শারমিন সিদ্দিকী এর ভিন্ন ধারার ভিন্ন ধর্মী অসাধারন অনুগল্প “নাকফুল”

955
শারমিন সিদ্দিকী এর ভিন্ন ধারার ভিন্ন ধর্মী অসাধারন অনুগল্প “নাকফুল”

নাকফুল

                  শারমিন সিদ্দিকী

বাংলায় একটি প্রবাদ আছে—-
“সাজলে গুজলে নারী
লেপলে পুছলে বাড়ি।”
কথাটি সত্যিই অর্থযুক্ত। এর ভাব সম্প্রসারণও অনেক বড়। যে কোন নারীকেই সাজালে তার সৌন্দর্য অনেক গুণ বৃদ্ধি পায়। আবার একটি বাড়িকে লেপে -পুছে সুন্দর করে গুছালেও ঐ বাড়ির সৌন্দর্য বহুগুণ বৃদ্ধি পায়। তাই নারী ও বাড়ির মধ্যে একটি অন্তর্নিহিত মিল আছে।

নারীর সাজগোজের জন্য অনেক কিছু প্রয়োজন হয়। যেমন – পোশাক প্রসাধনী, অলংকার ইত্যাদি। এই প্রত্যেকটা উপাদানই নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে অপরিহার্য। তন্মধ্যে অলংকার একটি উল্লেখযোগ্য উপাদান। নারীর সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য মাথা থেকে পা পর্যন্ত নানা রকম অলংকার তৈরি করেন কারিগররা। সব রকম অলংকারের মধ্যে সবচেয়ে ছোট ও ক্ষুদ্র অলংকার হচ্ছে নাক’ফুল। যা মুসলিম মেয়েরা বিয়ের আগে পড়ুক আর না পড়ুক, বিয়ের পর একে পরম যত্নে এক নিবিড় নিভৃত ভালোবাসায় নাকে পড়ে থাকে। নাক ফুলকে যেন গভীর ভালোবাসার প্রতীক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। সব অলংকারের সবচেয়ে ছোট আকৃতির অলংকার “নাকফুল” রোমান্টিকতায় ভরপুর। নাকে পড়ার সাথে সাথে এক অসাধারণ অনুভূতি কাজ করে। নাকফুল ভালোবাসার গভীরতা সৃষ্টির এক যাদুর কাঠি স্বরূপ।অনেক সময় ছোট নাকফুল শুভ- অশুভের ইংগিত প্রদান করে।অনেকেই হয়তো বলে এ সবই কুসংস্কার। কিন্তু আমি তা মনে করিনা।
“বিশ্বাসে খোদা মিলে, তর্কে বহুদুর।” নাকফুল ভালবাসার প্রতীক, এটা যদি উপব্ধি করা যায় তাহলে নাকফুল শুভ- অশুভের ইংগিত প্রদান করে এটাও সত্যি।

নাক ফুলের প্রতি আমার একটা বিশেষ দুর্বলতা কাজ করে। সব অলংকার বাদ দিয়ে ঐ নাকফুলটা পড়লেই যেন একজন নারীর শ্রী বৃদ্ধি পায়।
নিখুঁত কারুকাজের নাকফুল এক রোমান্টিক অনুভূতির সৃষ্টি করে।

আমার নাকফুল খুবই পছন্দ। বিশেষ দিনে কিছু পাই আর না পাই তাতে কিছু যায় আসে না। কিন্তু নাকফুল আমার চাই- ই।হরেকরকম নাকফুল। একেকবার একেকটা পড়ি আর আয়নার সামনে গিয়ে দেখি নিজেকে কেমন লাগছে। এমনকি তাকেও দেখাই— দেখতো— কেমন লাগছে আমায়? একটা ছোট্ট নাক ফুলের এতোটা পাওয়ার যে,তাকে নাকে পড়ার পরেই যেন অপলক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে সেই ভালো বাসার মানুষ।

অনেক দিন হলো, নাকফুল খুলে রেখেছি। রোমান্টিকতা বাতাসের সাথে মিশে গেছে। হারিয়ে গেছে সেই অপলক দৃষ্টির ভালোবাসা।

না,কখনো না। ঐ ভালোবাসা তো হারিয়ে যেতে পারে না। ভালোবাসা অমর। তাই আমি আজ আবার সেই ছোট্ট রোমান্টিক নাক ফুলকে আপন করে নাকে জড়ালাম।
তুমি আছো তাকিয়ে
সেই আবেগ মিশ্রিত ভালো বাসা নিয়ে
নাও বুকে জড়িয়ে।
ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সাত পাথরে ঘেরা
সেই নাকফুল যা– রোমান্টিকতায় ভরা।
তুমি আছো নিরবে নিভৃতে,
এই নাকফুলের সাথে।
আমি অনুভব করি তুমি অপলক দৃষ্টিতে,
দেখছো পাশে থেকে ভালোবাসছো গভীর যতনে।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here