“এক বৃত্ত বসন্ত “
রীতা ধর
এখনো পলাশের রঙ রোজ স্বপ্নে আসে
অবসাদের কালঘুমেও স্বপ্ন এখনো
নিয়ে যায় বসন্ত বিলাসে।
অশোকের বনে বনে, কৃষ্ণচূড়ার লালে
স্বপ্ন যেন বাসর জাগা আনন্দে বিভোর,
আমি স্বপ্নের ভিতরে দেখি স্বপ্নের আশা
চোখের মণিতে সাজাই স্বপ্নে বোনা বাসা।
একেকদিন স্বপ্নিল বসন্ত চেপে বসে
বুকের মাঝখানে,
মেঘের পালকে চড়ে হাজারো ধূসর স্বপ্ন জানালার কার্ণিশে মাথা ঠুকে ঠুকে
রেখে যায় রুদ্ধশ্বাস।
তখন জীবন্ত এসে দাঁড়াও তুমি
রক্তাক্ত ক্ষতবিক্ষত বিকৃত মুখে,
অপলক চেয়ে থাকো মুখের উপর।
নিশিগন্ধার মাতাল গন্ধ তখন অঝোরে ঝরে
তোমার আশেপাশে,
আমি বসন্ত,আমি বসন্ত বলে অবিরত
গেয়ে যাও গান…
“আহা আজি এ বসন্তে, এতো ফুল ফোটে,
এতো বাঁশি বাজে”
দু’জনে হারিয়ে যাই বসন্ত বিলাসে।
নিশুতি রাতের থাবায় হঠাৎ যখন ঝরে পরে একটি কুসুম,
নির্যাতিত নিপিড়ীতের নির্লিপ্ত হাহাকারে থমকে যায় আমাদের পথ,
বুকের মাঝখানে চেপে বসে তুমি
হৃদপিণ্ড নিংড়ে বিন্দু বিন্দু নিশ্বাসের
মণিহারে স্বপ্নেই দহিত হও কোন
বধ্যভূমির গলিত স্তম্ভের ভীড়ে।
চোখের ভিতরে জেগে উঠে তোমার চোখ
হাতের তালুতে হাত,
অনন্ত দাবদাহে নিটোল প্রেমিকের যেন স্বেচ্ছায় সন্ন্যাস।
স্বপ্নের ভিতরে আমি জীবন্ত তোমায় পাই
তমালছোঁয়া সুখের নেশায় শেকড় ধরতে চাই।
আমার শেকড় যেখানে বিস্তৃত সেখানে নিদারুণ বাস্তবতা,
হে আমার শাশ্বত বসন্ত, কষ্টের উল্লাসে
স্বপ্ন শিয়রে রাধাচূড়ার বেশে একাকী
বাসন্তী রাই অনন্ত বীরঙ্গনার মতো
সিঁথির আবির ছিটাই অবারিত
সবুজের বুকে এক বৃত্ত বসন্ত লালে।