ভারত থেকে সাম্য দর্শনের লেখক-অজন্তা প্রবাহিতা এর অনন্য সৃষ্টি গল্প “মিলি”

441
ভারত থেকে সাম্য দর্শনের লেখক-অজন্তা প্রবাহিতা এর অনন্য সৃষ্টি গল্প “মিলি”

মিলি

অজন্তা প্রবাহিতা

কুনাল ! আজ আকাশের মেজাজ কেমন গো !নিশ্চয়ই সাদা মেঘের দল নীল আকাশে ভেসে বেড়াচ্ছে। আমায় একটু বাইরে নিয়ে যাবে ?দেখবো । হসপিটালের ছাদ আর দেওয়াল দেখে দেখে ভীষণ বোর হয়ে গেছি। কত্ত ক-ও- ত্ত দিন হয়ে গেলো সারাদিন স্যালাইনের বোতল, ওষুধ,ডাক্তার আর নার্সকে দেখে যাচ্ছি । আর ভালো লাগছে ন। এই সবুজ পর্দাটা সরিয়ে দাও,আলো বাতাস সব্বাইকে আমার কেবিনে আসতে দাও।
অনেক দিন ওদের সাথে আমার দেখা হয় নি ।
– calm down মিলি ।এতো রেস্টলেস হয়েও না।
-কুনাল! প্লিজ,আমার দম আটকে আসে । কত দিন ধরে এই একটা কেবিনে আমি বন্দী। পাখীর মতো উড়তে চাই। দু হাতের মুঠোয় আকাশের সব রং ভরে নিতে চাই । কি হয়েছে আমার ?কেন আমি এ বন্দিদশায় ?
– কিচ্ছু হয় নি তোমার,মিলি । মাস খানেক ধরে জ্বরটা কিছুতেই কমছিল না,তাই তোমায় এডমিট করা হয়েছে ।
কুনাল কেবিনের বাইরে চলে এলো। কি করে ওকে বলবে,লিউকোমিয়া থার্ড স্টেজ ।কোনোরকম চিকিৎসা কাজে আসছে না । হঠাৎ করেই এই রোগ ধরা পড়েছে ।
বৈশাখ মাস। সকাল থেকেই রোদের তাপ বেশ চড়া। সবে আমের বোল ফুটে ছোট্ট ছোট্ট আম হতে শুরু করেছে । ভোর হতে না হতেই কোকিলের ডাকে মুখরিত চারিদিক। সেই ডাক শুনে মিলি বলে,”এই কুনাল ! ওই শোনো, কোকিল ডাকছে। এই ডাক নিয়ে শান্তি মাসি কি সুন্দর একটা গল্প বলেছিল। ”
-তাই ! বলো তাহলে ।
অনেক দিন আগে উত্তরপ্রদেশের এক গ্রামে রামলাল আর গীতা তাদের ছেলে বাবুকে নিয়ে থাকতো ।ক্ষেতে কাজ করতে গিয়ে সাপের কামড়ে রামলাল মারা যায় ।ছোট্ট বাবুকে নিয়ে গীতা এক্কেবারে একা হয়ে পড়ে। ধীরে ধীরে নিজের জীবনকে গুছিয়ে নিতে চেষ্টা কর। ধান ভাঙার কাজ নেয় । কোনো রকমে দিনে আনে দিনে খায়। এই ভাবেই দিন যায়। হটাৎ একদিন দরজায় কড়া নাড়ার আওয়াজ শুনে ছোট্ট বাবু গিয়ে দেখে আগন্তুক । সে আর কেউ নয়, ওর বাবা | অবাক হয়ে ভাবে , এটা কি করে সম্ভব |
-“বাবু, মা কে ডেকে দে তো “| দরজায় দাঁড়িয়ে থাকা বাবা বলে ।
উর্দ্ধশ্বাসে বাবু ঘরের ভেতরে দৌড়ে গিয়ে বলে,”মা, বাবা ফিরে এসেছে, শিগগির এসো “।
বিরক্ত হয়ে গীতা বলে,’কি বলছিস, বাবা তো ওই আকাশের তারা হয়ে গিয়েছে,কী ভাবে ফিরে আসবে ?”
ছোট্ট মাথায় কিছুই ঢোকে না। তাই, দৌড়ে গিয়ে বাবাকে খবর দেয়, মা ব্যস্ত,একটু পরে আসবে |হাতের কাজ শেষ করে গীতা কৌতূহলী মন নিয়ে সদর দরজায় গিয়ে দেখে সেখানে কেউ নেই ।শুধু একজোড়া খড়ম পড়ে আছে ।খড়ম দেখে চিনতে পারে তার স্বামীই এসেছিলো ।তখন কেঁদে আকুল হয়ে স্বামীকে ফিরে পাবার জন্য ঠাকুরের কাছে প্রার্থনা করে ।গীতার প্রার্থনা মঞ্জুর হয় । ও কোকিল হয়ে যায়। যখন,আম গাছে মুকুল আসে,পাতার আড়ালে লুকিয়ে পিউ কাঁহা,পিউ কাঁহা বলে স্বামীকে ডাক দিয়ে যায় ।ওই ছোট্ট বাবু ‘ফুদকি'(sunbird) পাখি হয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে সর্বদা মায়ের আশেপাশে ঘুরে বেড়ায়|
-বাহ্ ! শান্তি মাসি তোমায় অনেক গল্প বলে বুঝি।
– হ্যা।
-ওষুধটা খেয়ে নাও, সোনা।
ওষুধ খেয়েই মিলি বায়না করতে শুরু করলো,”সমুদ্রের গল্প বলো”।
-সমুদ্র বিশাল ও অক্লান্ত। প্রতি মুহূর্তে সমুদ্রের জলরাশি ঢেউ হয়ে আছড়ে পড়ে কিনারায়। যেন, তটের বালুকণার সাথে মিলেমিশে এক হয়ে যাবার আকুতি তার মনে। কিন্তু, তট তাকে ফিরিয়ে দেয় বারেবারে।
কেন যে এমন হয়,আজও বুঝি না। কিন্তু ,যুগযুগ ধরে ঢেউ চেষ্টা করেই চলেছে, কোনোভাবেই হার মানে না ।হয়তো একদিন ওরা এক হয়ে যাবে।
-আমিও হার মানবো না। বাড়ি যাবো।তোমার সাথে থাকবো!
কুনাল দুই হাতে মিলির হাতটা ধরে বলে, “আমিও তাই চাই ।”
-সত্যি বলছো, কুনাল ?তোমার সাথে আবার পূর্ণিমার রাতে সিমলার পাহাড়ি আঁকাবাঁকা রাস্তায় হাঁটতে চাই। সাথে থাকবে আমার প্রিয় বন্ধু চাঁদ। মাঝে মাঝে পাইন গাছের আড়াল থেকে উঁকি দিয়ে তোমায় আমায় দেখবে আর চুপটি করে হাসবে।
কথা গুলো শুনে কুনালের চোখ ঝাপসা হয়ে উঠলো। মনে মনে বললো,তাই যেন হয় ।
“এবার চোখ বোজো মিলি ।আমিও রেস্ট করবো,অফিসের কাজও শেষ করার আছে |”
– উফফ! শুধু শাসন ! চলো না,কোথাও পালিয়ে যাই ।কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা,এই বলে ।
-mad
– কুনাল! তুমি যখন থাকো না আমার পাশে, কী মনে হয় জানো ?করুন দৃষ্টিতে মিলি কুনালের দিকে তাকিয়ে ওর হাত দুটো চেপে ধরা গলায় বলে,
I cannot think anything else you. I can feel your warm breath on my face, I can feel the softness of your lips with closed eyes. I know the truth why I came on the earth, I want to be with you, at least for a night,. Want to survive in your arms. Don’t allow me to go. Please hold me tightly, I am afraid to close my eyes, I don’t want to depart from you…..hold me, Kunal…don’t allow me go……K….u…n….nal..

আস্তে আস্তে ওষুধের নেশায় ঘুমিয়ে পড়লো মিলি।কুনাল মিলির ঘুমন্ত চেহারা থেকে চোখ ফেরাতে পারে না।পাশের জানলার ফাঁক দিয়ে মিলির প্রিয় চাঁদের আলো আর ওষুধের গন্ধে ভরে থাকা ঘরে মিলির নিষ্পাপ মুখটা দেখে একটাই কথা মনে হয়েছে. …”If I had to live my life without you near me, the days will be empty, the nights will be long, I can’t see the moon without you, I can’t say bye to radiant sunset,…I can’t dream without you. I breathe for you, my eyes want to see you, joyful. I will be there for you till I bye .
ওই দূর আকাশের চাঁদ কুণালের এই দৃঢ় প্রতিশ্রুতির সাক্ষী হয়ে রইলো |

©অজন্তাপ্রবাহিতা

Content Protection by DMCA.com

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here