আর্তনাদ
সাহানা
মা”গো ও মা,
বড় কষ্ট মৃত্যু যন্ত্রণা,
তোমারও কি হয়েছিলো
আমার জন্মকালে
এমন প্রসব বেদনা?
সেদিন যদি শুনতে মাগো
আমার চিৎকার,
সমস্ত পৃথিবী নিজ হাতে
করে দিতে চুরমার।
এত তাড়াতাড়ি আমার তো
চলে যাওয়ার কথা ছিলো না,
মানুষরূপী পশুদের কেন
এত আনাগোনা?
চিনবো কেমন করে বলো
তাদেরও তো সৃষ্টি কর্তা
নাক,মুখ, চোখ সবই দিলো?
কত সুন্দর করে ধরনী
মোদের বানালো বিধাতা!
তার কিছুই তো হলো না
আমার দেখা।
ও মা ক’ও না কেন কিছু,
রাগ করেছো মাগো,
তাই আমায় আর
ডাকছো না পিছু পিছু?
জানো মা,এখানে
আমার মতো অনেকেই আছে।
সবাই বলে, “এ্যাই ছোট খুকি,
তোর এখানে কি?
তোরা,আয় তো সবাই দেখি,
তোর তো এখানে থাকার কথা না।
তোরে ও ছাড়লো না
নর পিশাচ হিংস্র হায়েনা?”
আমি আর কি?
তিন মাসের শিশু,শত বর্ষীয়ান
কেউ ছাড় পায়নি, অগ্রসিত
লোলুপ দৃষ্টিতে লেলিহান।
কি আর বলবো বলো, মা,
বলেছি, “এর জবাব দিবে বিধাতা।”
ঠিক বলেছি না মাগো?
ওমা, আঁচল দিয়ে
মুখটি কেন ঢাকো?
আরো জানো মাগো,
এখানে মোরা খেলি অহরহ
কোন বাঁধাতো নেই আর,
কেউ কেড়ে নিতে পারবে না
কঁচি প্রাণ টা আমার।
শুনেছি মানুষ মরে একবার,
আমি মরেছি তিনবার।
প্রথম মরন হলো যখন
বস্ত্র করলো হরণ,
অপমান (ধর্ষণ)আর অসহ্য যন্ত্রণায়
হলো দ্বিতীয় মরন,
ধর্ষণ শেষে গলায় দড়ি বেঁধে
হলো শেষবারের মরন।
মা তোমার কাছে একটাই দাবী
আর যেন কোন সায়মার
হয়না এমন পরিনতি।
ধর্ষকের কি শাস্তি
আমার নেই জানা,
ধর্ষকরেও দিও মাগো
তিনবার মৃত্যুর পরোয়ানা।
আরো বলি চুপিচুপি
আমি নেই তাতে কি
শেষ বিচারের দিনেও
নেই ওদের নিস্তার,
এটা আমার কথা নয়,মাগো
স্বয়ং বিধাতার।
সৃষ্টির বিনাশ করবে যে নিজ হাতে,
বিধাতার আরশ নিশ্চয়ই কেঁপে উঠবে।।
ধরনী হবে উত্তাল,প্রলয় নামবে,
বাজবে ঢংকা,যুদ্ধের দামামা
যুগে যুগে নারী জাতিরে
যখনই করেছে অপমান,
ইতিহাস সাক্ষী, তখনই
ধরনীর বুকে নেমে এসেছে অকল্যাণ।
আসুন আমরা যার যার অবস্থান থেকে প্রতিবাদের ঝড় তুলি।
সময়ের আলোচিত ঘটনার অসাধারণ কাব্য রূপ ।।