মৃত্যুঞ্জয়
***নাসরিন জাহান মাধুরী
বাবার ফিলিপস রেডিওটা ঘীরে সেদিন সবাই শুনছিলো
তিঁনি এসেছেন নামলেন বিমান থেকে..
রেডিওতে চলছে ধারাভাষ্য….
তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান
৭ মার্চের সেই বজ্রকন্ঠ
স্বাধীনতার ডাক
আর তারপর ২৫ মার্চের কালোরাত
সশস্ত্র সংগ্রাম ৭১
তাঁকে বন্দী করা হলো
নিয়ে গেলো শত্রু দেশের কারাগারে..
১৬ ডিসেম্বর স্বাধীনতা এলো..
কত জন ঘরে এলো, আরো কতজন এলো না!
তিঁনিও না…
তারপর তাঁর স্বদেশে প্রত্যাবর্তন..
জনস্রোতে ফুলেফুলে তাকে বরণ।
একদিন এলেন তিঁনি আমার শহরে..
শহর জুড়ে ব্যানার ফেস্টুন ছিলো না তেমন…
স্টেডিয়ামে ভাষণ দেবেন তিনি..
কিন্তু লোকারণ্য…
কাছে যাওয়া হয়নি…
তাঁকে বরণ করছিলো গান গেয়ে
“বঙ্গবন্ধু তুমি মহামানব “
মাইকে কন্ঠ শুনতে পাচ্ছিলাম..
তখনো উপলব্ধি হয়নি তিঁনি কে
শুধু জেনেছিলাম তিঁনি বিশেষ কেউ।
দেখা হয়নি তাঁকে
আব্বা বাসায় এসে বললেন তিঁনি এসেছিলেন খুব কাছেই
বড় হুজুরের কবর জিয়ারতে
সবার সাথে কথা বলেছেন
কি ভীষণ চেনা! আপন কেউ যেনো।
তারপর অগাস্ট ১৫
পঁচাত্তরের সেই দিনিটি
রেডিওতে বার বার তার স্বপরিবারে হত্যার খবর আসছে
কেউ বেঁচে নেই!
দুইজন বেঁচে গেছে
ওরা দুই বোন৷ যারা দেশের বাইরে ছিলো..
তারপর কত কিছু!
মুছে ফেলা নাম!
যায় নাতো মুছা তাঁর নাম
যে মৃত্যুকে জয় করে মৃত্যুঞ্জয়
সেতো আর কেউ নয়
সেই মহামানব
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুররহমান
বড় হতে হতে চিনেছি যাকে
হৃদয়ে দিয়েছি উচ্চাসন।
বড় বাড়াবাড়ি আজ কিছু চাটুকারের
আজ তাঁর জন্মদিনে..
তারা কেউ বঙ্গবন্ধুর প্রকৃত ইতিহাস জানে?
শুধু লোভ আর কাড়াকাড়ি আছে..
পদলেহন আছে…
তাঁর নাম পুঁজি করে আছে রমরমা ঝমঝমা ।
কি অদ্ভুত জাতি আমরা!
জাতির পিতাকে হত্যা করি সোল্লাসে!