ভারতের বলিষ্ঠ ও জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বাতী মুখার্জির সাথে একান্তে কথা বলেছেন কলমযোদ্ধা- অগ্নিমিতা দাস।

856
ভারতের বলিষ্ঠ ও জনপ্রিয় অভিনেত্রীস্বাতী মুখার্জি র সাথে একান্তে কথা বলেছেন কলমযোদ্ধা- অগ্নিমিতা দাস

অভিনেত্রী স্বাতী মুখার্জির পড়াশোনা শান্তিনিকেতনে তাই গান, নাচ সৃজনশীলতার অভ্যাস উনার ছোট থেকেই। স্কুল জীবনে প্রচুর নাটক করেছেন। পরবর্তীকালে বালিগঞ্জ অন্তর্মুখ নাটকের দলে কাজ করতে করতে কৃষকলি, তিতলি, জড়োয়ার ঝুমকো, আলোছায়া, সুন্দরী, অপু অপরাজিতা, জয়ী , মোহর, কড়িখেলা এবং বিভিন্ন ওয়েব সিরিজে কাজ করার সাথে হামি, ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি, শাহজাহান রেজেন্সি, ভিঞ্চিদা,গুলদস্তা, গুমনামীর মতো ফিল্মে অভিনয় করেন। অভিনেত্রী স্বাতী মুখার্জির সাথে একান্তে কথা বলেছেন লেখিকা অগ্নিমিতা দাস।


অভিনেত্রী স্বাতী মুখার্জীর প্রশ্ন

১. এই লকডাউনে আপনাদের কাজকর্মে কতটা প্রভাব ফেললো?

উঃলকডাউনে বেশ প্রভাব পড়েছে। তবু ও আমরা কাটিয়ে উঠে কাজ করার চেষ্টা করছি। পরিবহন বন্ধ আমাদের শুটিং বন্ধ তাই প্রভাব তো বেশ ভালোই পড়েছে।

২. আপনার পরবর্তী কাজ সম্পর্কে কিছু জানতে চাইবো?

উঃ পরবর্তী কাজ বলতেএই মুহূর্তে ডিরেক্টর অরুন রায়ের ” আট বাই বারো” ফিল্মে একটা ছোট রোল করবো। এছাড়া একটা একদম ইয়ং টিমের সাথে শর্ট ফিল্মে হীরোর মায়ের চরিত্রে কাজ করবো। মুম্বাই প্রোডাকাশনের হিন্দি ওটিপি আছে। তাছাড়া কাজ করবো রাহুল মুখার্জির ” কিশমিশ” ছবিতে। যেখানে দেব মুখ্য চরিত্রে রয়েছে।মুম্বাইয়ের হিন্দি ফিল্ম ” উমা” তে কাজ করছি। নাম ভূমিকায় আছেন কাজল আগরওয়াল, টিনু আনন্দ, হর্ষ ছায়া আরো মুম্বাইয়ের বেশ কিছু অভিনেতা।
এছাড়া যদি আমার শিডিউলের সাথে ক্ল্যাস না করে তাহলে যেভাবে টুকটাক সিরিয়ালে বা অ্যডে অভিনয় করি সেইভাবেই করবো।

৩. আপনার প্রথম প্রেম কে ছিলো?
উঃএটা বলা যাবে না। আমি শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা করেছি , শিক্ষাসত্র এবং পাঠভবনে।তাই আমার প্রথম প্রেম যে ছিল তাকে ওখানকার বন্ধুরা খুব ভালো করে চেনে। আমার প্রথম প্রেম শ্রীনিকেতন আর শান্তিনিকেতনের মধ্যেই ছিল।

৪.অভিনয় জগতে কি সত্যিকারের বন্ধু পাওয়া যায় না এখানে বন্ধুত্ব শব্দটা সেটের মতোই সাজানো মেকি? সহকর্মীরা কি সত্যিকারের বন্ধু হয়?

উঃসত্যিকারে বন্ধু শব্দটার সঠিক মানে আমি সেইভাবে বুঝতে পারলাম না। আমার স্কুলের বন্ধুদের সাথে ও আমার ভালো সম্পর্ক
যদি আমার কঠিন পরিস্থিতি আসে তাহলে পাশে দাঁড়াবে। আমার কলেজের বন্ধুদের সাথে ও বেশ ভালো সম্পর্ক।বেশ কিছু ফেসবুকের বন্ধু আছে যারা আমাকে বেশ সাহায্য করে। কিন্তু অভিনয় জগতে যে ভালো সম্পর্ক হয় , হয় না যে তা নয়। ব্যাতিক্রম নিশ্চয়ই আছে তবে সেটা মনে হয় উঁচু লেভেলে হয় আমি যে লেভেলে কাজ করি সেখানে এসব হয় না। তবে আমার কারোর সাথেই খুব মাখোমাখো সম্পর্ক নেই। আমি যখন কোন কাজের খবর পাই তাদের দিই, তারা ও দেয়। আসলে আমার মনে হয় নিজের মধ্যে যদি পজেটিভ ভাবনা থাকে।যদি জেলাসি , নীচুমনোবৃত্তি না থাকে তবে যে কোন কাজের জগতে মানিয়ে নেওয়া যায়। তবে হ্যাঁ আবার বলছি ব্যাতিক্রম ঘটনা নিশ্চয়ই আছে।

৫. আপনার সবচেয়ে ভালো লাগার মানুষ?
উঃ_আমার ওইভাবে কোন বিশেষ একটা মানুষকে ভালো লাগার মানুষ বলতে পারবো না। আমার বন্ধুবান্ধব বা আশেপাশের সব মানুষের মধ্যেই যে ভালো জিনিসটা আছে সেটাকে আমার ভালো লাগে বা সেটা নিয়ে চলার চেষ্টা করি। বিশেষ কোন ভালো লাগার মানুষ বলতে আমার কে ও নেই।

৬. আপনার সবচেয়ে খারাপ মূহুর্ত?
উঃসবচেয়েখারাপ মূহুর্ত বলতে বোধহয় বোঝায় মৃত্যু। আমার একটা পোষা ল্যাব্রাডর ( সোনিয়া) যখন আমায় ছেড়ে চলে যায়, আমার কাছে সবচেয়ে খারাপ মূহুর্ত।

৭. পাহাড় না সমুদ্র?

উঃঅবশ্যই সমুদ্র। আমি ভীষন সমুদ্র ভালোবাসি।


৮.কোনদিন ও বর্ষার বৃষ্টিতে ভিজেছেন?
উঃপ্রচুর বার ভিজেছি। শান্তিনিকেতনে পড়াশোনা তাই আমাদের গাছের তলায় ক্লাস হতো। ফলে বৃষ্টির সময় এক ক্লাস থেকে আরেক ক্লাসে যেতে যেতে ভিজতাম। অনেক সময় ইচ্ছে করে সাইকেল চালিয়ে চুপড়ি ভেজা হয়ে বাড়ি ফিরতাম। কোলকাতায় আমি রাস্তায় ঘাটে পারতপক্ষে ভেজা পছন্দ করি না। তবে অবশ্যই ( মৃদু হেসে)ফ্ল্যাটের ছাতে ইচ্ছে করলে কাকভেজা হই। এই ছেলেমানুষীগুলো এখন ও আছে।

৯. বিরিয়ানি না পিৎজা?

উঃদুটোই তবে ফার্স্ট প্রায়োরিটি বিরিয়ানি।


১০. প্রিয় মানুষের কাঁধে মাথা রেখে সূর্য ডোবা দেখেছেন?
উঃ_ ( জোরে হেসে)ওরে বাবা রে! এসব কোনদিন করিনি। জীবনে প্রেম বহুবার এসেছে। বহু স্মৃতি আছে, কিন্তু এই টাইপের প্রেম কোনদিন করি নি।
১১. হলিউডের কোন পরিচালকের সাথে কাজ করার ইচ্ছা আছে?
উঃ_আমি এই রকম কোন স্বপ্নই দেখিনা, যা কোনদিন বাস্তবায়িত হবে। স্বপ্ন দেখা ভালো তবে তার ও একটা লিমিট আছে। আমি যে জায়গা থেকে কাজ শুরু করেছি সেখানে এই স্বপ্ন একবারে ধরা ছোঁয়ার বাইরে। তবে আমি কোলকাতার কিছু মানুষের সাথে কাজ করতে চাই। ন্যাশনাল লেভেলে কিছু ডিরেক্টরের সাথে কাজ করতে চাই। দেখা যাক! সময় কথা বলবে।

১২. প্রথম অটোগ্রাফের অনুভূতি?
উঃ_( একটু ভেবে) একবার মনে আছে আমার থিয়েটার গ্রুপ অন্তর্মুখের সাথে নাটক করতে গিয়েছি। জায়গাটা মনে হয় ডায়মন্ড হারবারে , তখন কৃষ্ণকলির শুটিং চলছিলো । আমার এপিসোডগুলো বোধহয় দেখানো হয়েছে। হঠাৎ দেখি দুচারটি মেয়ে এসে আমায় ঘিরে ধরেছিলো। ওরা মনে আছে একটা খাতা ও এগিয়ে দিয়েছিলো। সেখানে আমি সই করেছিলাম। ওদের সাথে সেলফি ও তুলি, তবে এখন তো আর অটোগ্রাফের যুগ নেই। কোথা ও গেলে এখন সবাই একটা সেলফি চায়। আমি ও ভালোবেসে সেলফি তুলি ।

১৩.. প্রেমে ব্যাথা পেয়েছেন?
উঃহম্, পেয়েছি, পেয়েছি, পেয়েছি। বাকিটা ফুলস্টপ।

১৪.অভিনয় করতে গেলে কি কি জিনিষ সবার আগে রপ্ত করতে হয়?

উঃসবার আগে অভিনয়কে ভালোবাসতে হবে। ভালোবেসে কোন কাজ করলে সেটা তখন একটা অন্য মাত্রা নেয়। যেমন কেও যদি রন্ধন পটিয়সীয় হয় তাহলে তেল, নুন মশলার পরিমাণ থেকে কড়াই চাপানো থেকে নামানো অব্দি তাতে ভালোবাসার ছোঁয়া থাকতে বাধ্য। ছোটবেলায় দেখতাম মাকে “বেলা বোসের রান্না”নামে একটা রান্নার বই ফলো করতে পরে টিভিতে ” খানা খাজানা” টাইপের শোয়ে রান্না শেখানো হতো। এখন তো ইউটিউবে কত রান্না শেখা যায় ।তেমনি অভিনয়ে ও কত রকম কোর্স আছে। অফলাইন , অনলাইন। কলকাতায় থাকলে রবীন্দ্র ভারতী থেকে অভিনয় শিক্ষা। বিভিন্ন ভাবে পড়াশোনা করে বা দেখে শিখে নিজেকে আপডেট করা যায়। মোদ্দা কথা সব শিল্পেই ভালোবাসাটা বড় প্রয়োজন।


১৫. রাগ হলে কি করেন?
উঃএকসময় রাগ হলে ভীষন রিয়াক্ট করতাম। এখন বয়স বেড়েছে, রাগ হলে সামলে নিই। থিয়েটারে অভিনয় করতে যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি শিখেছি সেটা হলো ধৈর্য। ওটা অভিনয় জগতে খুব বড় অস্ত্র।

১৬. এই কোভিড পরিস্থিতির পর টলিউড ও বলিউড সম্বন্ধে আপনার ভাবনা?

উঃএই কোভিড পরিস্থিতিতে টলিউড বলিউডের বড়ো পর্দার কাজ পুরো শেষ হয়ে গেছে। কোভিডের আগে হইচই অ্যামাজন প্রাইম এসবের কথা শুনেছিলাম, কিন্তু আমার ফোনে ডাউনলোড ছিলো না। আমি নিজে অভিনেত্রী, সিনেমা দেখতে এত ভালোবাসি। কিন্তু ভালো সিনেমা মানেই ভাবতাম হলে গিয়ে দেখবো। এখন যদি হলগুলো খোলে তাহলে যে হলগুলো আছে সেগুলো ও বন্ধ হয়ে যাবে।
কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে আমার ফোনেই আটটা অ্যাপ ডাউনলোড করেছিলাম। আমার মনে হয় একসময় সিনেমা হলের কোন অস্তিত্বই থাকবে না। ও টি পি র রমরমা থাকবে। কিন্তু যদি সিনেমা হলের কালচার ফিরে আসে তাহলে দুর্দান্ত কিছু মুভি উপহার দিয়ে দর্শকদের টেনে আনতে হবে। আমি ব্যাক্তিগত ভাবে চাই সিনেমা হল ফিরে আসুক।

১৭.অভিনয় করতে করতে নিজের জীবনে কোনদিন অভিনয় করেছেন যেটা শুধু আপনিই জানেন?
উঃ_অভিনয় বোধহয় আমরা সংসারে চলতে গেলে সবাই কম বেশি করি। একটা উদাহরণ দিই,যেমন আমার ছেলে বায়না করেছে বন্ধুদের সাথে কফিশপে যাবে, বাড়ি ফিরতে দেরি হবে। এইসময় আমার হাসব্যান্ড এসে যদি জিজ্ঞেস করে ছেলে কোথায়? তখন আমি নির্বিকার ভাবে বলবো আজকে একস্ট্রা ক্লাস আছে তাই ফিরতে দেরি হবে। সাপ ও মরলো লাঠি ও ভাঙলো না। ওই সময় আমার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ এমন হবে যাতে আমার কথার বিশ্বাসযোগ্য থাকে। এইরকম অভিনয় আমরা বোধহয় সবাই সংসারে করে থাকি।
১৮.থিয়েটারের অভিনয় আর পর্দার অভিনয়ের মধ্যে কি পার্থক্য রয়েছে?

উঃপ্রচুর পার্থক্য রয়েছে। থিয়েটারের লোকের ক্যামেরার সামনে আসতে অসুবিধা হবে আবার ক্যামেরার সামনে কাজ করা মানুষের সরাসরি থিয়েটারে অভিনয় করতে সুবিধা হবে।হেলেন এন্ড হেভেন ডিফারেন্স বাট কেও যদি টেকনিকটা কে ফলো করে তাহলে কোন সমস্যা হয় না। কিছু টেকনিক আছে সেটাকে ধরলে অবশ্যই সব জায়গায় মানিয়ে নিতে অসুবিধা হয় না।

১৯.ভালো অভিনেতা হতে হলে, কোনদিক গুলিকে গুরুত্ব দিয়ে চর্চা করতে হয় বলে আপনার মনে হয়?

উঃপ্রথমেই অভিনকে ভালোবাসতে হবে। জীবনের সবকিছুর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। গানের তাল থেকে নাচ সবকিছু। তাল বা রিদম জানতে হবে। হয়তো অভিনয়ের প্রয়োজনে বির্সজনের সময় নাচতে হবে। সেখানে তোমাকে নাচ সুন্দর করে করতে হবে তালের সাথে। প্রতিদিন যোগব্যায়াম করতে হবে, বডি ফিটনেসের জন্য। এমনকি রান্না পর্যন্ত জানতে হবে। হয়তো সবার হাসি পাবে। ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকেই বলছি আমায় একটা শর্ট ফিল্ম করতে হয়েছিলো ” ডোম” বলে।আমাকে সেখানে ডোমের বৌ হয়ে কাঠের উনুনে কাঠ ধরিয়ে কড়াইতে বেগুন ভাজতে ভাজতে ডায়লগ বলতে হবে। আমি জন্মে ও কাঠ জ্বালিয়ে রান্নাতে অভ্যস্ত নই কিন্তু আমায় পটু হাতে কড়াইতে বেগুন ভাজতে হলো যাতে সিনটা ন্যাচারাল লাগে। এখানেই অভিনয়ের দক্ষতা প্রমান করতে হলে জীবনের প্রতিটা খুঁটিনাটি শিখতে হবে।

২০,ছুটিতে দেশে না বিদেশে কাটাতে ভালোবাসবেন?
উঃদেশে। আমি তো আমার বাংলার সব কিছুই ঘুরে দেখিনা তো বিদেশ। আমি বাঁকুড়া বিষ্ণুপুর যাই নি। তাছাড়া দেশেই কত সুন্দর সুন্দর জায়গা আছে। আগে আমি আমার বাংলাটা ঘুরে দেখি তারপর দেশ। এই জন্মে সব কিছু শেষ করতে পারলে বিদেশের কথা ভাবা যাবে।

২১. ব্যোমকেশ না ফেলুদা?

উঃঅবশ্যই ফেলুদা। আসলে ছোট থেকেই ফেলুদার সিনেমায় সৌমিত্র চ্যাটার্জিকে দেখতে দেখতে ফেলুদা ছাড়া আর কাউকে ভাবতে পারি না। ব্যোমকেশ দেখেছি কিন্তু ফেলুদাকে ছাপিয়ে আমার কাছে কেও যেতে পারে নি।
২২.নেগেটিভ রোল করতে কেমন লাগবে?
উঃ_নেগেটিভ রোল করার আমার অদম্য ইচ্ছা। কিন্তু আমার একটা মিষ্টি মার্কা চেহারা দেখে আমায় হীরোর মা বা কড়া শিক্ষিকা জাতীয় বা ব্যাক্তিত্বে ভরা কোন রোল পাই। কিন্তু আমি মনে মনে ভীষন রকম একটা নেগেটিভ রোল করতে ইচ্ছুক যেখানে আমি নিজের সবটুকু উজাড় করে অভিনয় করতে পারি।

২৩.গল্পে নিজের চরিত্রের গুরুত্ব বুঝে অভিনয় করেন না অভিনয় করতে ভালোবাসেন তাই করেন?
উঃ_অবশ্যই অভিনয়কে ভালোবেসে, তবে গুরুত্ব নিজের কাজ দিয়ে তৈরি করতে হবে। তোমার কাজ দিয়ে সবার মন জয় করতে হবে। নিজের জায়গা করতে হবে।

২৪.কাকে ইর্ষা করেন?
উঃভালো অভিনয় দেখলে মনে হয় আমি যদি এই রোলটা পেতাম, তাহলে হয়তো আরো ভালো করতাম। একজন দর্শক হিসাবে একজন অভিনেত্রী হিসেবে যখন কাউকে খুব খারাপ অভিনয় করতে দেখি তখন মনে হয় ইস! আমি যদি এই রোলটা পেতাম তাহলে কত সুন্দর করতাম।”ব্রহ্মা জানেন গোপন কম্মোটি” মুভিতে আমাকে অরিত্র ঋতাভরীর মায়ের চরিত্র দিয়েছিল। তখন আমার সিরাজদ্দৌলা নাটকের ডেটের সাথে ক্ল্যাস করে যাচ্ছিল বলে করা হয় নি। পরে মুভিতে ঋতাভরীর মায়ের অভিনয় দেখে উনাকে সম্মান জানিয়ে বলছি আমার মনে হয়েছিল আমি করলে অনেক ভালো অভিনয় করতাম। এখানে অনেক ডায়মনশান আনতে পারতাম, চরিত্রটাকে ফোটাতে পারতাম। তাছাড়া ইর্ষা আমি কাউকে করি না। স্বীকার করছি ইর্ষা করি তাদের যারা প্রচুর কুকুর বিড়ালকে নিয়ে সময় কাটাতে পারে। আমি পশুপ্রেমী কিন্তু ওদের সাথে সময় কাটানোর মতো সময় আমার নেই তাই।

২৫.অভিনয় জগতে সাফল্যর শিখরে উঠলে কি কি করতে চান?

উঃওইভাবেই কোনদিন কিছু ভাবি নি। যদি উঠি তখন দেখা যাবে।
২৬..শান্তিনিকেতনে আপনার পড়াশোনা, সেখানের পরিবেশ কি আপনাকে আজকের স্বাতী মুখার্জি হতে সাহায্য করেছে? কাদের কাদের অনুপ্রেরণা এখন ও শক্তি দেয়?
উঃসেটা তো বটেই। আমার যেখান থেকে ভিত তৈরি সেখানের পরিবেশ তো আমাকে এখানে আনতে সাহায্য করেছে। আমাকে উদার, স্বাধীন এবং স্বনির্ভর হতে সাহায্য করেছে। তাই বুনন যেখানে সেই জায়গা তো অবশ্যই আমাকে এই জায়গায় আনতে সাহায্য করেছে।

২৭.. অভিনয় জগতে কীভাবে এলেন?

উঃআজ থেকে সাত বছর আগে। আমার ছেলের বয়স তখন সাত বছর। আমার এক দাদার ( সৌমিত্র বাসু) থিয়েটার দল ছিলো, সেখানে ছেলেরএকটা ছোট রোল ছিলো। তারপর দাদার কথায় থিয়েটারে আসা।চুটিয়ে বালিগঞ্জ অন্তর্মুখের প্রতিটি নাটকে অভিনয় করি। হঠাৎ একদিন একটা সিরিয়ালের অফার আসে। সেই থেকে একের পর এক ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় কাজ করছি।
২৮..ছোট পর্দা না বড় পর্দা কোনটাতে বেশি স্বচ্ছন্দ?
উঃআমি সবেতেই বেশ স্বচ্ছন্দ তবে আমার ভালো লাগার জায়গা বড়ো পর্দা।

২৯.অভিনয় কোথায় শিখেছেন? অভিনয় জগতে না এলে কোন পেশায় যাওয়ার ইচ্ছে ছিল?

উঃআমার ভালো লাগার জায়গা থেকে অভিনয়ে এসেছি। আমি কোন কোর্স করি নি, শুধুমাত্র ভালোলাগা এবং প্র্যাকটিস আমায় এই জায়গায় নিয়ে এসেছে। আমি আমার সহ অভিনেতাদের কাছ থেকে অনেক কিছু শিখেছি। যেটা ভালো সেটা নেওয়া চেষ্টা করেছি।ছোট থেকেই কোন বিশেষ স্বপ্ন আমার ছিলো না। আমার বিয়ের পর ছেলে হয়ে যাওয়াতে আর কোন সেইভাবে কোন স্বপ্ন দেখিনি। তবে হ্যাঁ ছোটবেলায় এয়ারহোস্টেস হওয়ার স্বপ্ন দেখি। কিন্তু তখন সেইভাবে কোন স্কোপ ছিলো না। হাইটের ও একটা ব্যাপার ছিল, বোধহয় আর একটু হাইট লাগতো। অভিনেত্রী হবার স্বপ্ন তো দেখিনি। বাড়ির ভয়ে এসবের দিকে যাওয়ার কথা ভাবিনি। আমি ভীষন পাতি একটা মেয়ে ছিলাম যার সেইভাবে কোন উচ্চাশা ছিলো না। তবে পরিশ্রম, নিষ্ঠার জোরে এই জায়গায় এসেছি।
৩০. স্বপ্নের চরিত্র কোনটা?
উঃ_যে সব চরিত্রে আমার নিজেকে ভেঙে গড়ার সুযোগ রয়েছে। আমি এক্সপিরিমেন্টাল ক্যারকটার করতে চাই,যেমন কোন হত্যাকারী বা নিষ্ঠুর চরিত্র বা কমেডি রোল যাতে সত্যি আমাকে অনেক খাটতে হবে। এখনো অব্দি যে সব চরিত্র করেছি তাতে আমাকে খুব বেশি খাটতে হয় নি তবে “ডোম” ফিল্মে আমার ডোমের বৌ চরিত্রটা একটু চ্যালেন্জিং রিলিজ হলে দর্শকরা বলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here