আশা
নাসরিন আক্তার
চালের আটার রুটি আর গরুর মাংস দিয়ে সকালের নাস্তা শেষ করে। ঘন লিকার করা দুধ চায়ে চুমুক দিয়েই মনে পড়লো, টেবিলের উপরে রাখা ঔষধগুলো দাঁত বেরকরে হাসছে। নিজের উপর চরম বিরক্তি চলে আসে রহিমা বানুর। কিইবা এমন বয়স! সবে পঁয়ষট্টি এর কাছাকাছি এখনি শরীর ওকে সঙ্গ দিতে চায় না। গাদাগাদা ঔষধ খেতে হয় সকাল বিকাল। আর এতটাই ভুলো মন প্রায় সময়ই ভুলে যায় খেতে। বিড়বিড় করে নিজেকেই একটু বকা দেন রহিমা বানু। আর তখনি হ্যালুসিনেশন হয়, কেউ একজন সামনের চেয়ারটায় বসে বলছে–
-বাঁচার এত শখ কেনো! কি আছে দুনিয়ায়?
রহিমা বানু মুখ বাঁকিয়ে বিড়বিড় করে —
– রঙ্গ -তামাশা আছে দুনিয়ায়।
রঙ্গ -তামাশা আর কত দেখতে ইচ্ছা করে! বিতৃষ্ণা জাগে না?
– না, একদমই না।
এখনো অনেক দেখার বাঁকি আছে
ছেলে বিয়া করামু। নাতি নাতনির মুখ দেখমু।
আয়নার সামনে খাড়ায়া নিজের চোখের নিচে ভাজ দেখমু।
শরীরে চামড়া কুচকানো দেখমু।
লাঠি ভরদিয়া ঠুকঠুক কইরা হাঁটমু।
খুঁকখুঁক কইরা কাশমু।
সবতেরে হাড় জ্বালানি জ্বালায়া পরে মরমু!
জীবনের এহনো অর্ধেকটাই বাকি। আজকের দুনিয়ায় সব কিছু যদি বিনিময় প্রথা হয় তাইলে, আমার স্নেহ, মায়া, ভালোবাসা বিনিময় হইবো না!!