অভিমান
নাসরিন জাহান মাধুরী
গল্পের বইয়ে বুদ হয়ে আছে রূপা। মা বারবার ডাকছেন রূপা ওঠ, মাকে একটু হেল্প কর, ওঠে নিজের বিছানাটা অন্তত গুছিয়ে রাখ। এখন না শিখলে কখন শিখবি? যাবিতো পরের ঘরে, তখন ঠিকই করবি সব, এখন মাকে পাত্তা দিচ্ছিস না।
শুনে রূপা লাফ দিয়ে ওঠে, মায়ের সাথে ঝগড়া বাঁধায়, মা তুমি এমন কর কেনো, বইটা পড়ছিলাম! গজগজ করতে করতে রূপা বিছানা গুছিয়ে নেয়।
মায়ের চোখ এড়ায়না রূপার রাগ। মা কাছে এসে বলেন, এই গজগজ করছিস কেন? এক থাপ্পড় দেবো , বলেই কষিয়ে এক চড় মেয়ের মুখে, রূপা কিংকর্তব্যবিমূঢ়। মা ওকে চড় দিলো। বুক ফেটে কান্না আসে তার। সারাদিন আর মায়ের সাথে কথা বলে নি। কিছু মুখেও দেয়নি। চুপ করে দেয়ালের দিকে মুখ ফিরিয়ে শুয়েই কাটিয়ে দিলো সারাবেলা। কখন ঘুমিয়ে পড়লো টের পায়নি।
হঠাৎ একটা স্পর্শে ওর ঘুম ভেংগে গেলো। কিন্তু চোখ খুললো না। অনুভব করছিলো ওর মায়ের নরম হাতের স্পর্শ। ওর মায়ের গন্ধটা ও নিচ্ছিলো প্রাণ ভরে।সব রাগ ধুয়ে পানি হয়ে গেলো। মাকে বুঝতে দিলো না কিছুই।
মা ডাকছেন রূপা ওঠে খেয়ে নে মা। রূপা ওঠে মায়ের সাথে কথা বলে না। অভিমানটা রয়েই গেছে। খাবার টেবিলে বসে খেয়ে নেয় চুপচাপ।
এখন রূপা সংসারী। কত কিছু করতে হয় ব্যস্ত হাতে। এখন তার রাগ অভিমান কেউ বোঝার নেই। অভিমান করেও না কারো সাথে, অভিমান মানুষ তার সাথেই করে যে অভিমানের মূল্য দেয়।
মায়ের হাতের স্পর্শটা খুব অনুভব করে তখন রূপা।