ভারত থেকে সভ্যতার অন্যতম লেখক-নীলিমা দাশগুপ্ত এর৩টি ভিন্নধর্মী অনুগল্প

519
নীলিমা দাশগুপ্ত এর ৩টি ভিন্নধর্মী অনুগল্প

নীলিমা দাশগুপ্ত এর ৩টি অনুগল্প “জীবন ধারায়”“নদীর তীরে”“’ভয়”


। জীবন ধারায়


জীবন ধারায় মন শুকিয়ে আসে তখন করুণা ধারায় এসো। জীবন যুদ্ধে মরে বাঁচতে চাওয়া
মৃত্যুকে আলিঙ্গন করে থাকার ঝাউবনে পাতা কুড়ানোর সমো।
জন্ম হলে মরে মানুষ বার বার,
জীবন যুদ্ধে হেরে। জীবন থেকে নেওয়া শিক্ষা ভরিয়ে দেয় আশেপাশে। তাঁদের ভালোবেসে ভুলে ভরে গেছে ডাইরির পাতা,
অ়ংক কোন ভাবেই মিলতে চায়না।কে ভালো কে মন্দ বুঝতে পারেনা কেঁউ, খাতায় সাদা পৃষ্ঠা ভরিয়ে দেয়না কেঁউ।কলমের কালি শুকিয়ে গেছে ডাইরির পাতা শুন্য, করুণাধায় প্রভু করো পরিপূর্ণ। যেখানে ধর্ম সেখানে জয়,এই কথা যদি সত্যি হয়। জীবন আগুনে পুড়ে একাকিত্ব সাথী করে চলতে হয়, হয়তো আসবে নতুন সূর্য নতুন ভোর চলবে সাবেক জীবন নবছন্দে।


২। নদীর তীরে


বেলা বয়ে যাওয়া হেমন্ত সন্ধ্যায় মনু নদীর তীরে জলের কলকলিয়ে চলা,পড়ন্ত সূর্যের আলো নদীর বুকে আছড়ে পড়ছে।মন কেমন করে উঠে একাকী দাঁড়িয়ে প্রকৃতির কোলে নিজেকে হারিয়ে ফেলার মুহূর্ত। নীরবে নিভৃতে আমার আমিত্বে স্বপ্নের জাল বুনে সন্ধ্যাকালীন আগমনে মুখরিত জীবনকে প্রশ্ন কি পেলাম কি হারালাম! ফেলে আসা স্মৃতিগুলো চোখের সামনে ভেসে ওঠে নিজের অজান্তে।মন চলেযায় সেই সূদূর দিগন্তে। কিছুটা সময় প্রকৃতির কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়ার আকুতি। নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে ভাবছি তুমি এই নদীর তীরের পথ ধরে আর ফিরে আসবেনা।সবাই আসছে নদীর এই ছোট্ট পথটি ধরে। পলকহীন দৃষ্টি তাকিয়ে আছি চেনা সেই নদীর পথ পানের দিকে চেয়ে। ফেলে আসা সেই দিনগুলোর কথা মনে এসে ভীড় করে, মনকে ক্ষতবিক্ষত করে ভেঙে খানখান করে দিচ্ছে। জানি তুমি আর আসবেনা তবুও তোমাকে দেখার ইচ্ছায় মন কাঁদে। নদী একা বয়ে যায় আমিও দাঁড়িয়ে একা ভাঙচুরে মন নিয়ে। সারাদিনের ক্লান্ত পাখীদের দল ফিরে যেতে ব্যস্ত নিজেদের ঠিকানায়। আমার ফেরার কোন তাগিদ নেই মনে কোথায় যাব কি করব এখানেই প্রকৃতির বিছানো চাদরে খুব ভালোই আছি।একটু পরে নীল আকাশ আলোয় ভরে উঠবে চাঁদের আলোয়। দাঁড়িয়ে থাকবো আকাশ পানে চেয়ে ভেজা চোখ নিয়ে একান্তই।

৩। ভয়


মনে যখন পারিপার্শ্বিক চাপে ভয় দানা বাঁধে।অধের্য্য হয়ে উঠে মন। জীবনের হাসি আনন্দ বিলীন হয়ে যায়, তখনই সবাই এ দিকে ও দিকে ছুটতে শুরু করে দেয়।প্রতিকার পাওয়ার আশায়। কতটুকু সফল হবে নিজেরাও ভুলে যায়।এখন গোটা বিশ্বে তথা ভারতবর্ষেও চলছে মৃত্যুর হাতছানি। অনেক লোক মারা যাচ্ছে। আক্রান্ত আছে অনেক জন। ক্রমশই আক্রান্ত সংখ্যা বেড়ে চলেছে। প্রতিষেধক খুঁজছে সবাই।নিয়ম নিষ্ঠা করেও প্রাণ বাঁচাতে পারছেনা।এ কেমন অশুভ শক্তি ক্রমশই গ্রাস করছে গোটা বিশ্বে তথা ভারতবর্ষকে।জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি উর্ধ্বে।দেশে বড়ো হাহাকার।ঘরথেকে মানুষ বেরুতে পারছেনা।রুটিন মেনে চলতে হবে, বাঁচতে হবে।জন্মনিলেই ঘরে প্রদীপ জ্বলে, মৃত্যুতেও আগুনে সমাধিতে সব শেষ।অহরহ জীবন একটি শক্তি কাজ কর চলছে।হোক সেটা শুভ কিংবা অশুভ। অশুভকে নষ্ট করতে প্রদীপ জ্বেলে শুভ শক্তির আহ্বান করি। ভারতবর্ষ সব জাতির বাসভূমি।আজ এই সংকটময় সময়ে সবাই মিলে অশুভ শক্তির হাতছানি থেকে নিজের মতো করে প্রদীপ জ্বালাই। মনের আত্মবিশ্বাস অনেক বড়ো ঔষধ।দিশা দেখাতে পারে নতুন কোন শুভ পথের। অন্ধকার রাতে আকাশের তারা যেমন দ্বীপের মতো জ্বলে আলোক ছড়িয়ে পৃথিবীকে আলোকিত করে, ঠিক তেমনি আমরা সবাই মিলে প্রদীপ জ্বালিয়ে অশুভ শক্তির জেহাদ ঘোষণা করি।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here