছোঁয়া এ তো খোদাই করা আল্পনা,
মরণ অব্দি থেকে যাবে কপোলে নিশ্চিত
মৃতের সাথে মৃতের যদি কাটাকাটি হয় একদিন।

জেনে রেখো পৃথিবী
এ কোন জওয়ানের অনুমতিহীন ছোঁয়া নয়
এ কোন ধর্ষকের লাম্পট্যের ছোঁয়া নয়
এ কোন প্রেমিকের মৌ মৌ ছোঁয়া নয়
এ কোন স্বামীর উষ্ণ ছোঁয়া নয়।

এই হিমছোঁয়া আমার মৃত বাবার ঠান্ডা গাল
আমার গালে আষ্টেপিষ্টে লেগে থাকার,

সে ছোঁয়া আমার বাবার ঠান্ডা কপাল
আমার কপোলে লেগে থাকার,

সে ছোঁয়া আমার বাবার ঠান্ডা পা
আমার ঠোঁটে লেগে থাকার।

Content Protection by DMCA.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here