হৃদয়াঞ্জলী
রীতা ধর
এখন রোজ শ্রাবণ ঝরে
বিরহ সুখে উছল হয় মেঘদূত,,,
সমস্ত ব্যর্থতা নিশীথের নির্জন দাহ নিয়ে
যেন শ্রাবণ ধারায় ধুয়ে যায় ক্রমশ
স্বপ্নের রূপোলী আলো যতবার গাঢ় হয় শিয়রের কাছে,
ততবার ঋদ্ধঘটে তোমায় পেয়েছি আমার সকল দুঃখের মাঝে,
হে সখা,তোমার আজন্ম দুঃখে
দীক্ষিত করো আমায়,আমার শেষ রাতের অন্ধকার,
শ্রাবণের এই খোলা স্রোত
তোমার প্রভাতফেরির আলো তাপে উচ্ছল করো,
দশদিক আচ্ছন্ন বিলাপের শ্রাবণ
আমায় ক্ষমা করো সখা,ক্ষমা করো,,,
আমার রৌদ্রহীন নিরুত্তাপ হৃদয়,দু’চোখের
নিহিত জল তোমার দ্যুতিময় বিনয়ে
আজ হয়েছে নবনীতা,
প্রেম সমস্ত শিরা উপশিরায় গলিত হয়ে গঙ্গার ধারার মতো আবার পবিত্র হয় হৃদয় অলিন্দে,
প্রেম কী এমনি দীর্ঘ বহমান!
এ ও কী ভালোবাসার অব্যয়ী রূপ!
এ ও কী নতুন স্বপ্ন!
অথচ এ স্বপ্ন আমার দেখার কথা নয়।
তবুও শান্ত এক নির্জন আকাশ
স্বপ্ন হয়ে উঁকি দেয়,
মাধবী দোলে চারপাশ; মাধবী তাঁর প্রিয় ফুল,
সে আসে তাঁর প্রেমাঙ্গনে কবিতা ফোটাতে ,সে আসে সুবাস মেখে অঙ্গলেপে।
আখের বনে, নারকেল পাতার ফাঁকে ফাঁকে অথবা সুপোরীর শীর্ষ মুকুলে
সে নক্ষত্রের আলো জমা করে,
আমার স্বপ্নে সে আসে,
সৃজনের ঝড় তোলে কবিতার তেপান্তরে।
রোজ সে শ্রাবণ দেখে তাঁর নিজস্ব রঙে,
একটি একটি কবিতা হয়ে ফোটে ঐ
প্রণয়িনী আকাশের নীলে
শব্দের পিঠে শব্দ এঁকে তৈরি করে অনন্তের পিরামিড কিংবা দেবালয়,
তাঁর বুক চিরে চরাচরে দোলে আলো হাওয়ার উত্থান।
অথচ এ স্বপ্ন আমার দেখার কথা নয়,
যে শ্রাবণ ধারা আমার পরমাত্মা ঘিরে তাতেও কী ভালোবাসার এমন নদী বয়!
হে সখা, হে চিরন্তন,,,
স্বপ্ন থেকে যতই ফিরিয়ে নিই স্বপ্ন
হৃদয়াঞ্জলীতে স্বপ্নেই রয়ে যাই ব্রত
আমার একেকটি মুহূর্তের স্বপ্ন
প্রতিটি মুহুর্তে সত্য করো হে সখা,,,,