আয়েশা মুন্নির সম্পূর্ণ ভিন্নমাত্রার কবিতা“ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া”

326
আয়েশা মুন্নির সম্পূর্ণ ভিন্নমাত্রার কবিতা“ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া”

ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া
আয়েশা মুন্নি

—হ্যালো…
— কে বলছেন?
— চিনতে পারছ না?আমি
আ মি…
— ও,আপনি?
—কেমন আছো?
—ভালো।
–আমি খুব বুঝতে পারি বাইরে ব্যক্তিত্বের কঠোর লেবাস পড়ে থাকলেও ভেতরে তুমি একা, খুব একা।
তেমন আমিও।
—বাহ্, মনোবিশ্লেষক।
—হা হা, তা বলতে পারো।
—বলুন আপনি কেমন আছেন?
—ভালো থাকার চেষ্টা বলতে পারো।
তবে ঠিক ভালো নয়।

—তা কেন!
–খুঁজছি এমন কাউকে যেখানে পরম নির্ভরতায় মাঝে মাঝেই নিঃশ্বাস রাখা যায়।
—বাহ্,আমিও ঠিক তাই ভাবছিলাম!
— এটা হলো তোমার সাথে আমার মনের মিল। একই অনুসন্ধান চলছে ভিতর ভিতরে, তাই।
—অনুসন্ধানের শেষ হয়নি আজও।
—ওমা তাই? আমার প্রতি বিশ্বাস রাখতে পার, আমি সেই লোহার সিন্দুক।
—তবে নিরীক্ষা তাপস শুরু…

—আমাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষার উর্ধ্বে চোখ বন্ধ করে বিশ্বাস করতে পার।
তবে একটা অনুরোধ।
—নিশ্চয়ই।
—আমাকে তুমি বললে খুশি হবো।
—হয়ে যাবে ক্রমান্বয়ে।
—এখন আপাতত বিদায় নিতে চাই, স্নানে যাবো,ভিজবো।
—আমিও তাই যাচ্ছিলাম,কথার মায়ার আটকে গেলাম।
ভালো থাকুন।
—আজ স্নান ভালো হবে, কবিতার মতো ছন্দময়,কল্পনায় কবি,অনিন্দ সুন্দরী এক কবি।
মরেই যাবো।
—হা হা, পাগল– আসি তবে। একটু পরে কথা হবে।
… বেশ কিছু সময় পর …
—- গোসল শেষ তোমার?
—হুম।
কেমন হলো মনোবৃষ্টির স্নান?
—দারুণ, মনোহর ।
তোমার?
—হারাতে পারিনি।
আচ্ছা, এখন কাজ আছে।
ভালো থাকবেন পরে কথা হবে।
…. পরদিন…
—আমাদের কি দেখা হতে পারে?
—হয়তো হবে, হয়তো না।
—তোমাকে আমন্ত্রণ। আমার বাসা এক নির্জন কবিতার আশ্রম।
—নির্জন কেন?

—সব মানুষেরই শ্বাস ফেলার জন্য নিজস্ব একটা সবুজ কর্ণার দরকার।
মানুষ প্রকৃত প্রস্তাবে খুব একা, সকলের মাঝে থেকেও একা।
দূরে থেকে থেকে খুব সন্তর্পণে হাসি খুলে দেখি, ভেতরে তার মহাসমুদ্র।
যেমন তুমি,কতবার নিজের সঙ্গে কথা বলো অবিরাম।
ঠিক আমিও তেমন।
—কী করে বুঝলেন?
—মুখ দেখে বুঝতে পারি।বিশ্বস্ত আদর কোথাও নেই।
—তা হয়তো নেই, তবে আমার নিজের সাথে নিজের একটা জগত আছে।
—কি উর্বর তুমি, তোমার কবিতার মত।
সে কবিতার নাভিমুলে আমি ভিজবো।
কি নামে ডাকি তোমায়?
—ঐ যে বললেন “কবিতা”।
—মুগ্ধ আমি।
—মুগ্ধতা আসে ক্রমান্বয়ে।
—হুম, ধীরে ধীরে দ্বার খুলে গুঢ়তার রহস্য উন্মোচনের, তবেই তো রচিত হয় কবিতা।
—কবির সান্নিধ্যে নিভৃতে আনন্দের জন্য কবির একখানা ছবি চাই,
যা দেখে আমিও লিখবো ১২ হাজার গীতিকবিতা।
কবিতার বৃন্তে পংক্তি রচনা করেই হবে ভাটিয়ালি ভাওয়াইয়া…

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here