দিগন্ত,
মধ্যরাতে নিস্তব্ধতায় খুব ইচ্ছে করছে তোমার সাথে গল্প করি। ঠিক গল্প নয় পুরনো ডায়েরী থেকে হিসেব নিকেশ একটু মিলিয়ে নেয়া । আচ্ছা হিসেব কি মিলবে!? সব হিসেব তো বহুকাল আগেই চুকিয়ে দিয়েছো।
তোমার ইনবক্স চেক করলাম তুমি ঘুমাচ্ছো। আমি জেগে আছি তোমার স্বপ্নকাহনে। বার বার মন ফিরে দেখতে চাইছে সেই আগের তোমাকে। ভার্সিটি থেকে বেরিয়ে তুমি চাকরিতে জয়েন করলে, এর পর অনেক বছর যোগাযোগ নেই। হঠাৎ ধুমকেতুর মত আমাকে খোঁজে বেরকরলে। আমি যখন জানতে চাইলাম, এত মেয়ে থাকতে আমাকে কেনো ? বললে, আমি নিজেও জানি না, মন বলছিলো তোমাকে খোঁজি। আমি তখন প্রস্তর যুগের স্থবিরতায় ঘর বেঁধেছি । সোকেসে সাজানো এক কাচের পুতুল।
তোমার সেদিনের বলা কথা গুলো আজও কানে বাজে –
প্রায়ই বলতে, “নিজের ভিতর প্রাণ সঞ্চার করো, এই তুমি সেই তুমি নও যে ছিলো অনেক যুবকের ঘুমহারা রাতের স্বপ্নকন্যা। ” একটু একটু করে কাউন্সিলিং করে করে মৃত ভাষ্কর্যে প্রাণ দিলে। তাকে চেনালে রামধণুর সাত রঙ, দেখালে বৃষ্টির প্রিজমে রঙের খেলা। একটু একটু করে জানলাম কি করে মথ গুটি কেটে প্রজাপতি হয়। ক্লান্তিহীন সরাব ঢেলে ঢেলে বুকের জমিনে ফুটালে ঘাস ফুল।ততদিনে মনের বেদিতে দেবতার আসন করে নিয়েছো ।
হঠাৎ একদিন দীর্ঘশ্বাসে পুড়ে গেলো আমার বুকের দুর্বাঘাস। পুজারীর অগ্র ফেলে রেখে তুমি হারিয়ে গেলে। ঠিক যতটা যত্ন করে গড়েছিলে ঠিক ততটাই অনাদরে ফেলে দিলে।
আমি কথা দিয়েছিলাম তোমাকে বিরক্ত করবো না, কখনো করিও নি।
ফলোআপে তোমাকে দেখেছি রিকু দেইনি। ভুলে থাকতে চেষ্টা করেছি, বলতে পারো একরকম ভুলেই গেছি। জীবন এমনি কারো জন্যেই থেমে থাকে না, সে চলে নিজের নিয়মে । তবে তোমার জন্য আমার দ্বার খোলা সেটা তুমি জান্তে, তাই এত বছর পর আবার ফিরে আসতে দিধা করোনি । রিকু এক্সপেক্ট করার মানে এই নয় যে ফিরে পাওয়া। তোমার গড়া এই আমি আজ আর সেই আমি নই। জানোই তো কাদা মাটি পুড়ে পুড়ে শক্ত হয়ে যায়!
আজকাল তোমার সাথে কথা বললে বুকে ভিতরে ভার অনুভুত হয়।জানো সেটা কিসের ভার ? অবহেলা, অনাদর আর অপমানের । আজও তুমি কতটা সহজ, আর আমি বুকের জমিনে একহাটু পানিতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছি। যে পানি ঝরেছিলো তোমার অবহেলায় অনাদরে। ক্ষতটা আজও শোকানি।