সাহিত্যের অন্যতম সারথি – আবির হাসান সায়েম এর গল্প “আলগোছে ”

410
সাহিত্যের অন্যতম সারথি - আবির হাসান সায়েম এর গল্প “আলগোছে ”

আলগোছে

       আবির হাসান সায়েম

ঠান্ডা বাতাস বইছে। হাওয়াকে চিরে ট্রেন চলছে খুব বেগে।আকাশ অন্ধকার যেকোনো সময় বৃষ্টি নামবে। ট্রেনের কামড়াটা আলোর অভাবে অন্ধকার। দিনের বেলা তাই বোধহয় কামড়ার আলো জ্বালানো হয় নি। জানালার পাশের মুখোমুখি রাখা দুটু সিংগেল সিটে বসে আছে মীরা ও হাবীব। বাতাসে, মীরার আলগোছে’র চুলগুলো উড়ছে। হাবীব মুগ্ধ চোখে চেয়ে আছে। মীরা হঠাৎ জানলা থেকে চোখ সড়িয়ে হাবীবের দিকে তাকিয়ে বলল,
“এভাবে তাকিয়ে আছেন কেনো?”
হাবীব চোখ নামিয়ে বলল,
“না এমনেই । ”
“আপনার নাম কি?”
” আমার নাম হাবীব। “
মীরা আবার জানালার দিকে তাকিয়ে কঠিন গলায় বলল,
“হাবীব সাহেব, বেশি দেখতে ইচ্ছে করলে আড় চোখে দেখবেন। এভাবে ভেবলার মতো তাকিয়ে থাকবে না, খুব অস্বস্তি বোধ হয়।”
হাবীব মাথা নীচু করেই রইলো কিছু বলল না।
কিছুক্ষণ পর মীরাই আবার জিজ্ঞেস করল,
” সিলেটে কি ঘুরতে যাচ্ছেন? ”
” হ্যা। ”
“কি করেন আপনি? “
“মেডিকেল কলেজে পড়ি৷ “
“আপনি? “
” ল’ নিয়ে পড়ছি। আমার নাম মীরা, আপনার সাথে এভাবে কথা বলাটা ঠিক হয় নি, আমি লজ্জিত। ”
মীরা হাত মিলানোর জন্য হাত বাড়িয়ে দিলো। হাবীব হাত মিলালো।
সে ট্রেন আর সে হাত গত বারো বছর ধরে চলছে। পৃথিবী কতো অদ্ভুত-কোথায় কখন কার সাথে দেখা হয়ে যায় বলা মুশকিল। তাদের ছয় বছরের একটা মেয়ে আছে। জন্মের দিন খুব শিল বৃষ্টি হয়েছিলো তাই আমি মেয়েটার নাম রাখি শিলা। গল্পের মধ্যে এই কথা বলার কোনোই প্রয়োজন ছিলো না কিন্তু জীবনে প্রথম কারো নাম রেখেছি, সেই কথা ব্যাক্ত না করেও থাকতে পারলাম না।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here