অমর্ত্য বন্দনা
রীতা ধর
কবিতাই পবিত্র অজর, অমর
এক এবং অদ্বিতীয় স্বপ্ন,
ছাপ্পান্ন হাজার বর্গমাইলের একটি দীর্ঘ কবিতায় সূর্যসন্তানেরা দেখেছিল এমনিই
এক অবিনশ্বর স্বপ্ন , সবুজের অভিমুখে
পুঁতে গিয়েছিল তাদের শানিত রক্তবীজ।
তুমি সেই বীজ হতে উত্থিত ভিসুভিয়াস,
প্রতিবাদ,স্লোগান, ভয়ংকর দাবানল।
এই কবিতাতেই আমি স্তব করেছি তোমার,
সবুজ ললাটে দিগন্তের মতো লিখেছি
ব্যাপক সূর্যোদয়,
অমর্ত্য গীতাঞ্জলির মতো চিরন্তন।
বিধ্বস্ত বাগানে এক নিশঙ্ক তর্জনী
প্রথম চেয়েছিল সাত কোটি গোলাপের
জন্য স্বাধীন সত্তা।
তুমি সেই গোলাপের সুললিত গুঞ্জরন,
তুমি ফাগুনের রক্তাক্ত পলাশ, ত্রিশ লক্ষ
শহীদের দুর্বার আত্মদান।
এই কবিতাতেই আমি অমল হাতে খুলে দিয়েছি তোমার দুর্ভেদ্য পথ,
তুমি থইথই ঢেউয়ের উপর অবিচল কাণ্ডারী,
উদ্ধত পর্বতের মতো অটল হিমাচল।
তুমি অবিনাশী, তুমিই নৈসর্গিক
কেবল মধুরতম সত্তার পরিব্যাপ্তি তুমি,
তুমি নিত্য,তুমিই শুদ্ধতার বিচ্ছুরণ।
যখন দেখেছি অবিনাশী স্বপ্নের পাঁজরে
ফাটলের দাগ আর ব্যর্থতার আস্তরণ ;
সবুজের স্তরে স্তরে জমা হয় আমূল ধ্বংসস্তুপ,
হৃদপিণ্ডে রক্তাক্ত বর্ণমালা আর তাদের অনুচ্চার ক্ষিপ্ত
ক্রোধ ভ্রষ্ট সভ্যতায় গড়িয়ে পড়ে অশ্রুত আগুনের মতো,
আমি তখনও স্তব করেছি তোমার।
তুমি মুক্তির জয়ধ্বজা উড়িয়ে সাত কোটি গোলাপের হৃৎকমলে জাগিয়েছ
আলোকসত্তা, অতল কৃষ্ণগহ্বর থেকে
তুলে এনে দেখিয়েছ মুক্তির মহোৎসব।