অধরা সুখ
রীতা ধর
একদিন একলা দুপুর
মৌনমাতাল বন পলাশের রঙে
বিশ্বাসের হাতে তুলে দিয়েছিলাম
নৈবেদ্য উপাচার,,,
বাতাসের প্রবল উন্মত্ততাকে হৃদয়ে চেপে
অনুভব করেছিলাম বাউলের মাতাল স্পর্শ,
মেঘের কাছে নতজানু হয়ে বলেছিলাম
বুক ফাটা তৃষ্ণার কথা,
দহন বেলায় হৃদয় পেতে আকণ্ঠ ছুঁয়েছিলাম
মেঘের কান্না,
মেঘলা আকাশ সেদিনই প্রথম ডেকেছিলো সমুদ্র সঙ্গমে।
সারা গায়ে অঝোর ধারার বৃষ্টি মেখে
কষ্টের চিহ্ন ধুয়ে জেনেছিলাম
শরীরও প্রবল নদীর মতো বহতা।
তারপর অযুত নীহারিকার পথ ধরে হেঁটে যেতে যেতে কত দীর্ঘশ্বাসে ঝরেছে নক্ষত্র।
আবার অন্তর ছাপিয়ে আকাশের বুকে নক্ষত্ররাই ছড়িয়েছে সুন্দর সুষমা।
মহাশূন্যের এই আলো আঁধারের দুঃখ কূপে
তোমাকে ভেবেছিলাম প্রাণের দেবতা।
ভেবেছিলাম অনন্তকাল এভাবে অমল সুখে
নিভৃতে তলিয়ে যাওয়ার কথা,
জন্ম জন্মান্তরের পথে,,,
তুমিও কি অনভিজ্ঞ কাশফুলের মতো
শরতের নরম সন্ধ্যায় চোখের পাতায়
এঁকেছিলে মেঘের রঙ,
নিভৃতের অশ্রুতে ভাসিয়ে মহুয়ার
আশ্বিনে তুলেছিলে ঝড়!
বুকে তবুও অসম্পূর্ণ ভালোবাসার
তপ্ত নিশ্বাস আমার,
নিষেধের সকল বাঁধা মাড়িয়ে
নিঃশব্দ বেদনায় পরাজিত হরিণীর মতো
একান্ত বিজনে সূর্যের পানে বাড়িয়েছি হাত।
গোধূলির সব রঙ মুছে গেলে রাতের আকাশে
জোনাকিরা যেমন প্রনত হয় গভীর নিস্তব্ধতার কাছে।
তুমিও কি তেমনি চোখ রেখেছো আমার চোখে
হেমন্তের রিক্ত নাগকেশরের মতো!
জন্মান্তরের পূর্ণ দৃষ্টিতে আমার দুচোখে
করেছিলে নিঃসঙ্গ বাস!
বুকে তবুও জ্বলেছিল অমিত ভালোবাসার মঙ্গলদ্বীপ,
বিবাগী আকাশের গায়ে শরতের
নিস্তব্ধ সন্ধ্যায় আধফোটা চাঁপার সুবাসে
পেয়েছিলাম অধরা মেঘের সুখ।