মনে পড়ে তোমাকে
জেসমিন জাহান
দিনের নির্দিষ্ট একটা সময়
তোমাকে খুব মনে পড়ে
সকালটা কীভাবে কাটতো তোমার?
ব্যালকনির দক্ষিণ কোণটাতে
আমার মতো তুমিও কী দাঁড়াতে
কৃষ্ণচূড়ার চিরল পাতায় দিতে
আলতো হাতের ছোঁয়া।
বছরের একটা নির্দিষ্ট সময়
তোমার অনুপস্থিতি খুব কষ্ট দেয়
রেলিং দেয়া এই ছোট্ট ছাদটাকে
যেখানে লুকোচুরি খেলার ছলে
তোমার মমতা মাখা স্পর্শ পেতো
ছোট্ট সুমনের এলোমেলো চুল।
অদ্ভুত রঙের প্রলেপ মেখে
যখন সন্ধ্যা নামে আকাশের গায়
তখন তোমাকে খুব মনে পড়ে
নীড়ে ফেরা পাখির পালক আর
ধূসর মেঘের পাতায় স্পষ্ট দেখি
তোমার ‘শিলালিপি’র ধ্রুব ছায়া।
এক অনন্য ব্যক্তিত্ব তোমাকে
অন্যদের থেকে করেছে আলাদা
তোমার সময়োচিত ভাবাদর্শের কাছে
হার মেনেছে গতানুগতিক ধারা
চমৎকার নির্মাণশৈলীর স্রোত
তীব্র থেকে তীব্রতর গতিতে
ছড়িয়ে পড়েছে এ দেশের
পথে-প্রান্তরে; খাল-বিল টইটুম্বুর;
দিঘি- নালা হয়েছে সয়লাব।
ক্ষুরধার লেখনীর যোদ্ধাদল তাই
ছিলো তোমার সাথে আমৃত্যু।
বছরের নির্দিষ্ট সে দিনটার কথা
স্মৃতির পাতায় আজও জ্বলজ্বল করে-
মুক্তির খুব কাছেই ছিলাম আমরা
হঠাৎ, সবুজ রঙের একটা জীপ
এসে থামলো বাড়ির ফটকে
আর তুমি, সেই যে গেলে;
এখানে সেখানে কত খোঁজাখুঁজি!
অত:পর এক শীতের সকালে
সাদা মোজা পায়ে ক্ষতবিক্ষত
শীতকাতুরে তোমাকে পেলাম এবং
হারিয়ে ফেললাম জন্মের মতো
কিন্তু, আমি এখনও অনুভব করি তোমায়
বিশ্বাস করি, তুমি বেঁচে আছো
অনন্য এক ছায়া মানবী রূপে
শিলালিপির প্রতিটি পাতায়;
এ দেশের মানুষের হৃদয় আঙ্গিনায়।