খোকা কাহিনী
জেসমিন জাহান
টুঙ্গিপাড়ার ছোট্টঘরে
ফুটলো মাটির ফুল।
ভুবন জোড়া খ্যাতি তাহার
নেই তো কোনো তুল।
রাত্রি হলে আকাশ নীলে
তারার প্রদীপ জ্বলে।
খুব সকালে ময়না পাখি
গানের সুরে বলে,
“উঠো খোকা জলদি চলো
মধুমতির পাড়ে।”
ডিঙি নৌকা বাঁধা আছে
সেথায় সারে সারে।
মধুমতির ঘোলা জলে
ডুব সাঁতারের খেলা।
এমনি করে কেটে যে যায়
খোকার ছেলে বেলা।
মন যে তাহার রাজার মতোই
প্রজার দুঃখে পোড়ে।
সারা পাড়া মাতিয়ে রাখে
তুফান কিংবা ঝড়ে।
হঠাৎ আলোর ঝলক দেখে
চোখ মেলেছে খোকা।
জারুল গাছে ফুল ফুটেছে
ঐ যে থোকা থোকা।
মুগ্ধ খোকার চোখে ঝিলিক
খুশি ভরা প্রাণ।
মুক্ত আকাশ মুক্ত স্বদেশ
এই টুকুই চান।
দেশের মানুষ, দেশের মাটি
সোনার চেয়ে দামী।
ভাবছে খোকা আসবে সুদিন
হবে এ দেশ নামী।
কিশোর খোকা বড় হলো
উদার ধ্যানে-জ্ঞানে।
ন্যায্য দাবী, মুক্ত স্বদেশ
আদায় করতে জানে।
ডিঙি নৌকার মাঝি হয়ে
দেশেরই কল্যাণে।
ছুটছে সকাল, সন্ধ্যাবেলা
ভয়শূন্য প্রাণে।
নিজের জীবন তুলে দিলো
পাক সেনাদের হাতে।
কোথায় খোকা কেউ জানেনা
গভীর কালো রাতে।
জীবন বাজি রেখে শেষে
আনলো স্বাধীনতা।
এই বাংলা ভুলবে না যে
তোমার ত্যগের কথা।