ফেসবুক রাইটার্স ক্লাব এর সাপ্তাহিক সাহিত্য প্রতিযোগিতা-০৪ এর সেরা লেখা কবি —–তাপস হাজরার কবিতা “সাঁঝবেলা ”

817
কবি —–তাপস হাজরা

সাঁঝবেলা

              কলমে: তাপস হাজরা

“””””””””””””””””””””””””
অতঃপর,
ক্লান্ত সূর্য পশ্চিম দিগন্তে ঢোলে পড়ে
দিকচক্রবাল মাখে গোধূলি আবীর
গোবাদিরা মাঠে অলস জাবর কেটে
গোয়ালে ফেরে সারিবেঁধে গাঁও বাটে।

শুকতারারও অবস্থান্তর হয় নভতলে
নামান্তরে ডাকি তারে সন্ধ্যাতারা বলে
অবনত লজ্জাবতীলতার মত সন্ধ্যা
শ্রান্ত পায়ে গুটি গুটি নামে চরাচরে।

অভিমানে মুখ ফিরিয়ে নেয় সূর্যমুখী
প্রস্ফুটিত শাপলা শতদল ম্লায়মাণ হয়
পাখিদের নীড়ে ফেরার ব্যস্ত শব্দছবি
‍অশ্বত্থ, বটে, কলরব, ডানার ঝাপটে।

ওদিকে দেবালয়ে সন্ধ্যারতির ঘন্টা
গৃহস্থের কুলুঙ্গিতে সান্ধ্য প্রদীপ জ্বলে
কাঁসর, ঘন্টা, শঙ্খ নিনাদে ঘোষিত
দিবস ও রজনীর সন্ধিক্ষণ আগত।

সারাদিন হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পরে
পারিশ্রমিক বুঝে নেয় ঠিকে শ্রমিক
বিড়ি ধরিয়ে রওনা দেয় দূর গাঁয়ে
সেখানে সুখ দুঃখ পথ চেয়ে আছে।

ভোলাদার দোকানে সান্ধ্য আড্ডায়
চায়ের কাপে ফেনীল তুফান ওঠে
আলোচনা, সমালোচনা, রাজনীতি
সমাজনীতি, খেলাধূলা একাকার।

রুজি রোজগারের তাগিদে এসময়
দেহপসারিণীদের কাছে আর একটা
গ্লানিময় যান্ত্রিক নিশিযাপনের জন্যে
অযাচিত শপথ গ্রহণের প্রদোষ কাল।

আলোকোজ্জ্বল রঙ্গিলা ফোয়ারাতে
নিশিনিলয় সফেন সমুদ্র রচনা করে
সেখানে গভীর রাতে মহাসমারোহে
উত্তাল জীবন্ত নিশিযাপন শুরু হবে।

সাঁঝের আন্দাজ পায় কিছু জলচরও
পচা ডোবার পাঁকে গোঁতা মারে মাছ
অনাড়ম্বরে কিছু বুদ্বুদের জন্মও হয়
মরেও ভুড়্ ভুড়্ করে সবার অজান্তে।

জলে, স্থলে, অন্তরীক্ষে সন্ধিক্ষণ হয়
আলো ও অন্ধকারের, দিন ও রাত্রির
এক অশক্ত অশীতিপর গেয়েই চলে
“হরি দিনতো গেলো সন্ধ্যা হলো—–“।
“””””””””””””””””””””””

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here