আমেরিকা থেকে কাব্য ভারতী কবি-সাহানুকা হাসান শিখার ১০০ লাইনের জীবন ভিক্তিক কবিতা “অদৃশ্য ইতিহাস”

292
সাহানুকা হাসান শিখার ১০০ লাইনের জীবন ভিক্তিক কবিতা “অদৃশ্য ইতিহাস ”

অদৃশ্য ইতিহাস
(১০০ লাইনের কবিতা )
সাহানুকা হাসান শিখা

হাজার সুখে যায় না ঢাকা
একটুখানি দুঃখ।
দুঃখ নদীর নোনা জলে
ভেজা দুটি চোখ।

একাই আমি এসেছি হেঁটে
এই সুখের স্বর্গে।
শীতের দেশ,তুষারে ঢাকা
জীবন শপেছি অর্ঘ্যে। ।

চারিদিকে পুলিশের বেরিকেড
দাঁডিয়ে আছি নির্বোধ।
কোন জন্মে, কার অভিশাপে,
কেন নিচ্ছে এই শোধ।

আমি যে যাবো সুখের স্বর্গে
করতে বসবাস।
তাই খুশিতে আটকানা
বারবার নেই নিশ্বাস।

প্রচন্ড শীত,রিলিফের দেয়া
কম্বল নেই টানি।
ভাগ্যে যে এটাই ছিলো,
নির্দ্ধিধায় নেই মানি।

খাবারের দোকানে আগুন
জ্বলছে হায়।
সবই চলে ডলারের কারবার
পকেট দেয় না সায়।

ক্ষুধার জ্বালায়, ঠাণ্ডার থাবায়
হই না মোটেও হন্যা।
শুধুই ভাবি একই মনে আমি
সাথে যুবতী কন্যা।

ঘোমটা মাথায় তাসবিহ হাতে,
একটি কোনায় বসে।
পুলিশ প্রহরায় এই অজানায়
বিবেক পড়ছে খসে।

হঠাৎ আবার এরেস্ট না হই
মান সন্মানের ভয়।
এভাবেই যদি রক্ষা পাই,
কষ্টের হোক ক্ষয়।

স্বপ্নের দেশের স্বপ্ন আঁকা
অবুঝ হৃদয় জুড়ে।
নিজের হাতেই গড়েছি মহল
কেউ দেয় নি করে।

১২ ইঞ্চি তুষারে ঢাকা
সুখের স্বর্গ খানি।
চোরাবালিতে লড়াই করে
তাকেই নিয়েছি মানি।

রাত গভীর,চিন্তায় অস্থির।
কোথায় স্বপ্নের দেশ ?
একাধারে ঝরছে যে ঘাম,
মনে মনে বলি, আছি তো বেশ।

মাথার উপর প্রখর রৌদ্র
পায়ে তুষার পাত।
এভাবেই কাটে এক যুগ
প্রতি দিন প্রতি রাত।

একাকিত্ব যে কতটা সুখের,
সেটা তখনই টের পাবে,
যখন কেউ স্বৈরচারিতার
সাথে বসবাস করবে।

দুঃখটা যে কত আনন্দের,
তা তখনই বুঝবে।
যদি কেউ সুখের চোরাবালিতে
যায় আটকা পরে।

যুগযুগ আগে ফেলে আসা
এক জীবনের খেলাঘর।
সে যে স্মৃতিময় অতি আপন,
কোন কালের নয় পর।

চোখ মেলে খুব স্পষ্ট যায় দেখা,
নয় তো সে বহুদূর।
একাকীত্বে নির্জনে কিংবা স্বপ্নে,
হয়ে যায় বেদনা বিধুর।

আজ খুব মনে পড়ে এক সন্ধ্যাবেলা,
সাজানো গোছানো সূর্যাস্তে
আমি খেলাঘর ছেড়ে চুপিচুপি,
পাড়ি দেই ঐ দিগন্তে।

নেই কোন ইচ্ছা অনিচ্ছা নেই শখ,
সবই অজানা আর অনিশ্চিত।
চারিদিক জলমগ্ন অলীক স্বপ্নে ঘেরা,
চোরাবালির দ্বীপ।

ঘন কালো মেঘে আকাশ ঢাকা,
বিজলী চমকায় সেখানে আঁকাবাঁকা।
নেই কোন আশ্রয় নেই হাতে ছাতা,
একে যায় ভাগ্যের নির্মম রেখা।

জঘন্য এই সমাজের মুখে
দিতে হয় এক লাথি।
পুত্র সন্তান না এলে ঘরে
কবরে কে জালাবে বাতি।

মাফ করে দে মা, সব বজ্জাতদের
নিজে থাক তুই ভালো।
দেখবি একদিন অপরাধ বোধে
তাদের মুখই কালো।

মুখের ভাত আটকে গলায়,
শ্বাশুড়ীর মন্দ কথায়।
ছেলে হলো না, মেয়ের মা আমি,
প্রাণটি কাঁদে ব্যথায়।

কষ্টের পারাবার দিয়েছি পাড়ি।
অবুঝদের সাথে নিয়ে।
এখন চারিদিক সবুজে ঘেরা,
লুচিগুলো ভাজা ঘিয়ে।

দেখ মেয়েরা দেখ চেয়ে তোরা
কত শক্ত এই মানবী।
তার ঘরটি ভাঙ্গতে চেয়েছে
কত শয়তান দানবী।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here