হলুদ খামের ইতিকথা
আয়েশা মুন্নি
ইচ্ছে ছিল একটি দীর্ঘ কবিতা লিখে
হলুদ খামে পোস্ট করবো তোমাকে,
আজও আমি লিখতে পারিনি সেই কবিতা
তাই পোস্ট করাও হয়ে উঠেনি।
আমি লিখতে চেয়েছি সেই অতীত,
সেই কষ্ট বেদনার রোজনামচা
লিখতে চেয়েছি সেদিনের সেই অবহেলার বিভীষিকা,
লিখতে চেয়েছি বিরহ কিংবা গোপন অশ্রুপাতের ইতিকথা
লিখতে চেয়েছি প্রতিটি নির্ঘুম রাতের হাহাকার…
প্রথম সতীচ্ছদ…
লিখতে চেয়েছি প্রথম মাতৃত্বের বিষাদ,
দুগ্ধবতীর দুঃখ বিশেষ…।
এক এক ফোঁটা মাতৃদুগ্ধ আর চোখের অশ্রু মিলেমিশে কী করে জীবন্ত রক্ত বিন্দু বিন্দু ঝরে।
লিখতে পারিনি…!
বহু চেষ্টা করেও লিখতে পারিনি
লিখতে পারি না…
কি করে লিখি বল?
লিখতে গেলেই চোখ ভিজে স্মৃতির ভীড়ে।
আমি তখন কেবল কাঁদি,শুধু কাঁদি।
সেই কান্না আমি আর কাঁদতে চাইনা,
তাই তোমাকেও লেখা হয় না,
যেমনি করে বলা হয়নি কখনো।
বলা হয়নি-তোমার পথ চেয়ে আমার অপেক্ষার প্রহরের সার্বক্ষণিক উদগ্রীব থাকার গল্প।
এক জীবনে কতকিছুই বলা হয়নি তোমায়
হয়তো আর কখনোই বলা হবেনা…
সে সব দিনরাত্রির আবেগ কি করে দাফন করেছি বুকের গভীরে!
হেলায় ফেলায় কাটানো জীবন আমার
ভরা পূর্ণিমার চাঁদ দেখি খোলা জানালার ফাঁক গলে,
জোছনা রাতে তারা গুণে কাটিয়ে দিয়েছি
এক জীবনের সকল বসন্ত…
তবুও একখানি দীর্ঘ কবিতা লেখা হলো না।
সেদিনগুলো আমাকে নীরবে কাঁদায়
আমি চেষ্টা করেছি বহুবার তবু
লিখতে পারিনি…
কি করে লিখবো…
লিখতে গেলে কত স্মৃতি চোখে ভীড় করে
তখন আমি কাঁদি কেবলি কাঁদি।
গভীর রাতে যখন নিঃশ্বাসের ভারে জানালা খুলে দেই,
খোলা জানালায় উদাস চেয়ে আকাশের গায়ে তোমার প্রতিচ্ছবি আঁকি মনের খেয়ালে…
তারপরও- চিঠির মত দীর্ঘ কবিতা লেখা হয়ে উঠে না।
লজ্জায় চাঁদ ডুবে যায়
অন্ধকারে আমি কাঁদি
আরও বেশি কাঁদি…
তবুও হলুদ খামে দীর্ঘ কবিতা
পোস্ট করা হলো না তোমায়…!