শুভচিন্তার কবি ও লেখক জেসমিন জাহান এর আজ ২৯ অক্টোবর শুভ জন্মদিন ।

469
দৈনিক আলাপ পরিবারের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা লেখনির আলোয় আলোকিত কবি জেসমিন জাহান কে ।

দৈনিক আলাপ ওয়েবডেস্কঃ সাহিত্যের অন্যতম সারথি কবি ও লেখক জেসমিন জাহান এর আজ শুভ জন্মদিন । দৈনিক আলাপ পরিবারের পক্ষ থেকে জন্মদিনের শুভেচ্ছা কবি ও লেখক কে ।
কবি জেসমিন জাহান এর জন্ম তিনি।২৯ অক্টোবর, ঢাকার মিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
বাবা মোঃ আব্দুর রশিদ ও মা আয়শা খানমের পাঁচ সন্তানের মধ্যে প্রথম সন্তান তিনি। ২৯ অক্টোবর, ঢাকার মিরপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তার পৈত্রিক নিবাস গাজীপুর জেলার টঙ্গীতে।
পড়াশুনা করেছেন ঢাকায়। স্কুল-কলেজ মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনিস্টিটিউট থেকে এবং মিরপুর সরকারি বাংলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে বাংলায় এম.এ ডিগ্রী লাভ করেন।
ঢাকা টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে বি.এড এবং আহসানউল্লাহ টিচার্স ট্রেনিং কলেজ থেকে এম. এড ডিগ্রী লাভ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময় বিয়ে হয়ে যাওয়ায় স্বামীর সহযোগিতায় লেখাপড়া শেষ করেন এবং দীর্ঘদিন শ্বশুরবাড়ি টাঙ্গাইলে অবস্থান করেন। টাংগাইল ভূঞাপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। বর্তমানে ঢাকার একটি স্বনামধন্য স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত আছেন।
ব্যাক্তিগত জীবনে এক কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জননী।
ইঞ্জিনিয়ার বাবা এবং গৃহিণী মায়ের অনুপ্রেরণায় ছোট বেলা থেকেই লেখালেখি করেন।দশম শ্রেণিতে পড়ার সময় মা মারা গেলে, বাবার সাহচার্যে বেড়ে উঠেন।ছড়া-কবিতা লিখেন ছোট বেলা থেকে। প্রথম কবিতা ‘স্বাধীনতা’ প্রকাশিত হয় স্বাধীনতা দিবসে স্থানীয় একটি পত্রিকায় ৭ম শ্রেণিতে পড়ার সময়। এর পর স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন ম্যগাজিনে লিখেছেন এবং সম্পাদনা ও করেছেন।
বাংলাদেশ সাহিত্য পরিষদের (বা সা প) সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি এই সংগঠনের অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘বহমানবার্তা’ র যুগ্ম সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন।
বা সা প থেকে তার সম্পাদনায় একটি কাব্যগ্রন্থ ” আমাদের কাব্যকথা” ২০২০ বইমেলায় বের হয়েছে।
প্রকাশিত হয়েছে কয়েকটি যৌথ কাব্যগ্রন্থ এবং এছাড়া একটি একক কাব্যগ্রন্থের কাজ চলছে। কবিতা ছাড়াও লিখেছেন ছড়া, গল্প, প্রবন্ধ।
সাহিত্যপ্রেমী এই মানুষটি স্বপ্ন দেখেন কলুষমুক্ত ও বিভেদহীন মানবিক আলোয় আলোকিত শুদ্ধ এক পৃথিবীর।

কবির নিজের কথা : আমার শৈশবকাল কেটেছে মিরপুরে। তখনকার সময় আমরা ছিলাম মুক্ত পাখির মতো। চমৎকার একটা সময় পার করেছি। আমাদের বাসা যে রোডে তার পেছনে বিল ছিলো। নৌকা করে ঘুরে বেড়ানো যেতো।বিকেলে ছেলে মেয়ে সবাই মিলে দাড়িয়াবান্ধা, গোল্লাছুট খেলতাম।ভোর হলে মক্তবে সবাই দলবেঁধে পড়তে যেতাম।
বাবা সেনাবাহিনীতে ছিলেন।ই এম ই কোরের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। তাই খুব নিয়মের মধ্যে থাকতে হতো আমাদের। তারপরেও একটা মুক্ত স্বাধীন জীবন কাটিয়েছি।গার্লস স্কুলে সব মেয়েরা দলবেঁধে যেতাম এটা খুব মিস করি। পিটি মিস কে প্রচণ্ড ভয় পেতাম।স্কুলে একবার ঢুক্লে ছুটি আগে আর বের হওয়া যেতো না।বিশাল মাঠ ছিলো আমাদের আর ছিলো চমৎকার সমৃদ্ধ একটা লাইব্রেরি।ছিলো কমন রুম, ক্যান্টিন।স্কুলের চারপাশে কৃষ্ণচূড়া গাছ।কী যে ভাল লাগতো।
শত প্রতি কূলতা সত্ত্বেও ভালোভাবে এস এস সি পাশ করলাম। কলেজের জীবনটার জন্য আমি আমার টিচারদের কাছে আজীবন ঋণী থাকবো। চমৎকার একটা রেজাল্ট করেছি। তারপর বিশ্ববিদ্যালয় জীবন শুরু। নিজের লেখা পড়া,ছোট ছোট ভাইবোনের দেখাশোনা করা এভাবেই চলছিলো। হঠাৎ বিয়ে হয়ে যায়।আমার হাসব্যান্ড শিক্ষকতা করতেন। ঢাকার বি এন কলেজে ছিলেন।
তারপর সংসার-পড়াশুনার পাশাপাশি সন্তান আসে সংসারে।
সংসার জীবনে হাসব্যান্ডের সহায়তায় পড়াশুনা শেষ করে তার ইচ্ছায় টিচিং প্রফেশনে আসি। মাঝে মধ্যে একটু আধটু লিখতাম। মাঝখানে হাসব্যান্ডের চাকরীর সুবাদে ( নিজেদের এলাকায়, নিজেদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জয়েন করার ফলে) বেশ কিছুদিন টাঙ্গাইলে ছিলাম। গ্রাম এবং গ্রামের মানুষ কে কাছে থেকে চিনলাম তখন থেকেই।
তারপর আবার ঢাকায় আসি বাচ্চাদের পড়াশোনার সুবিধার জন্য এবং আবার সেই ছোট্ট বেলার লেখালেখি শুরু করি। এভাবে চলছে।
আমাদের অবস্থা কিন্তু খারাপ ছিলো না।লিভার সিরোসিসে মা মারা যাবার পর বাবা গ্যারেজ সহ গাড়ি বিক্রি করে দেন এবং স্মার্ট একজন মানুষ আলাভোলা টাইপের হয়ে যান।সবার কথায় এবং সংসারের প্রয়োজনে বিয়েও করেন।কিন্তু তারপর…..আমাদের সৎ মায়ের কাছেও আমরা ঋণী থাকবো কারণ তিনি যদি কঠোর না হতেন তাহলে আমরা হয়তো এই অবস্থানে আসতাম না।
ওহ আরেকটা কথা বলতেই হবে। আমি একটু মুখচোরা টাইপের। নিজেকে লুকিয়ে রাখতেই পছন্দ করি।আমার সকল প্রতিভার আবিষ্কারক আমার প্রিয় সুহৃদ হাসিনা ইসলাম সীমা।বেশকিছুদিন আমরা একসাথে ক্যামব্রিয়ান কলেজে কাজ করেছি। উনি অবশ্য ছেড়ে দিয়ে ইউনিভার্সিটিতে জয়েন করেছেন। আমিও ক্যামব্রিয়ান ছেড়ে কিছুদিন বি এন কলেজ, ঢাকায় ছিলাম। বর্তমানে মিরপুর কাফরুল থানাধীন ইবরাহিমপুরে একটা স্কুল এন্ড কলেজে কর্মরত আছি। প্রতিষ্ঠান প্রধান থেকে শুরু করে শিক্ষার্থী সবার সাথে খুব ভালো সময় কাটছে এখানে।

দৈনিক আলাপ পরিবারের পক্ষ থেকে আবারও জন্মদিনের শুভেচ্ছা কলমযোদ্ধা জেসমিন জাহানকে ।

মোঃ আশিকুর রহমান
সম্পাদক দৈনিক আলাপ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here