।। সুনির্মল বসুর কবিতা।।
।।তুতাইয়ের আকাশে ওড়ার স্বপ্ন।।
সেই কোন ছোট্টবেলায় ওর মা আকাশের তারা হয়ে গেছেন,বাবা রাজ মিস্ত্রির কাজ করেন, শহরের বড় বড় ইমারত বাবার হাতে তৈরী,
তুতাই এয়ারপোর্টের কাছে বস্তিতে থাকে,
ও কর্পোরেশনের প্রাইমারী স্কুলে ক্লাস টু এর ছাত্র,
মামা বাড়ি মগরাহাটে, সাকুল্যে ও দুবার মামার বাড়ি যাবার সময় ট্রেনে চড়েছে,
সকালে ওর স্কুল,এখন দুপুর,এখন জানালায় তুতাই, আকাশে প্লেনের ওঠানামা দেখছে এখন ও,
নামার সময় মনে হয়, ওদের জানালার কাছে নেমে আসে প্লেন,যেন হাত বাড়ালেই,
ওরা এত গরীব, প্লেনে চড়া অসম্ভব, অবিশ্বাস্য।
প্লেন যখন ওপরে ওঠে,তখন কি মায়ের কাছে যায়,
প্লেন মানে গতি, প্লেন মানে উঁচু থেকে আরো উঁচুতে ওঠা, নীচে থেকে রান ওয়ে ছুঁয়ে আইসক্রিমের মতো আকাশে ভেসে বেড়ানো বেশ লাগে,
প্রোমোটারবাবু সেদিন বাবাকে বলছিলেন, ফটিক, একদিন আকাশ ছোঁব আমি।
তুতাই ভাবে,আকাশটা বড়লোকদের জন্য, আমরা তো গরীব।
তুতাই ঘুমিয়ে পড়ে, স্বপ্নে আকাশ থেকে মাটিতে নেমে আসেন তুতাইয়ের মা,ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বলেন,তুতাই সোনা,
ভালো করে পড়াশোনা কর,তুই পারবি।
আমি আকাশ ছুঁতে পারবো, মা। আমার যে অনেক স্বপ্ন।
ঘুমিয়ে নয়, জেগে স্বপ্ন দেখতে শেখ,তুতাই।।