“অন্য অরুন্ধতীরা”গল্পটি লিখেছেন ওপার বাংলার বিভূতিভূষণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখক ও কবি_সুজাতা দাস।

545
ওপার বাংলার বিভূতিভূষণ স্মৃতি পুরস্কার প্রাপ্ত লেখিকা ও কবি_ সুজাতা দাস।

অন্য অরুন্ধতীরা

                      সুজাতা দাস

একটা খুশি হঠাৎ হাওয়ায় যেন ভেসে এসে, অরুন্ধতীর কানে কানে বলে গেল আসছে আসছে অরু তাকিয়ে দেখ-
হাত বাড়িয়ে দেয় সে সামনের দিকে, তার অনুভব দিয়ে চিনতে চেষ্টা করে আগমনীর আগমনকে-
শরতের নীল আকাশে পেঁজা তুলোর মতো ভেসে বেড়ানো মেঘেরা আর শিউলির গন্ধে চতুর্দিক ম্ ম্—
চেষ্টা করে অনুভবে চিনতে গন্ধ দিয়ে-
কাশের বন হাওয়ায় দুলে আগমনীর বার্তা দিচ্ছে, কাশের দোলায় যেন একটা চেনা সুর খেলে বেরাচ্ছে-
তাকিয়ে থাকলে মনে হয়, এখনি বোধহয় ছুটে বেড়িয়ে আসবে হাত ধরাধরি করে অপু’দূর্গা হঠাৎ ই—
আসলে এটা অনেক ছোট বেলায় দেখা একটা ছবির একটা দৃশ্য, নামটা বোধহয় বলার দরকার পরবে না-
আমার মতো অনেকেরই হয়তো মনে পরে মায়ের আগমনের সাথে সাথে,
এই টুকরো অংশ টুকুর কথা হঠাৎ ই—
আসলে কিছু কিছু স্মৃতির মতো কিছু কিছু দৃশ্যও হঠাৎ করেই মনে পড়ে যায় নিজের অজান্তেই-
একটা ভালোলাগা থাকে ভালোও লাগে,
সেটা অনেক না বুঝতে পারা অরুও কেমন করে যেন বুঝতে শিখে গেছে—
আসলে অনুভূতি আর অনুভব কী ভাবে যেন শিখিয়ে দেয় মানুষকে-
খুশির আবেশে ভেসে বেড়ানোর আনন্দ গুলোতে ভাসতে শেখায় অরুন্ধতীর মতো মানুষকেও-
না বলতে পারা অনেক
ভাষা আবেগ দিয়ে বুঝে নেয় সে—
বাতাসের স্পর্শে সে বোঝে ভালোবাসার কথা-
ফুলের সৌরভে সে বোঝে গন্ধের আভাস, সে তো রঙ বোঝে না কিন্তু বোঝে নরম অনুভূতি-
সে তো পাখি চেনে না কিন্তু চেনে তাদের ভাষা আলাদা করে—
অরুন্ধতী অবুঝ একটা মেয়ে, যে পৃথিবীটাকে না দেখেও নিজের মতো করে চিনে ফেলেছে একটু একটু করে-
রঙ না চিনেও কেমন ভাবে যেন চিনে ফেলেছে ফুলকে,
শুধু মাত্র স্পর্শ আর অনুভব দিয়ে—
বলতে পারে পাখির ডাক শুনেই, কোন পাখিটি ডাকছে-
আসলে একটা ইন্দ্রিয় নষ্ট হলে, বাকি ইন্দ্রিয় গুলো অনেক সজাগ ও সক্রিয় হয়ে ওঠে নিজে থেকেই-
অরুন্ধতীর ক্ষেত্রে সেটাই হয়েছে অনুভূতিরা অনেক সক্রিয় এই মেয়েটির ক্ষেত্রে—
একটা আধারে ভরা জীবনকে সুন্দর ভাবে মানিয়ে নিয়ে আজ সে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্রিয় হয়ে উঠেছে-
এ বছর উচ্চ মাধ্যমিক দিয়েছে ব্লাইন্ড-স্কুল থেকে, আগামীতে তার এগিয়ে যাবার রাস্তা পরিস্কার—-
আসলে ইচ্ছাশক্তি যেটা অরুন্ধতীকে এগিয়ে যেতে সাহায্য করছে-
করছে আগে চলার রাস্তাকে সচল-
নিজের অনুভবকে কাজে লাগিয়ে এগিয়ে চলা এমন অনেক অরুন্ধতী একদিন ঐ দূর আকাশে উজ্বল নক্ষত্র হয়ে জ্বলবে!! কাশের বনের হাওয়ার দোলায় অনুভব করবে মায়ের আগমনী বার্তা,
হারিয়ে যাওয়া অপু’দুগ্গা হঠাৎ করেই হয়তো বেড়িয়ে আসবে কাশের বন থেকে—
অরুন্ধতীরা অনুভব আর অনুভূতি দিয়ে চিনে নেবে সমস্ত ভালোলাগা গুলোকে এমনি করেই—
এগিয়ে চলুক এভাবেই অন্ধকারের অরুন্ধতীরা নিজেদের উজ্বল নক্ষত্র হয়ে জ্বলে উঠতে ঐ বহু দুরের অসীম আকাশে—-
কপিরাইট @1443 সুজাতা

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here