১-অতীত
বনশ্রী রায় দাস
===========
অবশিষ্ট আলোটুকু খুঁটে নেবে বলে
পৃথিবী-পাখি ডানা ভাসায় অচিননগরে,
সাতসমূদ্র পাতালপুরে নীল স্বপ্নের সাম্রাজ্য
চাঁদের চারপাশে মাছের অভিযাত্রা দেখতে
দেখতে জ্যোৎস্না হলো বাতিওলা, সূর্য স্ট্রিট লাইট।
আজব বাগানে অনাদরে ফোটে কুসুম
গাছ কাটা পড়ে মুহর্মুহু, রক্তের বুকে
মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে উচ্চাকাঙ্ক্ষার অট্টালিকা
মুখ ভার করে থাকে ফসলের মাঠ
শ্রাবণ এলেও বর্ষা আসে না উপশম নিয়ে ।
ঘরে মুখ লুকিয়ে একলা কাঁদে মানুষ, বেহাল
কপালে গভীর ক্ষত, শরীরে স্তুপিকৃত জঞ্জাল ।
————————
২-বর্তমান
বনশ্রী রায় দাস
========
ঘরে ঘরে পাতা খুলে বেদ উপনিষদ শূন্য চশমা
পাখি ডাকা ভোর ফুলের গন্ধ স্বরলিপি,
হাঁক দিয়ে যায় আউলবাউল হাওয়া
হারিয়েছে কোথায় বিলিকাটা চুলের আঙুল
ফুরিয়েছে তাদের যৌথ আলোড়ন ,
বাড়ি গুলো ঝিমোয় যেন কালের বিবর
মধ্যরাতের ধূসর মাস্কে কে করে এতো চুম্বন ?
কার শরীরী সঙ্গমের অজস্র ভাষা আগুনফুল
হয়ে ফুটে ওঠে মণিকর্নিকার ঘাটে ঘাটে ,
চুল্লিতে না শবের পিপাসা জলের দূষণ ঘটায় ।
আজ আর কাকে ধর্মীয় শ্লোক শোনাবে কৃষ্ণ?
ঘাড় কাৎ করলেই বোঝা যায়
কত পিরামিড নক্ষত্র হয়ে ফুটে উঠলো আকাশ পাড়ায় ।
—————————–
৩-ভবিষ্যৎ এপিটাফ
বনশ্রী রায় দাস
অধার্মিক কিছু গেছে গঙ্গা নদীর অশ্রু বিসর্জনে
গাছে গাছে পাখি কাকলি ফুলেরা ভ্রমর ,
আর কেউ বেসুরো গায় না হৃদয়ের গান
সুরগুলি মাটির স্তন ছুঁয়ে, পাতার মর্মে
ঢেউয়ের আকুতি পিছলে গেছে সহস্র দিনরাত
এই প্লট ঘুরিয়ে নেওয়া এখন আমাদের দেশ।
কবিতার গর্ভগৃহে ধর্মসংস্থাপনে কবি,
অম্বার অভিসম্পাতে ভীষ্মদেবের ইচ্ছামৃত্যু ,
কুন্তী মাতার ইশারায় কর্ণের পরাজয়
গান্ধারীর অভিশাপে জলতলে দ্বারকা ।
কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধের পর ও থেকে যায়
স্বভাবসিদ্ধ কিছু বদভ্যাস ….
শেষ দৃশ্য ; ধর্মপুত্র যুধিষ্ঠিরের নরক দর্শন ।