ঝরাফুল
শাহীন সুলতানা
একটা ছিল বুকের মানিক আমার
হীরের মতো থাকতো গলায় ঝুলে,
মধুর বোলে ঘর ভরিয়ে দিতো
যেমন নরম তেমনই তুলতুলে।
চোখদুটো তার ছিলো কাজল কালো
মায়ার পুতুল ছিলো পরাণ পাখি,
পরী রাণীর মতোন ছিলো রূপ
সেই দিয়েছে আজ আমাকে ফাঁকি।
সে যে ছিলো আঁধার ঘরের আলো
ছিলো আমার মধুর মোহন বাঁশি,
কেমন করে ভাঙলো আহা কখন
হারিয়ে দিল কোভিড সর্বনাশী।
হারিয়ে গেল আমার ঘরের চাঁদ
নিভে গেল পূর্ণিমার ঐ আলো,
আসলো আঁধার অমানিশার তিথি
জগৎ হলো নিকষ আঁধার কালো।
মানিক আমার হারিয়ে গেলো কোথা
কেউ ডাকে না- ” আম্মু তুমি কই?”
দাওনা আমার চুলের রাঙা ফিতা
দাওনা এনে চাঁদের দেশের মই?
কেউ বলে না ধূপি পিঠা খাবো
দাওনা ভেজে বিন্নি ধানের খই,
দাও এনে দাও পায়েস মেঠাই সব-
খাবো আমি দুলাল দাদুর দই।
শুকিয়ে গেছে আমার ভরা নদী
ফুরিয়ে গেছে শখের নীলাভ জল,
হারিয়ে গেছে গন্ধ বকুল মালা
পাখির পায়ে আর বাজে না মল।
লুকিয়ে গেছে আমার গানের পাখি
ডুব দিয়েছে আঁধার কবর দেশে,
নিয়ে গেছে কোভিড নাইনটিন
পাঁচ টুকরোর সাদা কাফন বেশে।
পাখি আমার শূন্যে উড়ে গেছে
দেখবো না আর এই ধরণীর পর,
কাঁদবে না আর আমার বুকে এসে
উড়িয়ে নিল কঠিন ধূলি ঝড়।
কাঁদে আমার শূন্য পাখির খাঁচা
সাথে কাঁদে হীরে মতির দুল,
সব ছেড়ে সে গেছে অচিন দেশে
বুকের মানিক ঝরা পাতার ফুল।