সভ্যতার চাদরে ঢাকা মানচিত্র
ফাতেমা ইসরাত রেখা
আমি তাকে ডাকিনি তখন
যখন একাকী প্রহরের নিস্তব্ধ নিরালায়
খুনসুটি হতো সময় এবং প্রয়োজনের
একটু স্বপ্ন দেখার জীবনের গতি প্রবাহে।
সুখ এবং দুঃখের ভেদাভেদ নিরর্থক ছিল বিস্তর ব্যবধানে।
আমি আমার বক্ষের পিঞ্জরে
সুখ কিংবা দুঃখের কোন আসন রাখিনি ,
আশা, নিরাশা কিংবা হতাশা দিয়েছিলাম জলাঞ্জলি
সেই -কবে মনে নেই তার ছিটে ফোটাও।
এমনি করেই প্রহর গুলো যাচ্ছিল বেশ।
ছিল না কারো জন্য অপেক্ষা, ছিল না ব্যগ্রতা ,
ছিল না সময়ের হিসেব নিকেশ ।
আমি তাকে আসতে বলিনি তো
আমি কাউকেই আসতে বলিনি।
তবু সে এলো ধীরে, সন্তর্পণে ।
তার অঙ্গুলি স্পর্শে কেঁপে উঠলো আমার অধর ,
অনুভবে জাগলো সাড়া অদ্ভুত শিহরণে ।
হয়তো তাকে আমি চাইনি,
কিন্তু, বাঁধা দিতেও পারিনি ।
সকল দরজা খুলে, দমকা হাওয়ার মতো সবকিছু এলোমেলো করে
সে আমার হৃদয় ছুঁয়ে ফেললো হৃদয়ের অধিকারে।
আকাশ বাতাস প্রকম্পিত হতে লাগলো ঝড়ো তাণ্ডবে,
তীব্র স্রোতের থরোথরো কম্পনে
হৃদয়ের নোঙর খুলে খুলে যাচ্ছিল বেসামাল হয়ে।
আমার অস্তিত্ব ছিন্ন ভিন্ন হয়ে মিশে যাচ্ছিল
তার অস্তিত্বের সীমানায়।
এভাবেই বিধ্বংসী হাওয়ার এলোমেলো প্রবাহে জীবনের ধারা
পাল্টে গেলো নতুন আঙ্গিকে ।
শব্দহীন, নামহীন এক ভীষণ তৃষ্ণার
অনুভব সারা দেহ মনে ।
এভাবেই কেটে গেলো কিছুটা সময় ।
তারপর, সেই তৃষ্ণার তীব্রতায় হারিয়ে গেলো
সে আবার স্ব-অবস্থানে ।
আমি সভ্যতার চাদরে ঢাকা পড়ে রইলাম
নিঃসঙ্গ, একা বেলাভূমে
স্মৃতির পাতার মানচিত্র হয়ে ।।