কল্পণা ছেড়ে বাস্তবতায় অভ্যস্ত করো অনুভূতিগুলোকে!!! নীলিমা সরকার এর অসাধারন লিখা “কল্পনার রসদ বনাম বাস্তবতায় জীবন ”

442
নীলিমা সরকার

কল্পনার রসদ বনাম বাস্তবতায় জীবন

নীলিমা সরকার

———————————————————

হৃদয় ধমনী হতে মস্তিষ্কের নিউরনে কল্পনাবিলাস আর বাস্তবের যোদ্ধা জীবনের ফারাক অনেক অনেক বেশি!
কল্পনার রসদে জীবনকে না দেখে জীবনের রসদে কল্পনাগুলো সাজানো ব্যাক্তিদের মেরুদন্ড মনে হয় একটু বেশি শক্ত! তারা নিয়তির ছোটো খাটো আঘাতে স্থানচ্যুত হয়না, আর ভেঙ্গেও পড়েনা!

কিছু নারী পুরুষ তো এমনই হয় যে তাদের কল্পনা নির্মিত আকাশ কুসুম এর মত করেই জীবন সঙ্গীকে পেতে চায়!
কিন্তু বাস্তবতা তো স্থান পরিবেশ প্রতিবেশের পরিবর্তনশীল অনুকূল প্রতিকূল চলমান পরিস্থিতির সাথে সামঞ্জস্য করে চলে!
তোমাদের কল্পনার নারী বা পুরুষের সাথে তোমাদের শরীরী মানুষটির যখন শতভাগ মিল পাওনা তখন সত্যিই তোমাদের কাছে অস্তিত্বটি বিষাক্ত লাগতে পারে! অভিযোগ অনুযোগে দোষের নর্দমায় পর্যবেশিত করে রাখতে পারো সেই মানুষটিকে, কিন্তু তোমারো অজশ্র দোষ থাকতে পারে, যা প্রকাশিত হয়না তোমাকে হারানোর ভয়ে! কিংবা সেই পরিবেশ প্রতিবেশ এর ভারসাম্য অক্ষুন্ন রাখতে!
দূর থেকে আলেয়ার হাতছানির মতই অন্যের দোষমুক্ত স্বামী বা স্ত্রীকে দেখে তোমার আফসোস হতে পারে! আর আমার আফসোস হয় তোমাদের নাদান চিত্তের দুর্বল দৃষ্টিভঙ্গী জেনে।
প্রতিটি স্বামী স্ত্রী ব্যাক্তির মাঝে অজস্র দোষ আছে যা মেনে নেওয়া মানিয়ে নেওয়ার নাম সুখী জীবন! তবে মাত্রাতিরিক্ত দোষযুক্ত স্বামী স্ত্রী চরিত্র আছে তা আমি অস্বীকার করবোনা! তবে সম্পূর্ণ দোষমুক্ত স্বামী স্ত্রী চরিত্র আছে তা আমি স্বীকার করিনা।
তুমি তোমার স্বামী বা স্ত্রী ব্যাক্তিটির খুব বেশি কাছে থাকো বলে তার দোষগুলো তোমার কাছে সহজে ধরা পড়ে! তুমি দূর থেকে যাদেরকে দোষমুক্ত দেখে নিজের ভাগ্যকে তিরষ্কার করছো তার স্বামী বা স্ত্রীরাই জানেন তাদের দোষের পরিধি, তারা তোমাকে বলবেনা, কারণ তারা বাস্তবতায় বিশ্বাসী কল্পনায় নয়!
জীবন তো কোনো ফুলশয্যা নয়! তাই একশোভাগ বা সিংহভাগ মনের মত সুন্দর করে পাওয়ার ও কোনো কথা নয়! জীবন একটি দূর্গম জটিল পথ! এখানে বুদ্ধি, ধৈর্য,ত্যাগ, ক্ষমা এর দ্বারা ক্ষুদ্র খুদ্র সুখ অর্জন করতে হয়! আবার জীবন অনেক সুন্দর আর মধুময়, যদি মানতে সম্মত হই যে জীবন তো এমনই যে কখনো অনুকূল আবার কখনো প্রতিকূলতায় সুখ উপার্জন করে নেওয়া!
জীবন সঙ্গী ব্যাক্তিটির ছোটো ছোটো দোষগুলো তোমার ধৈর্য আর ক্ষমার মহৎ গুণে স্বাভাবিক ও মানানসই করে নাও, দেখবে তুমিও অন্যদের মতই সুখে আছো।
নিজের আচরণ পর্যালোচনা করো! দেখো তুমি তোমার জীবন সঙ্গীটাকে কতটা কষ্ট দিচ্ছো তোমার অভিযোগ,অভিমান, রাগ, দম্ভ প্রভাবিত ব্যাবহারে!
যদি এহেন কারণে তোমার ব্যাবহার তাকে কষ্ট দেয় তবে তুমিও দ্বিগুন কষ্ট পাবে একদিন এ আমার বিশ্বাস!
কল্পণা ছেড়ে বাস্তবতায় অভ্যস্ত করো অনুভূতিগুলোকে! মেনে নাও যে কেউ দোষের আওতার বাইরে নয়!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here