কুহেলি মানে মায়াজাল বা কুয়াশাচ্ছন্ন অবস্থা আর বরিষা বর্ষা সিক্ত।ঋতুর বৈশিষ্ট্যের সাথে সামাজিক অবক্ষয়, অস্থিরতা এবং এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন কবি জেসমিন জাহান তার কবিতায় “বরিষা কুহেলি ”

480
কবি জেসমিন জাহান

বরিষা কুহেলি

                       জেসমিন জাহান

আষাঢ়ের মেঘ ছুঁয়ে কলাপাতা মন
মেঘ ঝুরি ফোঁটা ঝরে করে উন্মন
ইটচাপা ঘাসে লাগে বানের জোয়ার
উইপোকা ভয়ে কাঁপে প্রাণ হারাবার।
হলদেটে কাঁচপোকা যায় যদি ভিজে
পাতা দিয়ে ঢেকে থাকে নয়া বৌ সেজে।
ঘাস ফড়িংয়ের লেজ পথ খুঁজে মরে
ভরা নদী,বিল- ঝিল, ঝিলমিল করে।

গলা পানি মদিনার খিল খিল হাসি
চাল ছুঁয়ে কানা-পোনা ওই যায় ভাসি।
পাড় ভাঙে, পাড়া ভাঙে, ভেঙে হয় সারা
বাক হারা নিমাইয়ের ভিটে মাটি হারা।
খাঁজকাটা রেলিংয়ের ফাঁকে ডাকে চাঁদ
হাতছানি দিয়ে ডাকে জেগে থাকা রাত।
যবুথবু সোনা মাঝি বসে খেয়া নায়ে
উদরে নেভে না জ্বালা, জ্বলে ধীর লয়ে।
কাকভেজা জরিনার ছেলে কাঁদে কোলে
এক মুঠো খাবারের খোঁজ যদি মেলে!
ঝিরি ঝিরি বাতাসের বেগ বাড়ে ধীরে
ঘন কালো মেঘ জমে নীলাকাশ ঘিরে।
উঠোনের কোল ঘেঁষে নুয়ে আছে বেড়া
শাওনের ঢলে বুঝি ডুবে যায় পাড়া।

কোথা যাই, কোথা ঠাঁই বেঁচে থাকা দায়
বানের পানির টানে সবই ভেসে যায়!
যেইদিকে চোখ যায় জলে একাকার
আসবে কি কোনো তরী পাড় করিবার?
ঘন ঘোর মেঘ কেটে কুজ্ঝটি কাল
দেখবো কি নির্মেঘ সুনীল সকাল?
বুক বেঁধে বসে আছি সেদিনের আশে
সব বাঁধা দূরে ঠেলে সে যদি আসে!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here